বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) গত কয়েক দিনে ঘটে যাওয়া বিশৃঙ্খল পরিবেশ ও অভিযোগের বিষয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে আসা এডহক ভিত্তিতে দুই হাজার চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের তথ্য মিথ্যা বলে দাবি করা হয়েছে। একইসঙ্গে একটি স্বার্থান্বেষী মহল বিশেষ সুবিধা পাওয়ার জন্য এসব মিথ্যা অভিযোগ করছে বলেও দাবি করা হয়।
রোববার (১৭ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ কর্তৃপক্ষে দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদে যা বলা হয়েছে তা সঠিক নয়।
প্রকাশিত সংবাদের ব্যাখ্যায় বলা হয়, বিএসএমএমইউতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পরে একাডেমিক কাউন্সিলে অবহিকরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি রুটিন ওয়ার্ক। সে লক্ষ্যে গতকাল ১৬ মার্চ একাডেমিক কাউন্সিল ডাকা হয়। কিন্তু স্বার্থান্বেষী মহল, বিশেষ করে যারা অতীতে বিভিন্ন উপাচার্যের মেয়াদ শেষে উপাচার্য ও প্রশাসনের উচ্চ পদে আসীন হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার মাধ্যমে বিভিন্ন মহলকে প্রভান্বিত করার চেষ্টায় লিপ্ত থাকেন, তাদের প্ররোচনায় কিছুসংখ্যক শিক্ষক ও চিকিৎসক এর বিরোধিতা করেন। তাদের বিরোধিতার মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে গতকাল রুটিন একাকেডিম কাউন্সিল স্থগিত করা হয়। এদিন চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য কোনো বোর্ডের আয়োজন করা হয়নি। এ সময় উপাচার্যের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা সাক্ষাৎ করেন। তারা তাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া দ্রুত বাস্তবায়ন করার দাবি করেন। উপাচার্য ধৈর্য সহকারে তাদের কথা শোনেন এবং তাদের দাবি দাওয়া প্রশাসনের সবাইকে নিয়ে বাস্তবায়নের জন্য আশ্বাস দেন।
এডহক নিয়োগ প্রসঙ্গে বলা হয়, প্রকাশিত সংবাদে বর্তমান উপাচার্যের সময়কালে এডহক ভিত্তিতে যে দুই হাজার নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তা আদৌ সঠিক নয়। বিএসএমএমইউতে প্রায় ২০ বছর ধরে কর্মরত অস্থায়ী প্রায় এক হাজার ৩০০ জন কর্মচারীকে মানবিক বিবেচনায় বিভিন্ন উপাচার্যদের মেয়াদে চাকরি প্রদান ও নিয়মিত করা হয়। যাদের স্থায়ীকরণ প্রক্রিয়া বর্তমান চলমান। বাকি প্রায় ৭০০ জনের ভেতরে অনেক শিক্ষক এবং কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ ও পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়েছেন। এর মধ্যে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে ১৮৪ জন চিকিৎসক, কর্মকর্তাচারী নিয়োগের স্থায়ীকরণ প্রক্রিয়া চলমান। সকল চাকরির স্থায়ীকরণ প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ, উপ-উপাচার্যদের সমন্বয়ে স্থায়ীকরণ বোর্ড গঠন করা হয়। নিয়মানুযায়ী বোর্ডের সুপারিশে সকল স্থায়ীকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এ সংক্রান্ত প্রক্রিয়ায় আর্থিক সংশ্লিষ্টতার তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত তিন বছরে বিএসএমএমউর সামগ্রিক উন্নয়ন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। প্রথমবারের মতো লিভার ট্রান্সপ্লান্ট, পরপর দুটি সফল ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট, জটিল অপারেশনের মাধ্যমে দুই জোড়া শিশুকে আলাদা করা, স্টেম সেল থেরাপির মাধ্যমে প্রথমবারের মতো টেস্ট টিউব বেবির জন্ম, বোনম্যারো ট্যান্সপ্লান্ট কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠার প্রায় দুই যুগ পরে ২৪ ঘণ্টা জরুরি সেবা বিভাগ চালু করা হয়েছে।
এমএইচ/জেবি