কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া, জামায়াত-শিবির বলে সম্বোধন ও মামলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আ ক ম জামাল উদ্দীনেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন একই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিনাত হুদার পদত্যাগ চেয়েছেন তারা।
সোমবার (১৯ আগস্ট) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন বরারর আ ক ম জামাল উদ্দীনেকে বহিষ্কার, অধ্যাপক জিনাত হুদার পদত্যাগসহ চার দফা সংবলিত স্মারকলিপি দেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। চার দফা দাবি পূরণে আগামী ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন তারা।
বিজ্ঞাপন
চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
১. শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য, হামলা-মামলার ভয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় হুমকি এবং শিক্ষার্থীদের ফলাফল খারাপ করানোর হুমকি প্রদানসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত থাকায় সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অধ্যাপক আ ক ম জামাল উদ্দীনকে স্থানীভাবে বহিষ্কার এবং মিড টার্ম ও ফাইনাল খাতা পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে
২. অধ্যাপক জিনাত হুদা বিভাগের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায়, ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাহুলকে বিনা অপরাধে গ্রেফতার, এরপর তাকে জানানো হলেও কার্যত কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া এবং আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে ১৩-১৭ ব্যাচ তার কোনো কোর্সের ক্লাস করবে না।
৩. অধ্যাপক সাদেকা হালিম ও অধ্যাপক মশিউর রহমানসহ ইতোমধ্যে ব্যর্থতার দায়ে পদত্যাগকারী শিক্ষকরা যেন বিভাগে ফিরে না আসেন তা নিশ্চিত করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
৪. শিক্ষার্থীদের হিজাব, নেকাব, বোরকা, পাঞ্জাবি পরিধানে ও ধর্মীয় লেবাস থাকায় আপত্তিকর মন্তব্যকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব দাবি মেনে নিতে হবে, অন্যথায় বিভাগ ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তারা।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৬ ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অধ্যাপক জামাল উদ্দিন স্যার কোটা আন্দোলনের শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন হুমকি দিয়েছিলেন। এমনকি মামলা দেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন তিনি। পরীক্ষার খাতায় মার্কস নিয়েও ঝামেলা করেছেন তিনি। কোটা আন্দোলনের যুক্ত হওয়ার অভিযোগে সমাজবিজ্ঞান ডিবেটিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ১৪ ব্যাচের মোশারফ হোসেন ভাইয়ের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক অব্যাহতি দিয়েছেন। আমরা সমাজবিজ্ঞান শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার স্বার্থে তার পদত্যাগ চাই।’
ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘কোটা আন্দোলনে বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাহুলকে বিনা অপরাধে গ্রেফতারের পর জিনাত হুদা ম্যামকে বারংবার জানানো হলেও কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেননি। বরং শিক্ষক সমিতির প্রোগ্রামে কোটা আন্দোলনের বিরুদ্ধে বলেছেন। আমরা ডিন মহোদয় ও চেয়ারম্যান অফিসে স্মারকলিপি দিয়েছি। অবিলম্বে জামাল স্যারকে বহিষ্কার ও জিনাত হুদা ম্যামকে তার পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে, নতুবা বিভাগ ঘেরাও কর্মসূচিসহ কঠোর কর্মসূচিতে যাবে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা।’
আরএ/জেবি
