শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

চালের বাজারে থামছে না চালবাজি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৮:৫৮ পিএম

শেয়ার করুন:

চালের বাজারে থামছে না চালবাজি
ফাইল ছবি

চাল কিনতে গিয়ে হতবাক শাহাবুদ্দিন। তিনি জানান, গত শুক্রবার ৫৮ টাকা কেজি দরে যে চাল কিনেছেন, আজ (মঙ্গলবার) তা ৬২ টাকা।

আসবাবপত্রের দোকানে মিস্ত্রির কাজ করেন শাহাবুদ্দিন। দৈনিক হাজিরা পান ৭৫০ টাকা। সাতজনের সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী তিনিই। এই টাকা দিয়ে তার সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়।


বিজ্ঞাপন


ঢাকা মেইলকে শাহাবুদ্দিন বলেন, 'আমি শুক্রবার ৫৮ টাকা কেজি কিনছি। তিন দিনে কেজিতে চাইর টাকা বাইরা গেল!'

মঙ্গলবার রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তিন দিনের ব্যবধানে কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে চিকন চালের দাম। গত শুক্রবার ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া মিনিকেট চাল এখন ৮০ টাকা।

মাঝারি আকারের আটাশ চাল বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। আর মহল্লার মুদি দোকানে একই চাল কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৬২ টাকা।


বিজ্ঞাপন


গরিবের চাল হিসেবে পরিচিত মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা কেজি দরে।

ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, গত কয়েক মাস ধরে চালের বাজারে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে তা কোনোভাবেই থামছে না। সরকারের নানা উদ্যোগেও তেমন প্রভাব পড়ছে না বাজারে। পাইকারি বাজারে প্রতিদিনই বস্তা প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা বাড়ছে চালের দাম। খুচরা বাজারে কেজি প্রতি বাড়ানো হচ্ছে এক থেকে দুই টাকা।

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের পাইকারি চাল বিক্রেতা মোশাররফ হোসেন ঢাকা মেইলকে জানান, ঢাকার বাইরের 'রাইস মিল' থেকে একদিন পরপর চাল আসে। প্রতিবারই বস্তা প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়ে৷

এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'গাড়ি ভাড়া বেশি, বৃষ্টি অনেক কারণ আছে।'

আরও পড়ুন:  মূল্যবৃদ্ধিতে অসন্তোষ, কারখানায় হানা দেবেন ভোক্তার কর্মকর্তারা

পাইকারি বাজারে দাম বেশি হওয়ার কারণ দেখিয়ে দাম বাড়ানো হয় খুচরা বাজারেও৷ কৃষি মার্কেটের খুচরা ও পাইকারি চাল বাজারের দূরত্ব প্রায় তিনশ মিটার। এরমধ্যে কেজি প্রতি দামের পার্থক্য প্রায় পাঁচ টাকা।

পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাইকারি বাজারে যে হারে দাম বাড়ে, তার দ্বিগুণ হারে দাম বাড়ানো হয় খুচরা বাজারে।

নগরীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, গাবতলী, শংকর, কলাবাগান এলাকার বিভিন্ন মুদি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের চাইতে কেজিতে আরও দুই থেকে তিন টাকা বেশি। অর্থাৎ পাইকারি বাজারের সঙ্গে মহল্লার মুদি দোকানে এক কেজি চালের দামের পার্থক্য ছয় থেকে আট টাকা।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার আগ্রহী বাজার দরের এমন অবস্থা তৈরি করছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, 'চাল তো এমন জিনিস না যে, এটা না হলেও চলবে। ভোক্তা প্রতিবাদ করে না, তাই কিছু ব্যবসায়ীর অতি মুনাফার আগ্রহ এমন অবস্থা তৈরি করেছে। এ কারণে পাইকার-ডিলার পর্যায়ের সঙ্গে খুচরা বাজারের অনেক পার্থক্য থাকে।'

এ ক্ষেত্রে করণীয় কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'সরকার ভোক্তা অধিকার দিয়ে কিছু কাজ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু অন্য পন্থায় সরকার যদি বাজারে চালের সরবরাহ বাড়াতে পারে, তাহলে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের সুযোগ আছে।'

কারই/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর