করোনাভাইরাস মহামারির পর চীন থেকে বিশ্বের কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়া হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ (বিএইচডব্লিউ)। একইসঙ্গে ভাইরাসটির বাংলাদেশে প্রবেশের আগে চিকিৎসা সরঞ্জাম নিশ্চিত করাসহ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে প্ল্যাটফর্মটি।
বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের মিডিয়া ও কমিউনিকেশন প্রোগ্রাম অফিসার নওশীন মৌলি ওয়ারেসি স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এতে বলা হয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর ঠিক পাঁচ বছর পর চীনের উত্তর অঞ্চলে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস সংক্ষেপে এইচএমপিভি ভাইরাস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ায় নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ভাইরাসটিতে বর্তমানে যুক্তরাজ্য এবং সম্প্রতি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ একটি সুশীল সমাজের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে, হিউম্যান মেটাপনিউমোভাইরাসের সাম্প্রতিক প্রাদুর্ভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
এতে আরও বলা হয়, এই ভাইরাসটি একটি শ্বাসতন্ত্রজনিত ভাইরাস, যা বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি এবং দুর্বল প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য বড় স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। এইচএমপিভির উপসর্গগুলো অনেকটাও করোনার মতো। এই রোগ হলে হালকা ঠাণ্ডার মতো উপসর্গ থেকে শুরু করে মারাত্মক অসুস্থতা, যেমন নিউমোনিয়া এবং ব্রংকাইটিসও হতে পারে।
এইচএমপিভি সাধারণত আক্রান্ত মানুষের হাঁচি বা কাশি থেকে ছড়ায়। এছাড়া স্পর্শ বা করমর্দনের মত সংস্পর্শে এইচএমপিভি ছড়াতে পারে। এছাড়া আমেরিকার ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল’ সিডিসি বলছে, এইচএমপিভি রয়েছে এমন বস্তু বা স্থান স্পর্শ কিংবা আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির ড্রপলেট লেগে থাকা স্থান যেমন দরজার হাতল, লিফটের বাটন, চায়ের কাপ ইত্যাদি স্পর্শ করার পর সে হাত চোখে, নাকে বা মুখে ছোঁয়ালে এইচএমপিভি ছড়াতে পারে।
করোনা মোকাবিলায় যেসব সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল, একই ধরনের পদক্ষেপে এই ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
যেসব সতর্কতা প্রয়োজন:
১. বাইরে গেলেই মাস্ক পরা।
২. ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান-পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়া।
৩. হাত দিয়ে নাক-মুখ স্পর্শ না করা।
৪. আক্রান্তদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা এবং জন সমাগমস্থল এড়িয়ে চলা।
৫. হাঁচি কাশি দেওয়ার সময় মুখ টিস্যু দিয়ে ঢেকে নেওয়া এবং ব্যবহৃত টিস্যুটি সাথে সাথে মুখবন্ধ করা ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে হাত সাবান পানিতে ধুয়ে ফেলা।
৬. যদি টিস্যু না থাকে তাহলে কনুই ভাঁজ করে সেখানে মুখ গুঁজে হাঁচি দেওয়া।
৭. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি ও শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করা।
৮. সর্দিকাশি, জ্বর হলেও অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
এ অবস্থায় বিএইচডব্লিউ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে নজরদারি জোরদার করতে, রোগ নির্ণয়ের সক্ষমতা বাড়াতে এবং ভাইরাস বাংলাদেশে প্রবেশের আগে চিকিৎসা সরঞ্জাম নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।
এমএইচ/এএস

