গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ছায়ানট’ ভবনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ধানমন্ডির ছায়ানট ভবনে ভাঙচুরের ঘটনায় দেশের শিল্পীদের পাশাপাশি ওপার বাংলার শিল্পীদের মাঝেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিবেদনে টলিউড তারকা ও সংগীতশিল্পীরা এই ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছেন।
ছায়ানটের ওপর হামলায় মর্মাহত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী প্রমিতা মল্লিক। তিনি ক্ষোভ উগরে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যা ঘটল তা এক কথায় দানবিক, উন্মত্ত গুন্ডাগিরি। যে গান ব্যাধি কমাতে ব্যবহৃত হয়, সেই সংগীত প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হচ্ছে! এর চেয়ে ঘৃণ্য ঘটনা আর কী হতে পারে। আমি প্রতি মুহূর্তে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি।’
বিজ্ঞাপন
দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী বাংলাদেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ শিল্প-সংস্কৃতিতে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। সেই সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এখন ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিল্প-সংস্কৃতির অঙ্গন সব পুড়িয়ে নষ্ট করে ফেলছে। জানি না এর শেষ কোথায়! বার বার অকারণে বিনোদন দুনিয়ার ওপর আঘাত নেমে আসছে, যা একেবারেই কাম্য নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ও ভারত বিদ্বেষী মনোভাব দুই দেশের দীর্ঘদিনের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানকে ব্যাহত করবে।’

বিজ্ঞাপন
টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিক বলেন, ‘সব ধরনের হিংসার ঊর্ধ্বে বিনোদন দুনিয়া। সেখানেও মৌলবাদ ছায়া ফেললে এর থেকে দুঃখের আর কিছুই হতে পারে না।’ কয়েকদিন পর মুক্তি পেতে যাওয়া তার নতুন ছবি ‘মিতিন মাসি’-এর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘একজন গোয়েন্দা হিসেবে মিতিন মাসি থাকলে সবার আগে প্রকৃত খুনিকে ধরে শাস্তি দিতেন এবং নিরপরাধ মানুষের প্রাণ বাঁচাতেন।’
নাট্যকার অবন্তী চক্রবর্তী বাংলাদেশের নাটক মঞ্চস্থ করার সুখস্মৃতি হাতড়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘দুই বাংলার শিল্পীদের যে মেলবন্ধন, সেই সব দিন কি আর ফিরে আসবে?’ তিনি বিশ্বাস করেন, ‘সবার উপরে মানুষ সত্য’।
এদিকে ছায়ানটে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২০ ডিসেম্বর রাতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় ৩০০ থেকে ৩৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন ছায়ানটের প্রধান ব্যবস্থাপক দুলাল ঘোষ।
ইএইচ/

