দেশে বর্তমানে প্রায় ৫ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সারাদেশে প্রতিদিনই বাড়ছে এ রোগীর সংখ্যা। দেশের প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের ২৫ শতাংশের বেশি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। গ্রাম থেকে শহরতলী সর্বত্রই বাড়ছে রোগী।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগের বারডেম অডিটোরিয়ামে ডায়াবেটিস নিউট্রিশনিস্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ডিএনএসবি) পঞ্চম বার্ষিক সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিশেষজ্ঞরা।
বিজ্ঞাপন
এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান, বারডেমের মহাপরিচালক অধ্যাপক মির্জা মাহবুবুল হাসান, ডিগনএসবির সভাপতি আখতারুল নাহার আলো ও সাধারণ সম্পাদক খালেদা খাতুনসহ প্রমুখ।
সভায় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান বলেন, ভুল খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ, প্রক্রিয়াজাত ও ভেজাল খাদ্যগ্রহণ, কায়িক পরিশ্রমের অভাব। এসব কারণে মানুষ সহজেই রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ছে। এর মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিস অন্যতম।
সম্প্রতি ল্যানসেট সাময়িকীর গবেষণায় জানা যায়, বর্তমানে সারাবিশ্বে ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের সংখ্যা প্রায় ৮০ কোটি। ক্রমেই এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, নগর জীবনে আমাদের শারীরিক পরিশ্রম এবং হাঁটার প্রবণতা অনেক কমে গেছে। কম্পিউটার বা মোবাইলে কাজ করতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। কিন্তু যাদের পিতা-মাতা বা পরিবারের সদস্যদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের জেনেটিক্যালি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ফলে তারা যদি আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকেই নিয়মিত হাঁটাচলা ও শারীরিক পরিশ্রম করতে শুরু করেন, তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়া থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবেন।
বিজ্ঞাপন
অধ্যাপক মির্জা মাহবুবুল হাসান বলেন, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি জীবনভর অসুস্থতার কারণেই অসহায় বোধ করেন। যদি তারা সঠিক নিয়মে বিধিনিষেধগুলো মেনে চলেন, তাহলে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন ও কর্মক্ষম থাকবেন। আজ গ্রাম ও শহরে সমান ভাবেই সবাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর অন্যতম কারণ নগরায়ন, আধুনিক খাদ্যাভাস, শারীরিক পরিশ্রম বিমুখতা।
আখতারুল নাহার আলো বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯৭ সালেই ডায়াবেটিসকে মহামারি হিসাবে ঘোষণা করেছে। এ রোগ থেকে বাঁচতে সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং কাজ করতে হবে। প্রতিদিন নিয়ম করে অন্তত এক ঘণ্টা হাঁটতে হবে। পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। খেলাধুলা বাড়ানো যেতে পারে।
সভায় খালেদা খাতুন বলেন, ডায়াবেটিস ছাড়াও পুষ্টি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে জনগণকে সচেতন করতে হবে, তাতে সুস্থভাবে জীবনযাপন করা যাবে। নিয়মিত খাদ্যাভাস ও পুষ্টির অভাবে অল্প বয়সেই নানা রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে মানুষ।
এসএইচ/এএইচ

