রোববার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

২৩ বছরের ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল এক বছরেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:৫৮ পিএম

শেয়ার করুন:

২৩ বছরের ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল এক বছরেই

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ২০২৩ সালে সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ৩ লাখ রোগী ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিয়েছেন। আর এর আগে ২৩ বছরে সর্বোমোট আড়াই লাখ রোগী ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিয়েছেন। এ অবস্থায় ডেঙ্গু রোগী নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক না হয়ে কোনো উপায় নেই।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব হ্রাসকরণ ও চিকিৎসা সেবা সুসমন্বিতকরণ’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


পরিসংখ্যানগত তথ্য তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে আগের ২৩ বছরে যত ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছে গত ২০২৩ সালেই তার থেকে বেশি রোগী আক্রান্ত হয়েছে। অর্থাৎ গত ২৩ বছরে দেশে মোট ডেঙ্গু রোগী ছিল প্রায় আড়াই লাখ। কিন্তু গত ২০২৩ সালে মাত্র এক বছরেই রোগী আক্রান্ত হয় প্রায় ৩ লাখ। এই সংখ্যা শুধু হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের। এর বাইরে তো আরও রোগী ছিলই। এতেই বোঝা যায়, ডেঙ্গু রোগী নিয়ে আমাদের এবার আগে থেকেই সতর্ক না হয়ে কোনো উপায় নেই। 

আরও পড়ুন

‘স্বাস্থ্যখাতে কথা কম, কাজ হবে বেশি’

পূর্ব প্রস্তুতির তাগিদ দিয়ে সামন্ত লাল সেন বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধ করতে হলে আমাদেরকে এক দিকে যেমন মশা মারতে হবে, আবার অন্যদিকে প্রাদুর্ভাব কমাতে আগে থেকেই সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। সবার আগে আমাদের নিজ নিজ এলাকার কমিউনিটি সম্পৃক্ততা ও সচেতনতা বাড়াতে হবে। মশা মারার জন্য ওষুধ যেমন মানসম্পন্ন কিনতে হবে, তেমনি আমাদেরকে ভালো ট্রিটমেন্ট ব্যাবস্থাও রাখতে হবে। তবে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আজ থেকে যেভাবে উদ্যোগ নেওয়া শুরু হলো, এটিকে চলমান রেখে সব সেক্টরকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

সিটি করপোরেশনের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে লার্ভার তথ্য জানতে হবে। নিয়ম না মানলে জরিমানার ব্যাবস্থা করতে হবে। দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় যারা বাঁধা হবে তাদেরকে জরিমানা করাসহ আরও কঠোর নিয়ম হাতে নিতে হবে। 


বিজ্ঞাপন


সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত সব রোগীর সময় মতো চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। কোন রোগীকে চিকিৎসা না দিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে পাঠানো যাবে না। ২০২৩ সালের ডেঙ্গুতে নারী ও শিশু বেশি কেন মারা গেল সেটি নিয়ে গবেষণা করে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর, মানুষকে সঠিক তথ্য জানাতে হবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ করতে আমাদেরকে এক হয়ে মাঠে নেমে কাজ করতে হবে। কোনো ভেদাভেদ যেন আমাদের মধ্যে না হয়। করোনায় যেভাবে আমরা সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করেছি, ডেঙ্গুও আমরা এক হয়ে সমন্বিতভাবে প্রতিরোধ করব। 

আরও পড়ুন

‘ঘুমের সমস্যায় বাড়ছে ডায়াবেটিস, রক্তচাপ ও ক্যানসারের মতো রোগ'

এসময় এ বছর মশার ওষুধ কেনার সময় আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করে পরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই করার কথা জানান উত্তরের মেয়র। 

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, করোনার মতো ডেঙ্গু প্রতিরোধে এ বছর আমরা আগেভাগেই এই সমন্বয় সভার আয়োজন করেছি। আশা করছি, এ বছর সকলের সাথে সমন্বয় করে আমরা ডেঙ্গু প্রতিরোধে একযোগে কাজ করে ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুহার অনেক কমিয়ে আনতে সক্ষম হবো। 

এদিকে সভার শুরুতে বাংলাদেশে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব ও নানাবিধ সমস্যা তুলে ধরে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) অধ্যাপক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা। 

এ সময় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মুহাম্মদ খুরশীদ আলম, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এমিরেটস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক জামাল উদ্দিন চৌধুরী, বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

এমএইচ/এমএইচএম

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর