স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, আমি এই সেমিনারে এসে জেনেছি বাংলাদেশে ১১ লাখের ওপর ডিমেনশিয়ার রোগী রয়েছেন। ডিমেনশিয়ার ব্যাপারে আমাদের আরও গবেষণা করা উচিত, তথ্য সংগ্রহ করা উচিত। আমরা সঠিক চিত্রটি পেলে ডিমেনশিয়া নিয়ে ঠিকমতো এগোনো যাবে। কি করণীয় সেটা নিয়ে কথা বলা যাবে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিনিয়োগ ভবনের সম্মেলন কক্ষে আলজেইমার সোসাইটি অব বাংলাদেশ ও জাতীয় উদ্যোগে ডিমেনশিয়ার যত্ন ও নাগরিক মৌলিক অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক সেমিনারে তিনি এসব বলেন।
বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, এ সেমিনারে উপস্থিত থেকে প্রথমদিকে আমার মন খারাপ হচ্ছিল এটা ভেবে যে, এই রোগের কোনো চিকিৎসা নাই। শুধু কেয়ারগিভার রোগীকে যতটুকু স্বাচ্ছন্দ্য দিতে পারে। তবে সেমিনারে কি নোট প্রেজেন্টেশন দেখে আমি আশ্বস্ত হয়েছি যে, চিকিৎসা একেবারেই যে হয় না ব্যাপারটা তা না। কিছু কিছু ক্ষেত্র, যেমন একজন বলল ভাসকুলার ডিমেনশিয়া এটা ইচ্ছা করলে প্রতিরোধ করা যায়, চিকিৎসা করা যায়। এটাতে অন্তত আশার আলো দেখা গেল। আমরা এখন বলছি ডিমেনশিয়ার কোনো চিকিৎসা নাই। কিন্তু আগামীকাল যে চিকিৎসা আবিষ্কার হবে না তা নিশ্চয়তা দিয়ে বলা যায় না। বিজ্ঞানের অগ্রগতির যুগে আমরা তাই স্বপ্ন দেখতেই পারি যে আগামীতে ডিমেনশিয়া রোগের চিকিৎসা ও গবেষণা বাংলাদেশের চিকিৎসক ও গবেষকরাই করবেন।
তিনি আরও বলেন, আমি প্রশ্ন করেছিলাম ডিমেনশিয়া রোগীদের স্বাচ্ছন্দ্য দেওয়ার জন্য কোনো জিনিসটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যেটা বলা হয়েছিল সেটা হচ্ছে, আন্তরিকতা নিয়ে রোগীকে বুঝা, তার কষ্টটুকু নিজের মতো করে উপলব্ধি করা। কেয়ারগিভার বা রোগীর সেবা যত্ন যিনি করবেন তার ভেতর যাতে এ বোধটা তৈরি হয় সেই প্রশিক্ষণ আমাদের খুবই দরকার।
বিজ্ঞাপন

ডিমেনশিয়া বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা চিকিৎসক ও নার্সদের বিভিন্ন রকমের ট্রেনিং দেই। আমরা নিজেরাও ট্রেনিং নেই। কিন্তু মানবিক ট্রেনিং কতটুকু নিচ্ছি। মানুষের হৃদয় স্পর্শ করার ট্রেনিং কতটুকু আমরা দিচ্ছি। আমাদের সচেতনতার অভাব রয়েছে। আমরা যদি সভা, সেমিনার, গ্রামগঞ্জে প্রতিটা বাড়ি বাড়ি যাই এবং ডিমেনশিয়া নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করি, তাহলে এর সুফল আমরা পাবো। আমাদের এ কর্মশালাগুলো আলোচনাগুলো উঠান বৈঠকের মাধ্যমে মসজিদে, মাদরাসায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় এগুলো ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এই আয়োজনটা আমাদের করতে হবে। মন্ত্রণালয়ের সাহায্য যদি লাগে দেওয়া যাবে।
জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) নাসরীন আফরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে ডিমেনশিয়া: ক্রমবর্ধমান জাতীয় সংকট নিয়ে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন আলজেইমার সোসাইটি অব বাংলাদেশের মহাসচিব মোহাম্মদ আজিজুল হক। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডা. হালিদা হানুম আখতার, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হক, চিকিৎসক, বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকরা।
এমএইচ/এমএইচএম

