গাজায় ফিলিস্তিনিদের ঘণবসতিতে ভয়ংকর হোয়াইট ফসফরাস বোমা ফেলার অভিযোগ উঠেছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন বোমা ফেলার বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এসব ভিডিওর সত্যতা যাছাই করা যায়নি।
আরবি ভাষার আল আলম নিউজ চ্যানেলের সোমবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সরকারের সামরিক বাহিনী দিনের শুরুতে গাজার আবাসিক এলাকায় সাদা ফসফরাস শেল নিক্ষেপ করেছে।
বিজ্ঞাপন
শত্রু অবস্থানে সরাসরি লক্ষ্যবস্তু করার জন্য সাদা ফসফরাস শেল ব্যবহার আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে বেআইনি। কারণ এটি যুদ্ধাপরাধ এবং ব্যাপক প্রাণহানির কারণ হতে পারে।
আরও পড়ুন: ভারতীয়রা ইসরায়েলের পক্ষে: নেতানিয়াহুকে মোদি
২০০৮-২০০৯ গাজার যুদ্ধের সময় ইসরায়েল 'সাদা ফসফরাসযুক্ত গোলাবারুদ ব্যবহার' করার কথা স্বীকার করে। কিন্তু সরকার বেসামরিক জনবহুল এলাকায় এই ধরনের অস্ত্র গুলি চালানো হয়নি বলে দাবি করে তারা।
এই অভিযোগ নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েল। তবে সোমবার যুদ্ধের বিষয়ে আইডিএফ-এর আরেক মুখপাত্র জনাথন কনরিকাস বলেছিলেন, ইসরায়েলের পরিস্থিতি ভয়াবহ। ইসরায়েলের ইতিহাসে অন্যতম খারাপ দিন। এর আগে কখনও এক দিনে এত ইসরায়েলি নিহত হননি। তিনি এই হামলাকে ৯/১১ ও পার্ল হারবরের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
বিজ্ঞাপন
নির্দিষ্ট সংখ্যা না জানালেও কনরিকাস বলেছেন, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সেনা ও বেসামরিক ব্যক্তিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন সেনাবাহিনীর পাল্টা পদক্ষেপের দুটি প্রধান লক্ষ্য রয়েছে। যুদ্ধ শেষে হামাসের কোনও সামরিক সক্ষমতা থাকবে না, যা ইসরায়েলিদের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে এবং গাজা উপত্যকা শাসনের ক্ষমতা থাকবে না হামাসের।
গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠীর শত শত সদস্যদের নিষ্ক্রিয় করে ইসরায়েলের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। শনিবার দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত হয়ে গোয়েন্দা নজরদারি এড়িয়ে ঢুকে পড়েছিল হামাসের যোদ্ধারা।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত ইরান
আইডিএফের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট রিচার্ড হেচট মঙ্গলবার ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, সীমান্তের কাটাতারের বেষ্টনী কমবেশি পুনরুদ্ধার করেছি আমরা। আশা করি আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এর সমাপ্তি ঘটবে।
ইসরায়েলি বাহিনী গাজা সীমান্তের আশপাশের এলাকা নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি উচ্ছ্বেদ কার্যক্রম প্রায় শেষ করে এনেছে। গত রাতে দুইটি কমিউনিটিতে সামান্য গোলাগুলি হয়েছিল বলেও জানান তিনি। আরও বলেন, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে।
শনিবার থেকে হামাসের হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯০০ তে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও প্রায় ২৫০০ ইসরায়েলি।
এদিকে ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজার অন্তত ৭০০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে বলে জানায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। গাজা উপত্যাকার ওপর সোমবার নেতানিয়াহু সরকারের সর্বাত্মক অবরোধ আরোপের পর হামলা আরও বেড়েছে। এতে ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়েছে অবরুদ্ধ গাজা।
গাজা উপত্যকায় প্রায় ২৩ লাখ মানুষের বাস। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ বিভিন্ন সংস্থার ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল। অঞ্চলটির আকাশসীমা ও উপকূল নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েল। দেশটিই নির্ধারণ করে কোন কোন পণ্য এখানে প্রবেশ করবে। সীমান্তবর্তী মিসরও কঠোরভাবে নজরদারি জারি রাখে।
নতুন করে সর্বাত্মক অবরোধ আরোপে গাজায় বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি ও খাদ্য সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণায় জানিয়েছে ইসরায়েল। আর এটি বাস্তবায়ন হলে অল্প সময়ের মধ্যেই এসব যোগান ফুরিয়ে আসবে।
একে