বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি আহসান হাবীব ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। একাধারে কবি, সাংবাদিক ও খ্যাতিমান সাহিত্য সম্পাদক। পিরোজপুর সদর উপজেলার শংকরপাশা গ্রামে ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা সাহিত্যের এক পুরোধা পুরুষ তিনি।
একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত এ কবি ১৯৩৫ সালে পিরোজপুর থেকে প্রবেশিকা পাশ করেন। এরপর ভর্তি হন বরিশাল ব্রজমোহন কলেজে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে লেখাপড়া ত্যাগ করে কলকাতা যান এবং সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হন। কলকাতায় তিনি তকবীর, বুলবুল ও সওগাত পত্রিকায় কাজ করেন।
বিজ্ঞাপন
১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ঢাকায় এসে আজাদ, মোহাম্মদী, কৃষক, ইত্তেহাদসহ বেশকিছু পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। পরে কিছুদিন দৈনিক পাকিস্তানে কাজ করেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দৈনিক বাংলার সাহিত্য সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
আহসান হাবীব আধুনিক কাব্যধারার কবি। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালে ১৯৩৩ সালে স্কুল ম্যাগাজিনে তার প্রথম প্রবন্ধ ‘ধর্ম’ প্রকাশিত হয়। ১৯৩৪ সালে প্রথম কবিতা ‘মায়ের কবর পাড়ে কিশোর’ ছাপা হয় পিরোজপুর গভর্নমেন্ট স্কুল ম্যাগাজিনে। তার প্রথম কবিতার বই ‘রাত্রিশেষ’ ১৯৪৭ সালে প্রকাশিত হয়।

বিজ্ঞাপন
আবহমান বাংলার ঐতিহ্য আহসান হাবীবের কবিতায় স্বকীয়ভাবে ফুটে উঠেছে। দেশের মধ্যবিত্তের সংকট ও জীবনযন্ত্রণা তাঁর কবিতার মূল বিষয়। সাহিত্যসাধনার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ইউনেসকো সাহিত্য পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক, একুশে পদকসহ নানা পুরস্কার লাভ করেন।
বাংলা ভাষা সাহিত্যে অবদানের জন্য তাকে বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৮ সালে একুশে পদক এবং ১৯৯৪ সালে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।
আহসান হাবীবের উল্লেখযোগ্য রচনাবলির মধ্যে রয়েছে, ‘ছায়াহরিণ’, ‘সারা দুপুর’, ‘আশায় বসতি’, ‘মেঘ বলে চৈত্রে যাব’, ‘দু’হাতে দুই আদিম পাথর’ ইত্যাদি। এ ছাড়া দুটি উপন্যাস : ‘অরণ্য নীলিমা’ ও ‘রাণীখালের সাঁকো’।
১৯৮৫ সালের ১০ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন কবি ও সাংবাদিক আহসান হাবীব। আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) কবির ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী। তিনি বেঁচে না থাকলেও তাঁর কর্ম অমর করে রেখেছে।
ইএইচ/

