৩২তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের পর ইউক্রেন রাশিয়া-অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের উপর কমপক্ষে ৪৫টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে বলে মস্কো দাবি করছে। এর আগেও ক্রিমিয়ায় বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। ক্রিমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার সংযোগ সেতুতে ঘটেছে ভয়াবহ হামলার ঘটনা। মনে করা হচ্ছে, দুই দেশের যুদ্ধের নতুন ক্ষেত্র হয়ে উঠছে ক্রিমিয়া।
শুধু মস্কো নয়, অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের উপরেও ড্রোন হামলার মুখে পড়ছে রাশিয়া। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানিয়েছে যে, এয়ার ডিফেন্স বাহিনী ইউক্রেন থেকে পাঠানো ৪৫টি ড্রোন হামলা বানচাল করা দিয়েছে। এর মধ্যে নয়টি সরাসরি ধ্বংস করা হয়েছে। বাকি ৩৩টি ইলেকট্রনিক হস্তক্ষেপের কারণে লক্ষ্যবস্তু পর্যন্ত না পৌঁছতে পেরে ভেঙে পড়েছে।
বিজ্ঞাপন
২০১৪ সালে অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সেভাস্তোপোল শহরের গভর্নর মিখাইল রাজভোজহাইয়েভ টেলিগ্রাম চ্যানেলে জানিয়েছেন যে, শহরের উপকণ্ঠে বেশ কয়েকটি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রিগোশিনের ‘মৃত্যুঘণ্টা’ কি আগেই বেজে গিয়েছিল?
রাশিয়া আরও জানিয়েছে, মস্কোর কাছে কালুগা অঞ্চলেও একটি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে। সব হামলার জন্য ইউক্রেনকেই দায়ী করছে মস্কো।
ইউক্রেন অবশ্য রাশিয়ার ভূখণ্ড বা অধিকৃত এলাকায় হামলা সম্পর্কে প্রকাশ্যে সরাসরি কোনো মন্তব্য করে না। তবে একসঙ্গে এত ড্রোন হামলা এর আগে দেখা যায়নি।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার যুদ্ধের মাঝে দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিবস পালন করতে গিয়ে ইউক্রেন জানিয়েছে, এক বিশেষ অভিযান চালিয়ে সৈন্যরা ক্রিমিয়া উপদ্বীপের উপর ইউক্রেনের পতাকা উত্তোলন করেছে।
রাশিয়ার দুটি সংবাদ সূত্র দাবি করেছে, ১৫ থেকে ২০ জন ইউক্রেনীয় ব্যক্তি রাবারের নৌকা করে কেপ তারখানকুটের এক ক্যাম্প সাইটের কাছে পৌঁছেছিল বটে, কিন্তু তাদের হত্যা করা হয়েছে৷ ইউক্রেন অবশ্য প্রাণহানি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি।
গত বছর রাশিয়ার হামলা শুরু হবার পর ইউক্রেনের নেতৃত্ব বারবার অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপ আবার রাশিয়ার হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার কথা বলেছে। ৩২তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি দেশে ঐক্যের ডাক দেন।
এক ভিডিওবার্তায় জেলেনস্কি সৈন্য, সামরিক সরঞ্জামের সঙ্গে যুক্ত কর্মী, ইলেকট্রিশিয়ান, সাংবাদিক, মাইন দূর করার কর্মী, শিক্ষক, ডাক্তার ও অ্যাথলেটদের আত্মত্যাগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। জেলেনস্কি বলেন, যারাই কাজ করছেন এবং অন্যদের কাজ দিচ্ছেন, তারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কর দিয়ে সামরিক বাহিনীর ভবিষ্যৎ জয়ের জন্যও মানুষ অবদান রাখছেন।
আরও পড়ুন: ক্লাস্টার বোমা, পাল্টা আক্রমণ: ইউক্রেন যুুদ্ধের গতি কোন দিকে?
এদিকে ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবসে মার্কিন প্রশাসনও এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চালাতে ইউক্রেনীয় পাইলটদের প্রশিক্ষণের ঘোষণা করেছে। ইউরোপের কয়েকটি দেশকে এমন বিমান ইউক্রেনের হাতে তুলে দেওয়ার ছাড়পত্র এবং পাইলটদের প্রশিক্ষণে সম্মতির পর এবার ওয়াশিংটনও সরাসরি প্রশিক্ষণের সিদ্ধান্ত নিলো।
খবরে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বর মাসে ইংরেজি ভাষার কোর্স ও অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিমান চালানোর প্রশিক্ষণ দেবে মার্কিন প্রশাসন। সেইসঙ্গে রক্ষাণাবেক্ষণ কর্মীদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ইউক্রেনীয় পাইলটদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় দেশগুলি ক্ষমতার সীমায় পৌঁছে যাচ্ছে। তাই যুক্তরাষ্ট্র 'প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ' হিসেবে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে। এ দিন মার্কিন প্রশাসন আরও রুশ কর্মকর্তার উপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করেছে।
একে