দেশে চলতি অর্থবছরের (জুলাই-এপ্রিল) প্রথম ১০ মাসে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৫৪ কোটি মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি। এই রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স প্রবাহে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্যে দেখা যায়, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে প্রবাসীরা মোট ২৭৫ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকে এসেছে ৪৯ কোটি ১৪ লাখ ডলার, যা মাসিক রেমিট্যান্সের ১৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছে ৩৭ কোটি ২১ লাখ ডলার, আর তৃতীয় স্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ৩৩ কোটি ডলার।
বিজ্ঞাপন
চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাজ্য (২৯ কোটি ৪১ লাখ ডলার) এবং মালয়েশিয়া (২১ কোটি ৯ লাখ ডলার)। শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় আরও রয়েছে কুয়েত, ইতালি, ওমান, সিঙ্গাপুর ও কাতার।
দেশের ইতিহাসে একক মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে ২০২৪ সালের মার্চে— ৩৩০ কোটি ডলার। ওই সময় শীর্ষে ছিল যুক্তরাষ্ট্র (৫৪ কোটি ৬১ লাখ ডলার), দ্বিতীয় সংযুক্ত আরব আমিরাত (৫০ কোটি ৮৩ লাখ) এবং তৃতীয় সৌদি আরব (৪৪ কোটি ৮৪ লাখ)। মার্চ পর্যন্ত হিসাবেও সৌদি আরব শীর্ষে ছিল না; তবে এপ্রিল থেকে তারা আবার রেমিট্যান্সে শীর্ষ অবস্থানে ফিরে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রবাসী আয় সাধারণত দুই মাধ্যমে আসে—ব্যাংক ও এক্সচেঞ্জ হাউস। অধিকাংশ রেমিট্যান্স আসে এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে। এসব হাউসের বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিবন্ধিত। ফলে প্রবাসীরা বিশ্বের যেকোনো দেশ থেকে অর্থ পাঠালেও ক্লিয়ারিং হয় সেসব হাউসের নিবন্ধিত দেশ থেকেই। ফলে ভুলভাবে ওই দেশগুলোকেই রেমিট্যান্স প্রেরক হিসেবে দেখানো হতো।
এর ফলে প্রকৃত প্রেরণকারী দেশ হিসেবে সৌদি আরবের ভূমিকা আড়ালে পড়ে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি নজরে এনে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে—রেমিট্যান্স যে দেশ থেকে এসেছে, সেটি সঠিকভাবে চিহ্নিত করে রিপোর্ট করতে। এতে করে পরিসংখ্যানে বাস্তব চিত্র প্রতিফলিত হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত সৌদি আরব প্রতিনিয়ত শীর্ষ রেমিট্যান্স-প্রেরক দেশ ছিল। কিন্তু এরপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র, আমিরাত ও যুক্তরাজ্য একাধিক মাসে শীর্ষ অবস্থান দখল করে। তবু সমগ্র অর্থবছর বিবেচনায় সৌদি আরবই সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠানো দেশ হিসেবে ছিল শীর্ষে।
টিএই/এমএইচটি