দখলদার শক্তি হওয়ায় ইসরায়েলের আত্মরক্ষার কোনো অধিকার নেই। বুধবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের জরুরি বিশেষ অধিবেশনে রাশিয়ার প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া এ মন্তব্য করেছেন।
ইসরায়েলের সমালোচনার পাশাপাশি রাশিয়ার প্রতিনিধি বলেন, ‘ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিরোধ নিষ্পত্তির আগে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য আরব রাষ্ট্রগুলোর প্রচেষ্টা নিন্দাজনক।’
বিজ্ঞাপন
রুশ রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল যে ভয়াবহ আগ্রাসন ও গণহত্যা চালাচ্ছে তা দ্রুত বন্ধের দাবি জানান। বুধবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বিশেষ অধিবেশনে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এ দাবি জানান।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনিদের হামলায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার নিহত
তিনি বলেন, পুরো অঞ্চলে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোর জন্য এই রক্তপাত দ্রুত বন্ধ হওয়া জরুরি। তা না হলে কখনও এই সংঘাত থামানো যাবে না।
হামাসের হাতে বন্দীদের মুক্তিসহ চলমান সংকটের কূটনৈতিক সমাধানের জন্য মধ্যস্থতাকারীদের কাজ করার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান রুশ প্রতিনিধি। ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, ইহুদি সম্প্রদায়ের লোকজন কয়েক শতাব্দী ধরে দুঃখ-কষ্টের মধ্যে ছিল। ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি তারাই সবচেয়ে ভালো বুঝবে।
বিজ্ঞাপন
ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান বর্বর আগ্রাসনের জন্য তিনি সরাসরি আমেরিকাকে দায়ী করেন। নেবেনজিয়া বলেন, জাতিসংঘে রাশিয়ার তোলা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে এই বর্বরতা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।
৭ অক্টোবর তারিখে শত শত ফিলিস্তিনি যোদ্ধা গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে আক্রমণ করে। এ সময় হামাসের অভিযানে ১৪,০০ ইসরায়েলি নিহত হন। এরপর থেকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজায় অব্যাহত বোমা হামলা করছে।
এ বিষয়ে গাজার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে আট হাজার ৭৮৬ জন। ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তিন হাজার ৬৪৮ জনই শিশু। এছাড়া নিহতদের মধ্যে দু’হাজার ২৯০ জন নারী আছে।
আরও পড়ুন: গাজাকে পৃথিবী থেকে মুছে ফেলার আহ্বান এক ইসরায়েলি এমপির
সেখানে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে এক হাজার ১২০জন শিশুসহ মোট দু’হাজার ৩০ জন। তারা সবাই নিখোঁজ রয়েছেন।
ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজার ১৩০ প্যারামেডিক এবং মেডিকেল ক্রু নিহত হয়েছেন। সেখানে ২৮টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস হয়েছে এবং ২৭০টিরও বেশি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় বিমান হামলা হয়।
এদিকে নিরাপত্তা কাউন্সিলে জরুরি বৈঠকে জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক সংস্থাগুলো আবারও মানবিক অস্ত্র বিরতির জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
সূত্র : মিডল ইস্ট আই, আল-জাজিরা, দ্যা জেরুসালেম পোস্ট
এমইউ