সদ্য বিদায় নেওয়া বছরটি দেশের চলচ্চিত্রের জন্য বেশ আশা জাগানিয়া ছিল। ‘পরাণ’ ও ‘হাওয়া’ সিনেমা দুটির আশাতীত সাফল্যে বহুদিন পর হাসি ফুটেছিল সিনেমা সংশ্লিষ্টদের মুখে। সেই অনুপ্রেরণাকে পুঁজি করেই শুরু হয়েছিল নতুন বছর। প্রথম মাসে মুক্তি পেয়েছিল ‘ব্ল্যাক ওয়ার’, ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ ও ‘সাঁতাও’ নামের তিনটি ছবি।
মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি তিনটি ব্যবসায়িক দিক থেকে কতটা সফল কিংবা দর্শকের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে— বিষয়গুলো জানতে চাইলে চলচ্চিত্র পরিদর্শক সমিতির উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস ঢাকা মেইলকে বলেন, “এক কথায় বললে, ‘পরাণ’ ও ‘হাওয়ার’র পর যতগুলো ছবি মুক্তি পেয়েছে তার একটাও ব্যবসাসফল হয়নি। সব লোকসান করেছে। খুবই খারাপ অবস্থা। বছরের শুরুতে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিগুলোরও একই দশা। ‘ব্ল্যাক ওয়ার’ নিয়ে সবাই আশাবাদী ছিলেন। ধারণা করা হয়েছিল, ছবিটি ব্যবসা করবে। কিন্তু আশা পূরণ করতে পারেনি।”
বিজ্ঞাপন
একই প্রশ্নের উত্তরে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি কাজী শোয়েব রশিদ নির্দিষ্ট কোনো ছবির নাম উল্লেখ করে কথা বললেন না। কেননা তিনি চান না বিষয়টি কাউকে কষ্ট দিক।
শোয়েব রশিদ বলেন, “শহরের সিনেপ্লেক্সগুলোতে মোটামুটি দেখেছে মানুষজন। কিন্তু গ্রামের চিত্র ছিল ভিন্ন। এ মাসের একটি ছবি দেখে গ্রামের দর্শকরা বলেছেন, ‘নাটকের মধ্যে গান ঢুকিয়ে সিনেমা বলে চালিয়ে দিয়েছে’। এটা কিছু হলো! আমরা আশা করেছিলাম ছবিগুলো ব্যবসা করবে কিন্তু আশানুরূপ ব্যবসা করতে পারেনি।”
বিজ্ঞাপন
এদিকে ‘ব্ল্যাক ওয়ার’ ছবির মাধ্যমে দুই মাস বন্ধ থাকার পর খুলেছিল মধুমিতা সিনেমা হল। এরপর মুক্তি দেওয়া হয় ‘অ্যাভেঞ্চার অব সুন্দরবন’। দুটি ছবির একটিও দর্শক টানেনি। ফলে লাভের মুখ না দেখতে পেয়ে ফের হল বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মধুমিতার কর্ণধার ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘খুবই খারাপ অবস্থা। মোটেও দর্শক পাইনি। ছবি দুটি থেকে একদিনের খরচই উঠে আসেনি। তাই আমরা হল বন্ধ করে দিয়েছি।
‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ ও ‘ব্ল্যাক ওয়ার’ সিনেমা দুটিকে মানহীন বলে আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘একেবারেই মানহীন ছবি। বাজে গল্প, গানগুলোও ভালো লাগার মতো না। তাহলে মানুষ কেন আসবে এসব ছবি দেখতে? এ ধরনের ছবি নির্মাণ হতে থাকলে চলচ্চিত্রশিল্প বা হল কোনোটাই টিকিয়ে রাখা সম্ভব না।’
আবু রায়হান জুয়েল পরিচালিত ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ সিনেমাটি বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও খ্যাতিমান শিশুসাহিত্যিক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘রাতুলের রাত রাতুলের দিন’ থেকে নির্মিত হয়েছে। এতে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন পরীমণির ও সিয়াম।
‘ব্ল্যাক ওয়ার’ সিনেমাটি ‘মিশন এক্সট্রিম’র দ্বিতীয় কিস্তি। সানী সানোয়ার ও ফয়সাল আহমেদ নির্মিত এ ছবিতে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ ও ঐশী। অন্যদিকে ‘সাঁতাও’ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন খন্দকার সুমন।
আরআর/আরএসও