গাজা এখন উত্তর ও দক্ষিণ এই দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। রোববার উত্তর গাজায় ব্যাপক আক্রমণ করে ইসরায়েল।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি বলেছেন, বেসামরিক মানুষ এখনো দক্ষিণ গাজায় যেতে পারছেন এবং তাদের সেখানেই চলে যাওয়া উচিত। খবর বিবিসির
বিজ্ঞাপন
গাজায় টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন। ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে এই অবস্থা হয়েছে বলে ফিলিস্তিনি টেলিকম সংস্থা প্যালটেল জানিয়েছে।
গাজায় মৃতের সংখ্যা সমানে বাড়ছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আবার জানিয়ে দিয়েছেন, পণবন্দিদের ফেরত না দিলে যুদ্ধবিরতি হবে না। নেতানিয়াহু বলেন, ''যতক্ষণ আমরা বিজয়ী না হচ্ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সামনে লড়াই করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।'
আরও পড়ুন: মধ্যপ্রাচ্যে এবার যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রবাহী সাবমেরিন
সেনার জারি করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ইসরায়েলের সেনা প্রতিটি বাড়িতে ঢুকছে। কামান ও সাঁজোয়া বুলডোজার সবকিছু গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। গাজার বাসিন্দা আবু হাসেরিয়া জানিয়েছেন, 'ইসরায়েলের আক্রমণ দেখে মনে হচ্ছে যেন প্রবল ভূমিকম্প হচ্ছে। তারা পুরো এলাকা ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছে।'
বিজ্ঞাপন
ইসরায়েল ঘোষণা করেছে তারা হামলা আরো জোরদার করবে এবং গাজা উপত্যকা এবং গাজা শহর ঘিরে স্থল অভিযানও আরো শক্তিশালী করা হবে। গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান হামলায় এখনো পর্যন্ত ১০ হাজারের মতো ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এরই মধ্যে তুরস্কে পৌঁছেছেন। ওই এলাকায় কূটনৈতিক সফরের অংশ হিসেবে তিনি তুরস্কে গেলেন। তিনি যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনার দিকে জোর দিচ্ছেন।
এর আগে বাগদাদে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, আঞ্চলিক নেতাদের উচিত গাজায় মানবিক বিরতির প্রস্তাবকে ‘স্বাগত’ জানানো।
ইসরায়েল অবশ্য বলেছে, কোন ধরনের বিরতিতে সম্মত হওয়ার আগে তারা জিম্মিদের বিষয়ে অগ্রগতি চায়।
আরও পড়ুন: গাজায় হামলার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের ১৮ সংস্থার বিরল বিবৃতি
গাজা উপত্যকায় থাকা বিবিসির প্রতিবেদকের মতে, রবিবার রাতে চালানো বিমান হামলা এ পর্যন্ত হওয়া হামলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তীব্র ছিল।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উপর হামাসের হামলার ফলে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী হামাসের সাথে যোগসূত্র বা সহিংসতা উসকে দেওয়ার সন্দেহে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজারর ৭৭০ জনে।নিহতদের মধ্যে ৪ হাজার ৮ জনই শিশু ও ২৫৫০ জন নারী।
বিবৃতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, বিগত ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত) গাজায় ইসরায়েলি হামলা অন্তত ২৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা ওয়াফা নিউজ জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে অন্তত ১৫৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে আরও অন্তত ২ হাজার ২০০ জন। সব মিলিয়ে গাজা ও পশ্চিম তীরে নিহতের মোট সংখ্যা ৯ হাজার ৯২৩ জন।
একে