পয়লা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব। এদিন বর্ষবরণে মেতে ওঠে সবাই। গতকাল তার ব্যতিক্রম হয়নি। অনন্দের দিনকে ঘিরে সবার মনে খুশির ফোয়ারা ছড়িয়ে গেছে। এ বছর বর্ষবরণ উদযাপনে ব্যতিক্রম আয়োজন চোখে পড়েছে। এরইমধ্যে আয়োজনকে ঘিরে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
গতকাল সোমবার (১৫ এপ্রিল) চীনা দূতাবাসের কারিগরি সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় এ ড্রোন শো আয়োজন করা হয়। এদিন ঢাকার আকাশে দেখা গেল, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ’, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো ‘আবু সাঈদ’, ‘পানির বোতল হাতে প্রতীকী মুগ্ধ’, ‘২৪-এর বীর’, ‘পায়রার খাঁচা ভাঙা থিম’ এবং ‘ফিলিস্তিনের জন্য প্রার্থনার’ ছবি।
তবে ড্রোন শোতে জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদ ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরামের ছবি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ছাত্রদল। বিষয়টিতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
ড্রোন শোতে শহীদ ওয়াসিম উপেক্ষিত, ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদকের ক্ষোভ
বিজ্ঞাপন
এক পোস্টে উপদেষ্টা লিখেছেন, ‘ এই কয় সপ্তাহের ঝড়ের পর ক্লান্ত শরীরে ঘরে ঢুকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভাই-বোনদের বিবৃতিটা চোখে পড়ল। হয়তো তাদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে ভুল বোঝাবুঝি দুর করতে পারতাম। কিন্তু পাবলিক রেকর্ডসের জন্য এখানেই লিখছি।’
তিনি যোগ করেন, ‘আজকের ড্রোন শোতে শহীদ ওয়াসিমের ছবি না থাকায় তাদের ব্যথিত হওয়া শতভাগ যৌক্তিক। এই দুঃখ আমারও। যাত্রাবাড়ীর কোনো মাদ্রাসা ছাত্রের ছবি না রাখতে পারার দুঃখও আছে। আরও অনেককে মিস করেছি। কিন্তু আইকনিক ইমেজ বাছাই, স্টোরিটেলিংয়ের থিমেটিক ফ্লো ঠিক রাখা, এবং বেশি ইমেজ বাছাই করার সুযোগ না থাকাতে এই অবস্থায় পড়েছি আমরা।’
একুশে পদকের আয়োজন নিয়ে যা বললেন উপদেষ্টা ফারুকী
সংস্কৃতি উপদেষ্টা আরও লিখেছেন, ‘মনে রাখবেন প্লিজ, শহীদদের দলের ভিত্তিতে ভাগ করে গুরুত্ব বা কম গুরুত্ব দিয়েছি তা না। জুলাইয়ের সকল শহীদই সমান। শুধু জুলাই না, এর আগের ষোলো বছরে গুম-খুনের শিকার সবার ত্যাগেই ফ্যাসিবাদের পতন। তারা প্রত্যেকেই আমাদের হিরো। আমার জুলাই-আগস্ট বা ২০১৪-১৫ সালের লেখালেখি পড়ার সুযোগ হলে দেখতে পাবেন আমি কি কি বলার চেষ্টা করেছি।’
বাংলা একাডেমিকে ঢেলে সাজানো হবে: উপদেষ্টা ফারুকী
সবশেষ তিনি লিখেছেন, ‘ আমি শুধু এইটুকু বলবো, আপনারা দয়া করে জুলাই যাদুঘরের দিকে দৃষ্টি রাখবেন। সেখানে আমাদের কালের নির্যাতিত, শহীদ, গুম হয়ে যাওয়া সবাইকে পাবেন, সবার গল্পগুলো পাবেন। যে মানুষদের প্রাণের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা। তাদের আমাদের স্মরণ করতে হবে। তাদের জন্য বেদনায় মন খারাপ হয়ে যেতে হবে। কারণ বেদনা আমাদের মন এবং ইতিহাস দুইটাই পরিশুদ্ধ করে। তাই বেদনা জারি থাকা ভালো। সকল শহীদ ও গুম হওয়া মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধা।’
ইএইচ/