ভারতে নিপাহ ভাইরাসের তীব্র সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। দেশটির কেরালা রাজ্যের কোঝিকোড়ে আরও একজন নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানা গেছে। শুক্রবার ওই রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে এ ভাইরাসে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছয়ে পৌঁছেছে।
এ বিষয়ে শুক্রবার কেরালা রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ বলেছেন, কোঝিকোড়ের চেরুভান্নুরের একজন ৩৯ বছর বয়সী ব্যক্তি নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় তিনি নিপাহ আক্রান্ত বলে জানা গেছে। ওই ব্যক্তি এর আগে একটি বেসরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলেন, যেখানে নিপাহ সংক্রমণের কারণে মারা যাওয়া দুই ব্যক্তি চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ভারতের মুম্বাই বিমানবন্দরে অবতরণের সময় প্লেন ক্র্যাশ
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবারও কোঝিকোড়ের এক বেসরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীর শরীরে এই ভাইরাস মেলে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নতুন আরও একজন আক্রান্ত হওয়ায় নিপাহ নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছে কেরালায়। কোঝিকোড়ের পাশাপাশি কান্নুড়, ওয়েনাড় এবং মলপ্পুরমেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কেন্দ্রের পাঁচ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ দল কেরালার পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন।
দেশটির স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। শুধু তাই-ই নয়, যারা ওই সব রোগীদের সংস্পর্শে এসেছেন, এমন ব্যক্তিদেরও চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু হয়েছে। তাদেরও কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে।
বুধবারই রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছিলেন, নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসেছেন এমন ব্যক্তিদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন ৭০৬ জন। তাদের মধ্যে আছেন ১৫৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী। তিনি আরও জানিয়েছেন, নিপাহ আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা লোকজনদের চিহ্নিতকরণের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। কোনো উপসর্গ ধরা পড়লেই কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
দেশটির স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গেছে, এই ভাইরাসের এখনও কোনো প্রতিষেধক তৈরি হয়নি। ফলে সংক্রমণের তুলনায় মৃত্যুর হার বেশি। ফলে এই ভাইরাসকে যাতে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা যায়, এখন সে দিকেই নজর কেরালা রাজ্য সরকারের।
আরও পড়ুন: ‘দেশকে হাজার বছরের দাসত্বে ঠেলে দেবে ইন্ডিয়া জোট’
বিজ্ঞাপন
কেরালা রাজ্যের পাশাপাশি কর্নাটক এবং রাজস্থানেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রাজস্থান সরকার বৃহস্পতিবার নিপাহ নিয়ে নির্দেশিকা জারি করেছে। একইসঙ্গে, সমস্ত মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্নাটকেও নিপাহ ঠেকাতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
২০১৮ সালে কেরালায় নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ায়। তারপর ২০১৯ এবং ২০২১ সালেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়েছিল ভারতের উপকূলবর্তী এই রাজ্যে।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস, ডেক্কান হেরাল্ড
এমইউ