বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

রেজিস্ট্রারের অপসারণ চেয়ে এশিয়া প্যাসিফিকে বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৯ মার্চ ২০২৩, ০২:৩১ পিএম

শেয়ার করুন:

রেজিস্ট্রারের অপসারণ চেয়ে এশিয়া প্যাসিফিকে বিক্ষোভ

এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। সবশেষ রোববার (১৯ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. মুস্তাফিজুর রহমান ছাড়াও তার সঙ্গে জড়িতদের অপসারণের দাবিতে কর্ম-বিরতি ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণসহ উপাচার্যের অফিসে সমবেত হয়ে বিক্ষোভে নেমেছেন এশিয়া প্যাসিফিকের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীসহ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

গত ১৩ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়টির জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফারুক হোসেন আত্মহত্যা করেন। পরে তার এমন পদক্ষেপের জন্য এশিয়া প্যাসিফিকের রেজিস্ট্রার মুস্তাফিজুর রহমান ছাড়াও সহকারী জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা তামিম জোবায়েরসহ কয়েকজনকে দায়ী করে এর বিচার দাবি করেন ফারুক হোসেনের ছোট ভাই ফরিদ হোসেন।


বিজ্ঞাপন


>> আরও পড়ুন: আত্তীকরণের ১০ বছরেও অধিকাংশ শিক্ষকের চাকরি নিয়মিতকরণ হচ্ছে না

এ বিষয়ে গত ১৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমাও দিয়েছেন তিনি। ওই অভিযোগে ফরিদ হোসেন বলেন, আমার বড় ভাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২৫ বছর ধরে কর্মরত ছিলেন। আমি জানতে পেরেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান ও তার সহকারী তানিম জুবায়ের দুইজন পিয়নসহ ডেস্কের ফাইল গোপন করে দীর্ঘদিন যাবত ভাইকে মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন। কখনো কখনো তাকে রুমের ভেতরে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করতেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমার ভাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। ফোনে ও মুখোমুখি নানা রকম মামলা-হামলা এবং প্রাণনাশের হুমকিও দিয়ে আসছিলেন তারা।

Asia Pasificএই অবস্থায় তিনি (ফারুক হোসেন) সর্বশেষ রোববার ১২ মার্চ অফিস করেন এবং ১৩ মার্চ মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। তাকে মানসিক নির্যাতনের সত্যতা সিএসই ডিপার্টমেন্টের সব সহকর্মী ও প্রতিষ্ঠানের অনেকেই অবগত আছেন বলেও অভিযোগে দাবি করেন ফরিদ হোসেন।

>> আরও পড়ুন: ‘ক্ষমতাসীনদের দ্বন্দ্বে’র বলি রাবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা!


বিজ্ঞাপন


অন্যদিকে ফারুকের আত্মহত্যার ঘটনায় ‘প্ররোচনাকারী’ হিসেবে দায়ী করে রেজিস্টারকে অপসারণের দাবিতে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন বিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাবৃন্দ। সেই সঙ্গে তারা চার দফা দাবিও জানিয়েছেন। পাশাপাশি এ ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে শাস্তির ব্যবস্থাসহ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে রেজিস্টারকে তার পদ ছাড়াও সব কার্যক্রম থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার চেয়েছেন তারা।

Asia Pasificএছাড়াও স্মারকলিপিতে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা দ্বারা হয়রানি, মানহানি, অপমান ও মানসিক নির্যাতন বন্ধ করে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা; কতিপয় কর্মকর্তা মিলে আলাদা প্রশাসনিক কাঠামোর বলয় ভাঙা এবং তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদতদানকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে রেজিস্টারের অধীনস্থদের নিয়ম বহির্ভূত কাজে বাধ্য করা, জোরপূর্বক চাকরিচ্যুত, প্রমোশন আটকানো- এমনকি গুরুত্বপূর্ণ নথি গায়েবসহ সকল অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের ব্যবস্থা করার দাবিও জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্মকর্তা-কর্মচারীরাবৃন্দ।

>> আরও পড়ুন: সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে রাবি শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, রেজিস্ট্রার মো. মুস্তাফিজুর রহমান তার অফিসকে টর্চার সেলে পরিণত করেছিলেন। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ইউএপি’র অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বললে নিশ্চিত হওয়া যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ট্রাস্ট্রির ছত্রছায়ায় তিনি এসব অপকর্ম করতেন। কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পেত না।

সবমিলিয়ে জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেনের মৃত্যুকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে সবশেষ রেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ছাড়াও শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

পিএস/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর