মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

পরীমণির বিরুদ্ধে থানায় জিডি

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১০ পিএম

শেয়ার করুন:

পরীমণির বিরুদ্ধে থানায় জিডি

ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমণি সিনেমার চেয়ে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সংবাদের শিরোনামে থাকেন তিনি। এবার চিত্রনায়িকার এক বছরের মেয়ে সন্তানকে খাবার খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে গৃহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে। 

এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) সাধারণ ডাইরি করেছেন ভুক্তভোগী গৃহকর্মী পিংকি আক্তার।
 
ভাটারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাজহারুল ইসলাম জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘চিত্রনায়িকা পরীমণির বাসার এক গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ওই গৃহকর্মী থানায় একটি জিডি করেছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।’


বিজ্ঞাপন


আদালতে পরীমণির জামিনদার কে এই তরুণ? 

নির্যাতনের কথা তুলে ধরে পিংকি আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এক মাস আগে আমি কাদের নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে চিত্রনায়িকা পরীমণির বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় কাজ পাই। আমার দায়িত্ব ছিল পরীমণির এক বছর বয়সী মেয়ের দেখাশোনা করা এবং তাকে খাবার খাওয়ানো।’

অভিনেত্রীর মেয়েকে প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর খাওয়ানোর নিয়ম। আমি সেটা মেনে প্রতিদিন বাচ্চাকে দুই ঘণ্টা পরপর খাবার খাওয়াই পিংকি। বাচ্চার দেখাশোনার জন্য নিয়ে যাওয়া হলেও, বাসার অন্যান্য কাজও করানো হতো বলে অভিযোগ করেন তিনি।

শেখ সাদী আমার বিশ্বাস: পরীমণি


বিজ্ঞাপন


তিনি আরও বলেন, ‘গত ২ এপ্রিল আমি পরীমণির বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসায় তার বাচ্চাটিকে বসিয়ে বাজারের লিস্ট করছিলাম- কি কি লাগবে। এ সময় বাচ্চাটা কান্না শুরু করে। এরমধ্যে কান্না শুনে সৌরভ নামে এক ব্যক্তি, যিনি পরীমণির পরিচিত এবং মাঝেমধ্যেই তার বাসায় আসেন, আমাকে বললেন, ‘বাচ্চাটাকে একটু সলিড খাবার দাও।’ 

তখন আমি সৌরভ ভাইকে বললাম, ভাই, বাচ্চাটা কিছুক্ষণ আগে সলিড খাবার খেয়েছে, দুই ঘণ্টা হয়নি এখনো। আমি একটু কাজ করি, তারপর তাকে দুধ খাওয়াই।

গৃহকর্মী যোগ করেন, ‘আমি এখানে এসে জেনেছি, আমার আগে যে গৃহকর্মী ছিলেন, তিনিও বাচ্চাটা কান্না করলে মাঝেমধ্যে দুধ দিতেন। এই কথা বলে আমি বাচ্চাটার জন্য দুধ রেডি করছিলাম। এরই মধ্যে পরীমণি মেকআপ রুম থেকে বের হয়ে আমাকে তুই-তোকারি করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। আমি কেন বাচ্চার জন্য দুধ নিয়েছি।

সকালে আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন পরীমণি

তখন আমি তাকে বললাম, ‘যেহেতু সলিড খাবার দেওয়ার সময় এখনো হয়নি, তাই আমি দুধ নিয়েছি। তখন পরীমণি আমাকে গালি দিয়ে বলেন, বাচ্চাটা কি তোর না আমার? এরপরই তিনি আমাকে ক্রমাগত থাপ্পড় দিতে থাকেন এবং মাথায় জোরে জোরে আঘাত করতে থাকেন।’  

তিনি আরও বলেন, ‘তিনি যখন আমাকে থাপ্পড় দিতে শুরু করেন, তখন আমি হতবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আমি ভেবেছিলাম, তিনি হয়তো দুই-একটি থাপ্পড় দিয়ে থেমে যাবেন। কিন্তু তিনি থামলেন না- উল্টো আমার মাথায় আরও জোরে আঘাত করতে থাকলেন। তার মারধরে আমি তিনবার ফ্লোরে পড়ে যাই। এরপর তিনি আমার বাম চোখে অনেক জোরে একটি থাপ্পড় মারেন। এই থাপ্পড়ের কারণে আমি এখনো বাম চোখে কিছু দেখতে পাই না।’

কী বোঝাতে চাইলেন কচি আপা— বর্ষাকে ধুয়ে দিলেন পরীমণি

মারধরের পর আমি জোরে জোরে কান্না করতে থাকি এবং তাকে বলি, আমি আর পারছি না, আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তখন তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে বলেন, তুই এখান থেকে কোথাও যেতে পারবি না। তোকে এখানেই মারবো এবং এখানেই চিকিৎসা করবো।

এরপর আবার আমাকে মারতে আসেন। তখন সৌরভ তাকে বাধা দেন। সৌরভ কেন বাধা দিলেন, এই কারণে পরীমণি তাকেও গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যাই।

পিংকি আক্তার অভিযোগ করে আরও বলেন, ‘প্রায় এক ঘণ্টা পর আমার জ্ঞান ফেরে। তখন বাসার আরেকজন গৃহকর্মী, বৃষ্টিকে আমি বলি, আমাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করো। তখন বৃষ্টি আমাকে বলেন, পরীমণি ঘুমিয়েছেন, তাকে এখন ডিস্টার্ব করা যাবে না।

পরীমণির সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, মুখ খুললেন শেখ সাদী

তখন কোনো দিশামিশা না পেয়ে বাথরুমে লুকিয়ে কাদের ভাইকে ফোন দিই। তাকে পুরো ঘটনা জানাই এবং সাহায্য চাই। সে যেন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সেও আমাকে বলেন, পরীমণি এখন যদি ঘুমিয়ে থাকেন, তাহলে তাকে ডিস্টার্ব করা যাবে না। 

তিনি আরও বলেন, ‘আমি বাধ্য হয়ে জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করি এবং পুলিশকে জানাই যেন তারা আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এরই মধ্যে আমি আমার এক কাজিনকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানাই। তিনিও ঘটনা জানতে পেরে পরীমণির বাসার সামনে আসেন। একই সময় পুলিশও আসে পরীমণির বাসার সামনে। 

এসব ঘটনা পরীমণি জানার পর তিনি বাসার আরেক গৃহকর্মী বৃষ্টিকে বলেন, আমাকে বাসার নিচে নামিয়ে দিতে। পরে বৃষ্টি আমাকে বাসার নিচে নামিয়ে দেন।

এর পরের ঘটনা জানিয়ে পিংকি আক্তার বলেন, ‘আমি তখন রিকশা নিয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিই। তার মারধরের কারণে আমি এখনও অসুস্থ। আমি প্রাথমিকভাবে একটি জিডি করেছি, পরবর্তীতে আমি আরও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো তার বিরুদ্ধে।’

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর