শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৫, ঢাকা

ঢাবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন নিয়ে জটিলতা!

রুদ্র আসাদ, ঢাবি
প্রকাশিত: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৭ পিএম

শেয়ার করুন:

ঢাবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন নিয়ে জটিলতা!
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন সাধারণত প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তবে এবার ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ চলে যাওয়ার পরও নির্বাচনী কোনো রেশ চোখে পড়ছে না। কবে হবে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন, কে করবে আয়োজন, সে সব প্রশ্নের উত্তরও মিলছে না।

শিক্ষক সমিতির গত নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। ফলে প্রায় খালি মাঠে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেন আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল নীলদলের নেতারা। সেই নির্বাচনে সভাপতি নির্বাচিত হন নিজামুল হক ভূইয়া এবং সাধারণ সম্পাদক হন জিন্নাত হুদা।


বিজ্ঞাপন


শিক্ষক সমিতির নির্বাচন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, সাধারণত বছরের এই সময় শিক্ষক সমিতি নির্বাচন হয়ে থাকে। পূর্ববর্তী কমিটি নির্বাচনের আয়োজন করে। গত নির্বাচনে আমরা অংশগ্রহণ করিনি, ফলে আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকরা নিজেরা নিজেরাই নির্বাচন করেন। এই ধরনের একটি অনির্বাচিত কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্বকারী শিক্ষক সমিতির নির্বাচন আয়োজন করার কোনো নৈতিক অধিকার রাখে না।

আন্দোলনের সময় আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের ভূমিকা টেনে তিনি বলেন, এই কমিটি আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণকে কী নির্লজ্জভাবে বৈধতা দিয়েছে তা জাতি দেখেছে। এমনকি আন্দোলনের একেবারে শেষ মুহূর্তেও তারা গণবিরোধী অবস্থান নিয়েছে।

২০২৫ সালের শিক্ষক সমিতির নির্বাচন হওয়া না হওয়া বিষয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হোক কিংবা সাদা দলের উদ্যোগে হোক, নির্বাচন তো হতে হবে। এ বছর না হলেও গণতান্ত্রিকতা রক্ষায় এক সময় তো নির্বাচন হবেই। কিন্তু দেশের সার্বিক পরিবেশ পরিস্থিতি, সংস্কার প্রস্তাবনা, শিক্ষার্থীদের ডাকসু নির্বাচনসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে আমার মনে হয় না যে, এখন এই নির্বাচন হওয়ার কোনো উপযুক্ততা আছে।

আরও পড়ুন

ডাকসু নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় জানালো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

ঢাবি’র সিন্ডিকেট থেকে বাদ যাচ্ছেন ৫ জন সদস্য

শিক্ষক সমিতির নির্বাচন পদ্ধতি বিষয়ে তিনি বলেন, আমি তো গত ২০ বছর যাবত শিক্ষক সমিতিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। সব সময় প্যানেলভিত্তিক নির্বাচন এখানে হয়েছে। কোনো না কোনো প্যানেল সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে জয়ী হয়েছে। তবে প্যানেল দিতে হবে এমন কোনো কথা নেই। নির্ধারিত পদ সংখ্যার চাইতে একজনও যদি অতিরিক্ত প্রার্থী পাওয়া যায় তবে নির্বাচন হতে পারে।

এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা নীল দলের শিক্ষকরা যদি নির্বাচনে আসতে চান কিংবা স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করতে চান সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি কেমন হতে পারে, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নীল দল কোন কোন শিক্ষক করতেন এবং কোন কোন শিক্ষক গণবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন, এটা শিক্ষার্থীরা জানে। তাই আমার ধারণা, শিক্ষার্থীরা এবার তাদের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেবে। তা স্বতন্ত্রই হোক আর প্যানেলভিত্তিকই হোক। তবে আমিও শিক্ষক, আমি চাই না আমাদের কোনো নির্বাচনে কিংবা আমাদের কোনো বিষয়ে শিক্ষার্থীরা ইন্টারফেয়ার করুক। কিন্তু তারা যে পরিমাণ গণবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন, এখন শিক্ষার্থীরা যদি বাধা দেয় তাহলেও তো কিছু বলার উপায় নেই।

বর্তমান কমিটি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন নিয়ে ভাবছে কি না সে প্রশ্নের জবাবে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিন্নাত হুদা ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘একটাই কথা বলব, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমরা এ বিষয় নিয়ে তেমন কিছু আর ভাবছি না।’

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়াকে মোবাইলফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

আরএ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর