ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) প্রথমবর্ষ থেকে শতভাগ আবাসনের দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে প্রতীকী অনশনে বসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল নারী শিক্ষার্থী। তারা দাবি জানিয়েছেন, স্থায়ী আবাসন নির্মাণের পূর্ব পর্যন্ত তাদের জন্য ‘অস্থায়ী আবাসন’ এর ব্যবস্থা করতে হবে।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা। বিকাল ৫টা পর্যন্ত তারা অনশন করবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বিজ্ঞাপন
দুপুর দেড়টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। অথচ ছাত্রদের জন্য ১৩টি আর ছাত্রীদের জন্য মাত্র পাঁচটি হল আছে। একটা মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে তাকে চিন্তা করতে হয় কোথায় থাকবে? কীভাবে থাকবে? এমনটা কেন? আমরা এই সমস্যার দ্রুত সমাধান চাই। কোনো আশ্বাস নয়, দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে চাই। যদি তা না হয়, আরও বড় কর্মসূচিতে যেতে আমরা বাধ্য হব।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের আবাসন সংকট নিরসনের লক্ষ্যে একটি ছাত্রী হল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চীন সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় ২৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রস্তাবিত বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী হল নির্মাণ প্রকল্পটি বর্তমানে মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আমরা আশা করছি দ্রুত কাজ শুরু হবে। আমরা ছাত্রীদের শতভাগ আবাসন নিশ্চিতের চেষ্টা করছি।
শিক্ষার্থীদের সাত দাবি
১. প্রথম বর্ষেই শতভাগ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
২. অবিলম্বে গণরুম বিলুপ্ত করা। অমানবিক ও অস্বাস্থ্যকর গণরুম–প্রথা তুলে নিয়ে পর্যাপ্ত আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. নতুন ছাত্রী হল চালু না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রীদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানাধীন ভবনে বা ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিল্ডিং ভাড়া নিয়ে ছাত্রীদের অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে দ্রুত প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি প্রদান ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার ঘোষণা দিতে হবে।
৪. ছাত্রীদের নতুন হল বাধ্যতামূলকভাবে মূল ক্যাম্পাসের ভেতরেই নির্মাণ করা এবং দ্রুত নির্মাণকাজ দৃশ্যমান করতে হবে।
৫. অনতিবিলম্বে অনাবাসিক ছাত্রীদের হলে প্রবেশের সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক ছাত্রীদের হল কার্ড জমাদানপূর্বক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত যেকোনো হলে প্রবেশ এবং ডাইনিংসহ অন্যান্য সুবিধা গ্রহণের অনুমতি দিতে হবে।
৬. ক্রমান্বয়ে প্রতিটি হলে ডাবলিং ব্যবস্থা তুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসনের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৭. নতুন ভবনে স্থানান্তরের মাধ্যমে মৈত্রী এবং বঙ্গমাতা হলকে ধারাবাহিকভাবে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করতে হবে।
আরএ/এফএ