বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘বাজার করাসহ শিক্ষার্থীদের দিয়ে ব্যক্তিগত কাজ করান কুবি শিক্ষিকা’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৬ আগস্ট ২০২২, ০১:২২ এএম

শেয়ার করুন:

‘বাজার করাসহ শিক্ষার্থীদের দিয়ে ব্যক্তিগত কাজ করান কুবি শিক্ষিকা’

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. বনানী বিশ্বাসের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের হেনস্তাসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে উপাচার্য বরাবর চিঠি দিয়েছে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। ২৪ আগস্ট একই চিঠি উপ-উপাচার্য, প্রক্টর ও ডিন বরাবরও জমা দিয়েছেন তারা। তবে অভিযোগের কারণে পরীক্ষার ফলাফলে প্রভাব পড়ার ভয়ে অভিযোগপত্রে নাম উল্লেখ করেননি শিক্ষার্থীদের কেউ।

অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিভাগীয় প্রধান তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় অসদাচরণ করেন। কোনো বিষয়ে তার কক্ষে দেখা করতে গেলে বিদ্রুপ আচরণ করেন। প্রায়সময়ই ‘হু আর ইউ’ বলে শ্রেণিকক্ষ থেকেও শিক্ষার্থীদের বের করে দেন।


বিজ্ঞাপন


অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থীরা আরও উল্লেখ করেন, একটি সেমিস্টারে শিক্ষার্থীরা সিলেবাসের মধ্য থেকে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী কোর্স নিতে চাইলেও তিনি তাদেরকে কোর্স নিতে দেননি। উল্টো শিক্ষার্থীদেরকেই ওই কোর্স পরিচালনা করতে বলেন তিনি।

আরও পড়ুন: নষ্ট ইভিএমের তথ্য সংগ্রহ করছে ইসি

এছাড়া বিভিন্ন সময় শ্রেণিকক্ষে অন্য শিক্ষকদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এমনকি পরিবারের জন্য বাজার করাসহ ব্যক্তিগত বিভিন্ন কাজেও শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেন তিনি। কেউ এসবের প্রতিবাদ করতে গেলে তাদেরকে বিভিন্ন রকম হুমকি-ধামকিও দেন তিনি।

শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়েছে ঢাকা মেইলের এই প্রতিবেদকের। তাদের একজন বলেন, ‘শিক্ষক বনানীর অসদাচরণে আমরা অতিষ্ঠ। অভিযোগপত্রে নাম উল্লেখ করলে আমাদের ফলাফলে প্রভাব পড়বে। এই ধরনের আচরণ থেকে মুক্তি পেতেই উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দিয়েছি। সাবেক শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।’


বিজ্ঞাপন


এ ব্যাপারে কথা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে। নামপ্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, ‘বিভাগীয় প্রধানের এমন আচরণে সহকর্মী হিসেবে আমরাও লজ্জিত এবং বিব্রত। তিনি শুধু শিক্ষার্থীদের সঙ্গেই এ ধরনের আচরণ করেন না, শিক্ষকদের সঙ্গেও করেন। প্রায়ই বিভাগের অন্য শিক্ষকদের নামে মিথ্যাচার করেন। মতের অমিল হলে হেনস্তাও হতে হয় যে কাউকে। সম্প্রতি কনিষ্ঠ শিক্ষকদের নিজের দলে নেওয়ার জন্যও তাদেরকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করেছেন।’

আরও পড়ুন: জন্ম থেকেই রোহিঙ্গা শিশুদের সংগ্রামী জীবন

স্নাতকোত্তরে থিসিস পাওয়া শিক্ষার্থীরা তার অধীনে কাজ না করার কারণে অন্যান্য কোর্সে তাদের নম্বর কমিয়ে দেওয়ারও অভিযোগ করেছেন আরেক শিক্ষক।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ড. বনানী বিশ্বাস বলেন, ‘এই কাজ আমাদের কোনো শিক্ষার্থী করতে পারে না। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। বিভাগের ২ শতাংশ শিক্ষার্থীরও যদি আমার প্রতি অসন্তোষ থাকে, আমি সব ছেড়ে দেবো। প্রতিটি মিডটার্মের পর আমি খাতা শিক্ষার্থীদের দেখাই। অন্য শিক্ষকদের ব্যাপারে শিক্ষার্থীরা আমাকে অভিযোগ দেওয়ায় তারা (শিক্ষকরা) আমার নামে মিথ্যাচার করছে।’

এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলে ফিরতি বার্তায় লিখেন, একটি বেনামি চিঠি পেয়েছেন তিনি। সেখানে কেউ স্বাক্ষর করলে কিংবা তার সঙ্গে দেখা করে ঘটনার বর্ণনা দিলে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিতেন।

‘শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার ফলাফলে প্রভাব পড়ার ভয়ে পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি’ উপাচার্যকে এই বার্তা পাঠানো হলে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো জবাব দেননি তিনি।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর