সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

‘স্বাস্থ্যের কোনো কোনো সুপারিশ বাস্তবায়নে লাগতে পারে ১০ বছর’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২ মে ২০২৫, ০৬:১০ পিএম

শেয়ার করুন:

‘স্বাস্থ্যের কোনো কোনো সুপারিশ বাস্তবায়নে লাগতে পারে ১০ বছর’
স্বাস্থ্য সংস্কার বিষয়ে আলোচনা সভা। ছবি: ঢাকা মেইল

স্বাস্থ্যখাত সংস্কার ও পুনর্গঠনে গঠিত স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের কোনো কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে ছয় মাস থেকে দশ বছর পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

সোমবার (১২ মে) রাজধানীর মহাখালীতে বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের আয়োজনে 'স্বাস্থ্য সংস্কার প্রতিবেদন: কীভাবে দেখবো' শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এই কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের উপদেষ্টা ডা. ইয়াসমিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন, কমিশনের সদস্য ও আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী ড. আহমেদ এহসানুর রহমান ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন দৈনিক প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক শিশির মোড়ল ও হেলথ ওয়াচের কার্যকরী সদস্য ড. খায়রুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, দেশের স্বাস্থ্যখাতে প্রান্তিক পর্যায় থেকে শহরাঞ্চল সবখানে নানা সমস্যা এবং সংকট রয়েছে। স্বাস্থ্যখাতকে ঢেলে সাজাতে এবং নাগরিকদের উপযোগী করে তুলতে প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। সেইসঙ্গে গুরুত্ব দিতে হবে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন।

স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. আহমেদ এহসানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ মানুষ সবচেয়ে বেশি মারা যাচ্ছে হৃদরোগে। মৃত্যুর পরিমাণ ৩৬ শতাংশ এই রোগের। অন্যান্য রোগীকেও মানুষ মারা যাচ্ছে। অধিকাংশ রোগী যথাযথ সেবা পাচ্ছেন না। রোগের চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধে নজর দিতে হবে। দেশের পরিবেশ এমন পর্যায়ে রয়েছে যে কেউ যেকোনো রোগে আক্রান্ত হতে পারে। খাদ্যে ভেজাল আর অস্বস্তিকর পরিবেশে অনেকে রোগাক্রান্ত হচ্ছে। এ বিষয়েও সরকারের নজর দিতে হবে।

এই বিশেষজ্ঞ বলেন, দেশের স্বাস্থ্যখাতে বার্ষিক বাজেট ৫ শতাংশ, তা যা অন্যান্য দেশের তুলনায় খুবই কম। প্রতি বছর টাকার পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে, কিন্তু শতাংশ হিসেবে আগের মতোই থেকে যাচ্ছে স্বাস্থ্যের বরাদ্দ। সেইসঙ্গে স্বাস্থ্যখাতে অভাব রয়েছে যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্বের। যার ফলে অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে দেশের স্বাস্থ্যখাত। স্বাস্থ্যখাতকে উন্নত করতে এবং জনগণের মাঝে আস্থা ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দবিন্দুতে রাখতে হবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা।


বিজ্ঞাপন


ড. আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, কমিশনের কোনো কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে ছয় মাস কিংবা দশ বছর সময় লাগবে। আবার কোনো সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে সংসদে আইন পাস করতে হবে। যথাযথ নিয়ম পদ্ধতি অনুসরণ করে স্বাস্থ্যখাতের কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে।

জাকির হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যখাতে নানা সমস্যা, কোন বিষয় বাস্তবায়ন করা যাবে কিংবা কোন পদ্ধতিতে সেটি বাস্তবায়ন করতে হবে; সেটি নিয়ে ভাবতে হবে।

ডা. ইয়াসমিন আহমেদ বলেন, যুগোপযোগী এবং বাস্তবিক অর্থে স্বাস্থ্যখাতে পরিবর্তন করতে হবে। সময় ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কোথায় কী হবে, না হবে, তা আলোচনার মাধ্যমে করতে হবে।

এই চিকিৎসক বলেন, এখন দেশের বেসরকারি খাতকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না, তবে বেসরকারি খাতের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। সেইসঙ্গে স্বাস্থ্য শিক্ষাতে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। টিচিং হাসপাতালকে সাধারণ হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না, এ বিষয়েও নীতিমালা থাকা দরকার।

জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল বলেন, সংস্কার কমিশনের সুপারিশে রোগীকে কমপক্ষে ১০ মিনিট সময় দিতে বলা হয়েছে। তবে কোনো রোগীকে বেশি সময়ও দেওয়া লাগবে। যাতে রোগী সন্তুষ্ট থাকে।

সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবার নাজেহাল অবস্থার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সরকারের চেয়ে বেসরকারি খাতের অ্যাম্বুলেন্স সেবা ভালো। সরকারি সেবায় নজর দিতে হবে এবং পরিবর্তন আনা দরকার। একইসঙ্গে বেসরকারি খাতের স্বাস্থ্যসেবা মূল্য নির্ধারনে জোর দেওয়া হচ্ছে এবং বেসরকারি স্বাস্থ্যখাতের তদারকি কঠোর ভালো করা দরকার, সেটি করা হচ্ছে না।

এসএইচ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর