সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ধনী-গরিব সবার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:২৮ পিএম

শেয়ার করুন:

ধনী-গরিব সবার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে সরকার

ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জন্য সমমানের সবার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) শহীদ মিল্টন হলে চিকিৎসক সপ্তাহ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।


বিজ্ঞাপন


এসময় অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের প্রধান জাতীয় অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. শাহীনুল আলম, স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সৈয়দ আতিকুল হক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালকসহ বিএমইউ-এর শিক্ষকবৃন্দ, মেডিকেল শিক্ষার্থীরা এবং চিকিৎসক সপ্তাহ উদযাপন কমিটির সদস্যরা।

অধ্যাপক ডা. সাইদুর রহমান বলেন, ‘সংস্কারের পাশাপাশি ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জন্য সমমানের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’
চিকিৎসা শিক্ষা ব্যবস্থার বৈচিত্র্য নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, মেডিকেল কলেজ আর মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে বিরাট পার্থক্য রয়েছে। এই ধরনের ব্যবধান তৈরি হলে অন্তত একটি মান নির্ধারণকারী ব্যবস্থা—যেমন লাইসেন্সিং পরীক্ষা—জরুরি হয়ে পড়ে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশের প্রায় ১১০টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। সেখান থেকে পাস করা স্নাতকদের মধ্যে অনেক বড় ধরনের মানের পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। এই পার্থক্যের মধ্যে যদি কোনো বটম লাইন নির্ধারণ করা না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা নিতে গিয়ে নিরাপদ থাকবেন না।
‘এ কারণেই নিশ্চিত করতে হবে, যারা চিকিৎসা বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন, তারা যেন সর্বনিম্ন মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হন। আর এই মান নিশ্চিত করতে হলে লাইসেন্সিং পরীক্ষা চালু করা জরুরি।’
ডা. সায়েদুর রহমান মনে করেন, এই পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসা শিক্ষার যেসব গ্যাপ এখনো থেকে গেছে, তা অনেকটাই পূরণ করা সম্ভব।

তবে লাইসেন্সিং পরীক্ষার ক্ষেত্রে বয়সভিত্তিক কিছু ছাড় দেওয়ার বিষয়েও তিনি মত দেন। তিনি বলেন, চিকিৎসকদের নির্দিষ্ট বয়স (৫৫ বছর বা তার অধিক) পার হলে এই পরীক্ষার বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়ার দিকটিও বিবেচনায় আনা উচিত।


বিজ্ঞাপন


জাতীয় অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘চিকিৎসা একটি মহান ও অদ্বিতীয় পেশা। আমাদের নিজেদের আত্মসমালোচনা থাকা জরুরি—আমরা কী করছি, কতটা সেবা দিচ্ছি, সে বিষয়ে অসচেতন থাকা চলবে না। মানুষ আমাদের কতটা গ্রহণ করছে, তা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের নিজেদের মধ্যে এবং সমাজের মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসের সম্পর্ক  তৈরি করতে হবে।’
স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিটির পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত গুরুত্বপূর্ণ চারটি বিষয়ের সারসংক্ষেপ—
১. স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে "স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বাস্থ্যস্থাপনা সুরক্ষা অধ্যাদেশ" প্রণয়ন। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে "সুন্দর চিকিৎসা চর্চা (গুড মেডিকেল প্র্যাকটিসেস)" বিষয়ক নির্দেশিকা তৈরি এবং বিভিন্ন অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য একটি নির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন।
২. একটি আধুনিক ও সমন্বিত স্বাস্থ্যব্যবস্থা গঠনের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কৌশলগত কাঠামো (স্ট্র্যাটেজিক ফ্রেমওয়ার্ক) ও কার্যকরী কাঠামোর (অপারেশনাল ফ্রেমওয়ার্ক) ভিত্তিতে নতুন জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ঘোষণা।
৩. প্রয়োজনীয় পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংশোধনের মাধ্যমে জাতীয় ঔষধনীতি শক্তিশালীকরণ এবং তার কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ।
৪. বেসরকারি স্বাস্থ্যখাতকে জনগণের অনুকূলে ও আধুনিকভাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে উপযুক্ত সংস্কার, নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো নির্ধারণ, মান নিয়ন্ত্রণ, তত্ত্বাবধান ও মূল্যায়নের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ।
এসএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর