শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

দেশের নারী স্বাস্থ্য এখনও অবহেলিত: ডা. সায়েবা আক্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৬ মে ২০২৫, ১১:২২ এএম

শেয়ার করুন:

দেশের নারী স্বাস্থ্য এখনও অবহেলিত: ডা. সায়েবা আক্তার

দেশের নারী স্বাস্থ্য এখনও অবহেলিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার। তিনি বলেন, সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে, সরকারকে আরো উদ্যোগী হতে হবে। নারী স্বাস্থ্যের বিভিন্ন দিক রয়েছে। অনেক বিষয় এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে বা অবহেলিত।

রোববার (২৫ মে) বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) শহীদ আবু সাইদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত ‘ইলেক্ট্রনিক ডাটা ট্র্যাকিংসহ জনসংখ্যাভিত্তিক জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং’ গবেষণা প্রতিবেদনের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।


বিজ্ঞাপন


ডা. সায়েবা আক্তার বলেন, জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার কোনো একটা পরিবারে হলে সবাই জানে ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধ করা কত কঠিন– শারীরিকভাবে ও আর্থিকভাবে। পুরো পরিবারকে ভুগতে হয়। আমরা মাতৃমৃত্যুর কথা বলি, এটা অনেকেই হঠাৎ মারা যান। ক্যান্সারের রোগীরা ধুঁকে ধুঁকে মারা যান। এতে করে রোগী এবং রোগীর পরিবারকে দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসা এবং নানা জায়গায় ছুটাছুটি করতে হয়।

তিনি দেশে মেডিসিন ও সার্জারির বিভিন্ন বিষয়ে ১৮টি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। নারী স্বাস্থ্যের জন্য এখনো একটা ইনস্টিটিউটও গড়ে উঠেনি। দেশে একটা নারী স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট থাকা উচিত। যেখানে নারীরা ফাস্ট ক্লাস সিটিজেন হিসেবে ভালোভাবে চিকিৎসা নিতে পারবেন।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী বলেন, চিকিৎসা ব্যয় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদেরকে রোগ প্রতিরোধের এগিয়ে যেতে হবে। যারা রোগের ঝুঁকিতে আছেন, তাদেরকে আগাম চিকিৎসা নিতে হবে। স্ক্রিনিং এবং আগাম চিকিৎসা নেওয়ার মাধ্যমে চিকিৎসা ব্যয় কমানে সম্ভব।

তিনি বলেন, নারীদের মৃত্যু অন্যতম একটি কারণ জরায়ু ক্যান্সার। প্রতিবছর ১৩ হাজার নারী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং ৭ হাজার মৃত্যুবরণ করেন। একইভাবে ৮ হাজার নারী জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং পাঁচ হাজার মৃত্যুবরণ করেন। এ দুটি ক্যান্সারই স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে পরীক্ষা করে রোগীর মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে আনা সম্ভব।


বিজ্ঞাপন


ডা. সারোয়ার বারী বলেন, ক্যান্সার জটিল পর্যায়ে গেলে নারীরা চিকিৎসা নিতে আসেন। তখন সেটা অনেক ছড়িয়ে এবং চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে যায়।

তিনি বলেন, সকল পর্যায়ের হাসপাতালে ইপিসিবিসিএসপি প্রকল্পের মাধ্যমে স্ক্রিনিংয়ের কাঠামো গড়ে উঠেছে। দেশের প্রায় ৬০০ হাসপাতাল ও ক্লিনিকে স্ক্রিনিং করা যাচ্ছে। এছাড়া ৫২টি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে জবায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সারের আগাম চিকিৎসা এবং ক্যান্সার শনাক্ত করা হচ্ছে।

তিনি আর বলেন, ৬ মিলিয়ন নারীকে স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। তবে ৩০ মিলিয়ন নারীকে এই কর্মসূচির আওতায় আনতে হবে। দেশের স্বাস্থ্যখাতকে অনেক এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং এটি দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

ডা. সারোয়ার বারী বলেন, ৩০-৬০ বছর বয়সী সব নারীকে স্ত্রীনিংয়ের আওতায় আনা দরকার– কোন পদ্ধতিতে আনা যাবে, সেটি ঠিক করা উচিত। সবার অংশগ্রহণ এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যাবে।

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলমের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আশরাফী আহমদসহ প্রমুখ।

এসএইচ/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর