এলডিসি গ্রাজুয়েশন, শ্রম আইন সংশোধনসহ ব্যবসায় খাতে নানা সমস্যার বিষয় নিয়ে জামায়াত আমিরের পর এবার বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন ব্যবসায়ী নেতারা। বৈঠক শেষে তারা জানিয়েছেন, ব্যবসা খাতে তাদের বড় উদ্বেগের কথা বিএনপির নেতৃত্বকে তারা বলেছেন।
রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিকাল ৫টা থেকে দেড় ঘণ্টা এই বৈঠক হয়। বৈঠকে এলডিসি গ্রাজুয়েশন, শ্রম আইন সংশোধনসহ ব্যবসায় খাতে নানা সমস্যার বিষয়াদি নিয়ে ব্যবসায়ী নেতারা আলোচনা করেছেন।
বিজ্ঞাপন
বৈঠক শেষে বিজেএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, “আমরা বিজনেস কমিউনিটির যারা শিল্প পরিচালনা দায়িত্বে আছি, ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি, আমরা আজকে আলোচনা করেছি। আমাদের অনেকগুলা বিজনেস কনসার্ন আছে। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় কনসার্ন হচ্ছে এলডিসি গ্রাজুয়েশনের ডেফারমেন্ট নিয়ে কথাবার্তা বলা, আরেক হচ্ছে লেবার ল ‘অ্যামেন্ডমেন্ট’।”
বিজেএমইএ’র সভাপতি বলেন, “লেবার ‘ল এ্যামেন্ডমেন্ট করতে আমাদের কোনো আপত্তি নাই। আপনারা জেনে থাকবেন, ১২৪টা পয়েন্ট নিয়ে টিসিসিতে আলোচনা হয়েছে… ১২৪টা পয়েন্টের মধ্যে আমরা ১২২টা পয়েন্টে একমত হয়েছি। যে দুইটা পয়েন্টে আমরা একমত হতে পারিনি এটার বাস্তব সম্মত কারণ আছে।”
কারণ ব্যাখ্যা করে মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘‘২০ জন শ্রমিক আবেদন করলেই ট্রেড ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই মুহর্তে যেটা আছে শতকরা ২০ জন। একটা শিল্পে যদি ৫ হাজার লোক থাকে, ৩ হাজার লোক থাকে, ১০ হাজারের উপরে লোক আছে এমন শিল্পও আছে আমাদের। সেখানে মাত্র ২০ জনের ট্রেড ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দেওয়া হয় এবং একটা শিল্পে সর্বোচ্চ পাঁচটা রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দেওয়া হয় তাহলে শিল্প টিকবে না। এটা আমাদের একেবারে রুট লেভেলের বাস্তবসম্মত অভিজ্ঞতা।”
ব্যবসায়ীদের এই নেতা বলেন, “যারা শ্রমের অধিকার নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেন তারা পিছিয়ে যাবেন ২০ জন করে ট্রেড রেজিস্ট্রেশন দিলে। তাতে করে দেখা যাবে যারা জুট ব্যবসা করেন, যাদের ইল মোটিভ আছে, বাড়িওয়ালা যেখানে ২০ জন ৫০ জন শ্রমিক ওখানে রাত্রে বসবাস করেন তারা ট্রেড লাইনের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে নিবে এবং রাতারাতি ব্যাঙের ছাতার মত হাজার হাজার ট্রেড রেজিস্ট্রেশন পেয়ে যাবেন।”
বিজেএমইএ সভাপতি বলেন, “এই বিষয়টা আমাদের বিগেস্ট কনসার্ন...আমরা সম্মানিত বিএনপি মহাসচিব উনি ইউএন যাচ্ছেন… সেখানে প্রধান উপদেষ্টাও যাচ্ছেন। যেহেতু উনি (মহাসচিব) কথা বলার সুযোগ পাবেন উনার মাধ্যমে আমরা এই বার্তাটা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।”
মাহমুদ হাসান খান বলেন, “এলডিসি গ্রাজুয়েশন আমরা প্রোসপোন্ড করতে চাই না, আমরা ডেফারমেন্ট চাই…সেটাও বলেছি নির্দিষ্ট মাত্র তিন বছরের জন্য। এই তিন বছর ডেফারমেন্টের এজন্য লাগবে যে, আমরা এখনো প্রস্তুত না। এর মধ্যে একটা আছে ফলসিফাই ডাটা যে ডাটা ডাটার ভিত্তিতে করা হয়েছিল। আমাদের ইনফ্রাস্ট্রাকচার এখনো রেডি না। এই বিষয়গুলো আমরা আমাদের বিএনপির নেতৃত্বকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি। আশা করি, উনারা বর্তমান সরকারকে এটা বুঝাতে সক্ষম হবেন।”
বৈঠকে বিজেএমইএ সভাপতি ছাড়াও মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান, সাবেক সভাপতি তপন চৌধুরী ও নাসিম মনজুর, এফবিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি একে আজাদ, প্রাণ গ্রুপের প্রধান আহসান খান চৌধুরী, বিকেএমইএ সভাপতি এম এ হাতেম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন(বিইএফ) সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, বিজেএমইএ‘র মহাসচিব রশিদ আহমেদ হোসাইনী, ঢাকা চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির(ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ প্রমুখ অংশ নেন।
বিএনপির পক্ষ থেকে ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধরী প্রমুখ।
বিইউ/ক.ম

