শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

শুটিং দৃশ্যের ফেসবুক লাইভ, সাইমন কি ঠিক করছেন

বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২ নভেম্বর ২০২২, ০২:৪৫ পিএম

শেয়ার করুন:

শুটিং দৃশ্যের ফেসবুক লাইভ, সাইমন কি ঠিক করছেন

শাহরুখ খান কিংবা সালমান খান কোনো সিনেমায় অভিনয় করছেন। ছবিটির শুটিংয়ের কিছু মুহূর্ত আবার নিজেরাই ভিডিও করে প্রকাশ করছেন নিজেদের ফ্যান পেজে। এমনটা কখনও দেখেছেন? বিষয়টা কেউ কল্পনাও করতে পারবেন না হয়তো। কেননা তাদের শুটিং সেটে থাকে কঠোর নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা। ছবির কোনো স্থিরচিত্র বা ভিডিও ফুটেজ আনঅফিসিয়ালি প্রকাশ করাটা মোটেও সমর্থন করেন না তারা।

তারপরও মাঝে মাঝে ফাঁস হয়ে যায় কিং খান বা ভাইজানদের শুটিংয়ের ভিডিও বা ছবি। বিষয়টি ভালোভাবে নেন না তারা। প্রতিবাদ ও ক্ষোভও প্রকাশ করেন। শুধু এই খানদ্বয় নন, গোটা বলিউডই এই নীতি মেনে চলে। পশ্চিমবঙ্গের টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিও একই পন্থা অবলম্বন করছে।


বিজ্ঞাপন


তবে একেবারেই উল্টো ঢালিউড। একটি সিনেমার মহরতের সময় থেক শুরু করে শুটিংয়ে বিভিন্ন মুহূর্ত ওই সিনেমার অভিনয়শিল্পী-কলাকুশলীরা ইচ্ছামতো ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন।

symon sadik

চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক এ ব্যাপারে যেন আরও এক কাঠি সরেস। নিজের অভিনীত সিনেমার শুটিংয়ের বিভিন্ন মুহূর্ত ভিডিও করে নিজের ফ্যান পেজে প্রকাশ করছেন নিয়মিত। পাশাপাশি দৃশ্যধারণের সময় লাইভেও আসছেন এ অভিনেতা। কয়েকমাস ধরে তৈরি হয়েছে তার এই অভ্যাস। এর মাধ্যমে ডলারও আয় হচ্ছে তার।

বিষয়টি ভালোভাবে নিচ্ছেন না নেটিজেনরা। তারা বিরক্তি প্রকাশ করেছেন নেট মাধ্যমে। অনেকের মতে নিজের অভিনীত সিনেমার কাজ চলাকালীন মুহূর্ত এভাবে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করা মোটেও সমীচীন নয়। এটি একজন অভিনেতার দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় মাত্র।


বিজ্ঞাপন


নেটাগরিকদের এসব অভিযোগর বিপরীতে সাইমনের মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ঢাকা মেইলকে সাইমন বলেন, ‘অনেকে অনেক ধরণের মন্তব্য করতেই পারেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবার মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। তবে তাদের এসব অভিযোগের বিপরীতে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এ ব্যাপারে কিছুই বলতে চাই না।’

symon sadik

সম্প্রতি সাইমন শেষ করেছেন ‘চাদর’ সিনেমার কাজ। এই ছবির বিভিন্ন সময়ের শুটিয়ের অংশ তিনি প্রকাশ করেছেন ফেসবুকে। বিষয়টি কীভাবে দেখেছেন— জানতে চাইলে সিনেমার নির্মাতা জাকির হোসেন রাজু বলেন, “আমি এখানে খারাপ কিছু দেখছি না। এতে বিষয়টি মানুষের কাছে যাচ্ছে। সবাই জানতে পারছেন ‘চাদর’ নামে একটা সিনেমা হচ্ছে।”

এ সময় জাকির হোসেন রাজু ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার উদাহরণ টেনে বলেন, ‘টেলিভিশন ও পত্র-পত্রিকায়ও তো আমাদের সিনেমার নিউজ করছে। এটাও সেরকম বলে আমি মনে করি। সিনেমায় যারা কাজ করছেন তারা তো তাদের ছবির কথা সবাইকে জানাতেই পারেন। পুরো সিনেমাটা তো আর দিচ্ছে না তারা। আমি ব্যাপারটাকে ইতিবাচকভাবেই দেখছি।’

একই বিষয়ে মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হয় বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা কাজী হায়াতের সঙ্গে। শুটিং চলাকালীন মুহূর্তের ভিডিও নেট দুনিয়ায় প্রকাশ করা কতটা যুক্তিযুক্ত— জানতে চাইলে কাজী হায়াৎ বলেন, ‘একটি সিনেমা বিক্রি করতে হলে তার প্রচারণা চালাতে হয়। পোস্টার করা হয়। হলের সামনে লিফলেট লাগানো হয়। একটা সময় দৈনিক পত্রিকাগুলোতে লাখ টাকা খরচ করে সিনেমার বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো। রেডিও টেলিভিশনেও একইভাবে বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো। এখন সেই প্রচারণা ফেসবুকে চালানো হচ্ছে। এতে খারাপ কিছু দেখছি না। কেননা একটি ছবির কথা মুক্তির আগে দর্শকের কাছে পৌঁছে দেওয়াটা অবশ্যই উচিত। সেই জায়গা থেকে আমি মনে করি আরও বেশি করে এগুলো করা উচিত।’

symon sadik

এ ক্ষেত্রে সিনেমার বিহাইন্ড দ্য সিনগুলো প্রকাশ করা হচ্ছে ফেসবুকে। মুক্তির আগেই এসব দৃশ্য প্রকাশ করায় ছবিটি আবেদন হারাচ্ছে না বলে মনে করেন নেটাগরিকরা। তবে এটি মানতে নারাজ কাজী হায়াৎ। তিনি বলেন, ‘বিহাইন্ড দ্য সিনের প্রতি দর্শকের আগ্রহ থাকে। নায়ক-নায়িকারা কীভাবে একটি দুর্গম পাহাড়ে উঠছেন, কীভাবে একটি মারমুখী দৃশ্যে অভিনয় করছেন— এসব দৃশ্যের শুটিং দেখে দর্শক যদি সিনেমাটির প্রতি আগ্রহী হয় তাহলে ক্ষতির কিছু নেই।’

কাজী হায়াৎ সবার স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। যে যেভাবে ইচ্ছা সিনেমার প্রচার চালাতে পারে বলে মনে করেন তিনি। তার মতে সিনেমার বিজ্ঞাপনের আধুনিক সংস্করণ এটি। এ নিয়ে এত সমালোচনার কিছু নেই বলে জানান তিনি।

আরআর/আরএসও

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর