শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ভারতীয় সিনেমায় জয়া, ক্ষোভ ঝাড়লেন তৃণমূল নেত্রী

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০২:১৮ পিএম

শেয়ার করুন:

ভারতীয় সিনেমায় জয়া, ক্ষোভ জাড়লেন তৃণমূল নেত্রী

ঢালিউড অভিনেত্রী জয়া আহসান দীর্ঘ অভিনয় জীবনে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন অসংখ্য নাটক ও সিনেমা। ঢাকাই সিনেমা ছাড়াও অভিনয় করেছেন টলিউডে। এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ‘ডিয়ার মা’ সিনেমার প্রচারে। এটি আগামী ১৮ জুলাই মুক্তি পাবে। এছাড়াও ‘অর্ধাঙ্গিনী ২’ সিনেমার শুটিংয়ের জন্য ভারতে অবস্থান করছেন অভিনেত্রী। 

তবে ভারতীয় সিনেমায় বাংলাদেশি শিল্পীদের কাজ করা নিয়ে আপত্তি তুলেছেন কলকাতা পৌর করপোরেশনের নারী কাউন্সিল জুঁই বিশ্বাস। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) তৃণমূল নেত্রী তাঁর ফেসবুকে জয়ার কাজ করা নিয়ে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন। 


বিজ্ঞাপন


জুঁই বলেন, ‘আমরা পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা কী জেগে ঘুমিয়ে আছি? আমাদের শিল্পী, কলাকুশলী, ইভেন্ট অর্গানাইজাররা বাংলাদেশে কাজ করতে পারছেন না, আটক করে রাখা হচ্ছে, অথচ জয়া আহসানকে ভারতে রেড কার্পেট দিয়ে অভিনয়ের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের কোনো শিল্পীর কি প্রতিভা নেই, জয়া যে চরিত্রটি করেছেন সেখানে অভিনয় করার মতো? কেন ভারতীয় জাদুঘরে তার মিউজিক অ‌্যালবাম রিলিজ হয়?’

509358363_1308393267319930_4798631574883198336_n

এখানেই থেমে থাকেননি জুঁই বিশ্বাস। আজ বুধবার (১৬ জুলাই) সকালে আরও একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। তিনি বলেন, ‘এটি সত্যি যে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় দেখা গেছে, পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীরা বাংলাদেশে কাজ করতে গেলে প্রশাসনিক জটিলতা, ভিসা জট বা ডিটেনশন-এর মতো ঘটনাও ঘটছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ও দুশ্চিন্তার বিষয়। যদি দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান হয়। তাহলে সেটা দুই-পক্ষের হওয়া উচিত—না যে এক তরফা উদারতা দেখাতে হবে। না এক তরফা বন্ধুত্ব মেনে নিতে হবে।’ 


বিজ্ঞাপন


তিনি যোগ করেন, ‘বাংলাদেশ যদি ভারতীয় শিল্পীদের জন্য সুযোগ সীমিত করে রাখে। তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠবে, ভারত কেন বাংলাদেশি শিল্পীদের জন্য দরজা খোলা রাখছে? জয়া আহসান নিঃসন্দেহে একজন প্রতিভাবান অভিনেত্রী। কিন্তু প্রশ্নটা প্রতিভার নয়—প্রশ্নটা ন্যায়বিচার ও ভারসাম্যের। যখন ভারতীয় শিল্পীরা সীমাবদ্ধতায় ভোগেন, অথচ বাংলাদেশি শিল্পীরা এখানে বড় সুযোগ পান, তখন তা সবার চোখে বৈষম্য বলে মনে হয়।’  

481079497_3146890385450454_4319332557612855011_n

প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে জুঁই বিশ্বাস বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কি সেই চরিত্রগুলো করতে অক্ষম? অবশ্যই না। তাহলে বারবার বিদেশি শিল্পীদের এমন ‘বাড়তি’ গুরুত্ব দেওয়ার যুক্তি কী? প্রযোজক-পরিচালকরা দেশ বিরোধী কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিৎ নয় কি? যেকোনো শিল্পচর্চা অবশ্যই মুক্ত হওয়া উচিত। কিন্তু তার মধ্যে দেশীয় শিল্পীদের সুযোগ দেওয়াটাও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। যখন তাদের কাজের সুযোগ বিদেশি শিল্পীদের দিয়ে দেওয়া হয় (যেখানে সেই দেশ ভারতীয় শিল্পীদের আটকে দেয়), তখন সেটি দায়বদ্ধতার অভাব বলেই মনে হয়।’ 

সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘যদি পাকিস্তানি শিল্পীদের ভারত নিষিদ্ধ করে, তাহলে বাংলাদেশি শিল্পীদের জন্য শর্তহীন মঞ্চ কেন? একতরফা সংস্কৃতিক দান কি আর রাজনীতি বা কূটনীতিতে কার্যকর? এটি নিছকই অর্থনৈতিক ক্ষতির প্রশ্ন নয়। এটি একটি ‘সফট পাওয়ার’ বা সাংস্কৃতিক ক্ষমতার প্রশ্ন। যখন ভারতের শিল্পীরা অন্য দেশের বাজারে প্রবেশ করতে পারে না, অথচ বিপরীতে সেই দেশের শিল্পীরা ভারতে ব্যবসা, সম্মান এবং সুযোগ পান, তখন এটা কেবল ‘বাণিজ্য’ নয়—ভারসাম্যহীনতা ও আত্মমর্যাদার প্রশ্ন। আমরা উদারতা দেখাচ্ছি—কিন্তু তার মূল্য দিচ্ছে নিজেরাই। উদারতা কূটনৈতিক সম্পর্কের একটি দিক হতে পারে, কিন্তু তার ভিত্তি হওয়া উচিত পারস্পরিকতা। বন্ধুত্ব কাঁধে কাঁধ রেখে চলে, হাঁটু গেড়ে নয়।’ 

ইএইচ/

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর