সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

পাদুকা শিল্পে ভ্যাট আরোপে ঝুঁকিতে দেশি পণ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৭ জুন ২০২৫, ০২:৪০ পিএম

শেয়ার করুন:

paduka
ডিআরইউতে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সংগৃহীত

২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে পাদুকা শিল্পের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট বহাল রাখায় ধস নেমেছে দেশের ক্ষুদ্র পাদুকা শিল্পে। উচ্চ ভ্যাটের প্রভাবে বিদেশি পণ্য আমদানি বেড়েছে। এতে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় হওয়ার পাশাপাশি দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন। এজন্য ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতি।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ পাদুকা প্রস্তুতকারক সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান। পরে ডিআরইউ ভবনের সামনে মানববন্ধনও করেন উদ্যোক্তারা।


বিজ্ঞাপন


মানববন্ধনে সমিতির নেতারা জানান, পণ্যের মূসক অব্যাহতি প্রত্যাহার করে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের ফলে ইতোমধ্যে বিদেশি পণ্য (সমজাতীয় চপ্পল ও পাদুকা) আমদানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে এ খাতে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় হওয়ার পাশাপাশি দেশের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মাধ্যমে গড়ে ওঠা ক্রম-বিকাশমান এই শিল্প টিকিয়ে রাখা আজ হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।

সমিতির আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মো. তাইফুল সিরাজ বলেন, প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি হাওয়াই চপ্পল এবং পাদুকার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করার প্রস্তাব অত্যন্ত অযৌক্তিক। এটি কার্যকর হলে এই সাশ্রয়ী পণ্য সাধারণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। বিশেষত শ্রমজীবী, হকার, দিনমজুর, কৃষক, রিকশা-ভ্যান চালক এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রায় এর বিরূপ প্রভাব পড়বে। ভ্যাট অব্যাহতির ফলে সরাসরি পণ্যের উৎপাদন খরচ উল্ল্যেখযোগ্য হারে কমে গিয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় নিম্ন আয়ের ক্রেতা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতা বিবেচনায় এতো উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও দেড়শ টাকা মূল্যের রাবার ও প্লাস্টিকের চপ্পল সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে।

Paduka2

ব্যবসায়ী নেতা বলেন, এই কম উৎপাদন খরচের সুবিধা সরাসরি ভোক্তাদের কাছে পৌঁছেছিল, যার মাধ্যমে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষ সাশ্রয়ী দামে প্রয়োজনীয় হাওয়াই চপ্পল ও পাদুকা কিনতে পেরেছেন। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য এই পণ্যগুলো অত্যাবশ্যকীয়, কারণ এগুলো ছিল তাদের জন্য সবচেয়ে সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য পাদুকা।


বিজ্ঞাপন


তিনি আরও বলেন, বিগত ২০১৬ সালে প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি পাদুকার ওপর মূসক অব্যহতি প্রদান করা হয়। কিন্তু চলতি অর্থ বছরের মাঝপথে এসে গত ৯ জানুয়ারি জারি করা এসআরও এর মাধ্যমে বিদ্যমান মূল্য সংযোজন কর অব্যহতি সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়। যার ধারাবাহিকতায়, প্রস্তাবিত ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেটে মূসক আরোপ করা হয়েছে।

সংগঠনটি সরকারের কাছে অতিসত্বর ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। দাবি পূরণ না হলে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট এবং চূড়ান্তভাবে কারখানা বন্ধের মতো কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবে তারা।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ ফজলু, অফিস সচিব মো. ইমরুল কায়েসসহ উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যসহ অন্যান্য নেতারা এবং বিভিন্ন পাদুকা প্রতিষ্ঠানের মালিক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা।

এমআর/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর