চাঁদের মাটিতে ভারতীয় মহাকাশযানের ল্যান্ডার বিক্রম চিরনিদ্রায় চলে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশটির বিজ্ঞানীরা। চাঁদে এ ল্যান্ডারটির পুনরায় জাগরণের আশাও ম্লান হয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা মহাকাশযানের সঙ্গে ল্যান্ডার বিক্রমের যোগাযোগ চালু করতে অক্ষম হওয়ার পরে এসব তথ্য দিয়েছেন।
এর আগে ভারতীয় মহাকাশযানের ল্যান্ডার বিক্রমকে চাঁদের তীব্র শীতল আবহাওয়া থেকে বাঁচাতে ‘শাটডাউন মোড’ চালু করা হয়। অর্থাৎ, এ ল্যান্ডারটিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
ভারতের চন্দ্রযান-৩ মিশন ৪০ দিনের মহাকাশযাত্রার পর আগস্ট মাসে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে একটি ঐতিহাসিক অবতরণ সম্পন্ন করেছিল। এরপর ভারতীয় মহাকাশযানের রোভারটি চন্দ্র পৃষ্ঠ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ব্যয় করেছিল।
আরও পড়ুন: কেন মুঘল সম্রাট আকবরের প্রশংসা করছে মোদি সরকার?
চাঁদের তীব্র ঠান্ডায় (-২৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে) যেন ল্যান্ডারটি টিকে থাকতে পারে সেজন্য গত ২ সেপ্টেম্বর একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য (২২ সেপ্টম্বর পর্যন্ত) এটি শাট ডাউন করা হয়। তবে ওই সময় পর ল্যান্ডারটিকে আবার সক্রিয় করার চেষ্টা করা হলেও, এতে এখন পর্যন্ত আর সফল হননি বিজ্ঞানীরা।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-এর বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন যে তারা আত্মবিশ্বাসী যে মহাকাশযানের ল্যান্ডারটি চরম পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকতে পারে এবং এটি ২২ সেপ্টেম্বরের দিকে আবার জেগে উঠবে। কারণ, তখন এটিতে আবার সূর্যের আলো পড়বে। এরপর ল্যান্ডারটির সৌর প্যানেলগুলোর ব্যাটারিগুলো পুনরায় চার্জ করতে পারবে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: কেন দূরত্ব বাড়ছে তুরস্ক-ভারতের?
এ প্রসঙ্গে ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথ বলেন, “ল্যান্ডার এবং রোভারের সঙ্গে কখন যোগাযোগ করা যাবে, তার নিশ্চয়তা নেই। জানি না, ওরা কখন জেগে উঠবে। হয়তো আগামী কালও জেগে উঠতে পারে। আবার দেখা গেল, চাঁদে আঁধার নামার আগের দিনও ওরা সাড়া দিল। তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যদি ল্যান্ডার এবং রোভারকে জাগিয়ে তুলতে পারি, তা হলে এটাও হবে আমাদের বড় সাফল্য।”
তবে এরপরও ইসরো বিজ্ঞানীরা তখন থেকে ল্যান্ডার ও রোভারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে অক্ষম হয়েছেন এবং বলেছেন যে তাদের পুনর্জাগরণের জন্য "আশা ম্লান হয়ে যাচ্ছে"। ভারতীয় বিজ্ঞানীদের মতে, প্রায় ৫০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে যে এ ডিভাইসগুলো হিমাঙ্কের তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে।
এরপর শুক্রবার ইসরো টুইট করে জানিয়েছে, ‘ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’ কিন্তু তারপর থেকে তারা কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি।
সূত্র : দ্যা গার্ডিয়ান, পিটিআই
এমইউ