শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

সেবা দিতে না পারলে বেতন নিচ্ছেন কেন, ইউএইচএফপিওদের মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৪:০৮ পিএম

শেয়ার করুন:

সেবা দিতে না পারলে বেতন নিচ্ছেন কেন, ইউএইচএফপিওদের মন্ত্রী
ফাইল ছবি

সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যন্ত্রাংশের বেহাল অবস্থার বর্ণনা শুনে কর্মকর্তাদের ওপর তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের (ইউএইচএফপিও) প্রতি ক্ষোভ ঝেরে তিনি বলেছেন, সেবা দিতে না পারলে বেতন নিচ্ছেন কেন?

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সিলেট সার্কিট হাউজের হলরুমে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এভাবেই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশা শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।


বিজ্ঞাপন


এ দিন বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের যন্ত্রাংশের বেহাল অবস্থা সম্পর্কে শুনে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে (ইউএইচএফপিও) স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০ বছর ধরে আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন নেই, আর এটাকে আপনারা এখানে ব্যাখ্যা করবেন! এতে যে কোনো মানুষই রেগে যাবে। এই এলাকার মানুষ তো কোনো সেবাই পায় না। বাইরের ক্লিনিক আছে, সে জন্য আপনারটা বন্ধ?’

>> আরও পড়ুন: ধুলার রাজ্যে ফুটপাতে খাবার বিক্রি, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্সরে মেশিন ১০ বছর ধরে বন্ধ আছে। চালুর পর ২৩ বছরে কখনই অপারেশন (ওটি) হয়নি। এনেস্থেশিয়া মেশিনও নষ্ট। এসব কথা শুনে সংশ্লিষ্ট ইউএইচএফপিওকে মন্ত্রী বলেন, ‘একটা উপজেলার মেশিনগুলো এত বছর ধরে নষ্ট আপনার লজ্জাও লাগে না! মানুষের সেবার জন্যই তো আপনাদের চাকরি। মানুষ সেবা না পেলে আপনার চাকরি দরকার নেই। যদি সেবাই না দিতে পারেন, তাহলে বেতন নিতেছেন কেন?’

এছাড়া জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেশিন ১৯৯৭ সাল থেকে নন ফাংশনাল জানার পর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উদ্দেশে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আপনি এখানে আড়াই বছরেও এটা চালু করতে পারলেন না। আপনাকে দিয়ে তাহলে আমাদের কি হবে? আপনারে রেখে কোনো লাভ আছে? এ জায়গাটা ফাঁকা থাকলেই তো ভালো। বলা যাবে লোক নেই, সে জন্য মেশিন ফাংশনাল না। আমাদের এরকম লোকের দরকার নেই।’


বিজ্ঞাপন


>> আরও পড়ুন: স্ট্রোকের বিশ্বমানের চিকিৎসা দেশেই হচ্ছে

এই উপজেলার ইউএইচএফপিও’কে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনার কি কোনো অনুভূতি নেই যে, জনগণ সেবা পাচ্ছে না। তারা কোথায় গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন? এটি আপনার মনেও লাগলো না, আর গায়েও লাগল না? আপনার এখানে কাজ করার কোনো অধিকার আছে বলে আমার মনে হয় না।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া দেশের মানুষের অধিকার। বর্তমান সরকার চিকিৎসা খাতে কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে বিনামূল্যে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে। কিন্তু সেই সেবা যদি স্বাস্থ্যখাতের নিজেদের কর্মীদের গাফিলতির কারণে বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে সরকারের পরিকল্পনা অকার্যকর হয়ে যাবে।

>> আরও পড়ুন: নিপসমের পরিচালক হলেন সেব্রিনা ফ্লোরা

এ দিন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কলেজ পরিদর্শন শেষে সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে ওই বিশেষ মতবিনিময় সভায় অংশ নেন মন্ত্রী। এ সময় সরকারি সেবা নিশ্চিতের কথা উল্লেখ করে সকলের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সরকারি টেস্টিং মেশিন থাকতেও যদি রোগীকে বাইরে পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়, তাহলে সেটি হবে দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। এ জন্য দেশের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় স্বাস্থ্যকর্মীদের আরও নিবেদিত হতে হবে। চিকিৎসা সেবায় সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। একটি মানুষও যেন সরকারি হাসপাতাল থেকে সেবা না পেয়ে ফিরে না যায়, এটি নিশ্চিত করতে হবে।’

এমএইচ/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর