সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে প্রথম ১০ মিনিট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১:২০ এএম

শেয়ার করুন:

কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে প্রথম ১০ মিনিট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
ছবি: সংগৃহীত

কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্তের পর প্রথম ১০ মিনিট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা জানান, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের প্রথম ৫ মিনিটে চিকিৎসা না নিতে পারলে সমস্যা জটিল হয়। আর ১০ মিনিটের মধ্যে চিকিৎসা না নিলে মৃত্যু অনিবার্য। কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) এর মধ্যে সমচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এতে মৃতপ্রায় ব্যক্তির জীবনও বাঁচানো যায়।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ঢাকাক্লাবে হেলদি হার্ট হ্যাপি লাইফ অর্গানাইজেশন (হেলো) এবং বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের যৌথ আয়োজনে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টবিষয়ক সচেতনতা ও সিপিআর প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


বক্তারা জানান, বিশ্বে প্রতি ২ মিনিটে একজন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে মারা যান। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন বাঁচানোর পেছনে সিপিআরের ভূমিকা অনস্বীকার্য। উন্নতবিশ্বে এই গুরুত্ব সঠিকভাবে উপলব্ধ হয়েছে বিধায় সেখানে সিপিআর প্রশিক্ষণের ব্যাপারে সচেতনতা সহজেই প্রতীয়মান হয়। অন্যদিকে আমাদের দেশে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এবং সিপিআর সম্পর্কে জনসাধারণের ধারণা না থাকায় এ ধরনের কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না।

আরও পড়ুন: স্ট্রোক-হার্ট অ্যাটাক থেকে বাঁচতে জীবনাচরণ পরিবর্তন জরুরি

সিপিআর প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিয়ে তারা বলেন, স্কুল এবং কলেজ পর্যায়ে সিপিআর প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হলে পারলে প্রত্যেক ঘরে ঘরে একজন বিশেষজ্ঞ তৈরি করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি পাঠ্য পুস্তকে এটি পড়ানো যেতে পারে। এগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলে অসংখ্য কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন রক্ষা পাবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি অধ্যাপক ডা. সজল ব্যানার্জী বলেন, পৃথিবীর মোট বৈশ্বিক মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো হৃদরোগ। যদিও আমাদের মধ্যে এই ধারণা প্রচলিত যে, উন্নত বিশ্বেই হৃদরোগের প্রকোপ বেশি। অথচ দেখা গেছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর শতকরা আশি ভাগই হয়ে থাকে মধ্য ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে। হৃদরোগের প্রাথমিক কারণের মধ্যে রয়েছে কিছু জীবন-অভ্যাস যেমন অস্বাস্থ্যকর খাবার, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব এবং ধূমপান। তবে এই সকল অভ্যাসই পরিবর্তনযোগ্য। তাই উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্বাস্থ্যসেবামূলক কর্মসূচি প্রণয়নের মাধ্যমে অনেকাংশেই হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।


বিজ্ঞাপন


সিপিআরের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, সিপিআর একটি জীবন রক্ষাকারী কৌশল। এর মাধ্যমে হৃদরোগে মৃত্যুহার অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব। এ কারণেই উন্নত বিশ্বে জনসাধারণের মধ্যে সিপিআর প্রশিক্ষণের ওপর অনেক জোর দেওয়া হয়। সে তুলনায় আমাদের দেশে এই ব্যাপারে সচেতনতা অনেক কম। বিষয়টি মাথায় নিয়ে আমাদের কাজ করা উচিত।

হেলোর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও অধ্যাপক ডা. মহসীন আহমদ বলেন, কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন বাঁচানোর পেছনে সিপিআরের ভূমিকা অনস্বীকার্য। উন্নতবিশ্বে এই গুরুত্ব সঠিকভাবে উপলব্ধ হয়েছে বিধায় সেখানে সিপিআর প্রশিক্ষণের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। আমাদের দেশে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এবং সিপিআর সম্পর্কে জনসাধারণের ধারণা না থাকায় এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেই। এই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যেই হলো কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে সিপিআর প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। স্কুল পাঠ্যতালিকায় সিপিআর অন্তর্ভুক্তির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি, আশা করছি শিগগিরই আমরা তা বাস্তবায়নে সক্ষম হবো।

হেলদি হার্ট হ্যাপি লাইফ অর্গানাইজেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু রেজা মো. কাইউম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি প্রমুখ। 

কর্মশালায় হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আসিফ জামান তুষারের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সদস্যদের সিপিআর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

এমএইচ/এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর