মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪, ঢাকা

ঈদে রেমিট্যান্সে ভাটা, সোয়াপেও রিজার্ভের পতন

মুহা. তারিক আবেদীন ইমন
প্রকাশিত: ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪১ পিএম

শেয়ার করুন:

ঈদে রেমিট্যান্সে ভাটা, সোয়াপেও রিজার্ভের পতন
ঢাকা মেইল

দীর্ঘদিন ধরেই দেশে ডলার সংকট চলছে। সাধারণত ঈদের আগের বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। কিন্তু এবারের চিত্র উল্টো। একই অবস্থা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না এর নিম্নমুখিতা। রিজার্ভের পতন ঠেকাতে সম্প্রতি কারেন্সি সোয়াপ চালু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে রিজার্ভে বেশকিছু ডলার যুক্ত হলেও সূচক থেকেছে নিম্নমুখী। 

অর্থনীতিবিদরা বলছেন— সোয়াপ করে সমায়িক কৃত্রিমভাবে ডলার সংকট মোকাবিলা করা গেলেও তা স্থায়ী সমাধান নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, যে হারে আমদানির দায় পরিশোধ করা হচ্ছে সেই হারে রেমিট্যান্স-রফতানি আয় আসছে না। এতে আমদানির চাহিদা অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রা না থাকায় বাজারে ডলার বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে।


বিজ্ঞাপন


বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গেল ৪ এপ্রিল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল দুই হাজার ৫২৯ কোটি ডলার। বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ১ হাজার ৯৯৬ কোটি ডলার। গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে রিজার্ভ ১৯ বিলিয়নের ঘরেই অবস্থান করছে। গত মার্চ মাসের শুরু বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৬৩৪ কোটি মার্কিন ডলার। গত ২৭ মার্চ এই রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৮১ কোটি ডলারে। বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ নেমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৪৫ কোটি ডলারে। যা ৬ মার্চ ছিল ২ হাজার ১১৫ কোটি ডলারে। অর্থাৎ মার্চ মাসের শেষে ২১ দিনে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ১৫২ কোটি ডলার (১ দশমিক ৫২ বিলিয়ন) এবং  বিপিএম-৬ কমেছে ১৬৯ কোটি ডলার (১ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন)। 

২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী ছিল ২৩ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার। তবে বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব আছে, যা শুধু আইএমএফকে (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) দেওয়া হয়। প্রকাশ করা হয় না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের ব্যবহারযোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৫ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। প্রতি মাসে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার হিসাবে এই রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে কষ্টসাধ্য হবে বাংলাদেশের জন্য।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী— ১০ বছর আগে ২০১৩ সালের জুন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল মাত্র ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। পাঁচ বছর আগে ছিল ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে বেড়ে ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলারের ঘরে পৌঁছায়। ওই বছর ৮ অক্টোবর ৪০ বিলিয়ন ডলারের নতুন মাইলফলক অতিক্রম করে। এরপর তা বেড়ে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশের রিজার্ভ রেকর্ড গড়ে ২০২১ সালের ২৪ আগস্ট। ওইদিন রিজার্ভ ৪৮ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার বা ৪ হাজার ৮০৪ কোটি ডলারে উঠে যায়। এরপর ডলার সংকটে গত বছর থেকে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে।


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন
ঈদের আগে কমেছে প্রবাসী আয়

প্রতিবেদনের বলছে, গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলার। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ছিল ২৫ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার। ২০১৫-১৬ তে ৩০ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩৩ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ৩২ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ৩৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন। ২০২০-২১ অর্থবছরে রিজার্ভ ছিল ৪৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪১ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার এবং সব শেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩১ বিলিয়ন ডলার।

সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশ এখন শেষ প্রান্তে রয়েছে। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হলো বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান— সংকটের কারণে রিজার্ভ থেকে বাজারে প্রচুর ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও গতমাসে আকুর বিলও পরিশোধ হয়েছে। রফতানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কম এসব কারণেই মূলত রিজার্ভ কমছে। মূলত প্রবাসী আয়, রফতানি আয়, বিদেশি বিনিয়োগ, বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ থেকে যে ডলার পাওয়া যায় তা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরি হয়। আবার আমদানি ব্যয়, ঋণের সুদ বা কিস্তি পরিশোধ, বিদেশি কর্মীদের বেতন-ভাতা, পর্যটক বা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ বিভিন্ন খাতে যে ব্যয় হয়ে থাকে, তার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা চলে যায়। এভাবে আয় ও ব্যয়ের পর যে ডলার থেকে যায় সেটাই রিজার্ভে যুক্ত হয়। আর বেশি খরচ হলে রিজার্ভ কমে যায়।

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি ও বিভিন্ন পণ্যের দাম বেশি থাকায় আমদানি ব্যয় কমেনি। এছাড়া করোনার পর বৈশ্বিক বাণিজ্য আগের অবস্থায় ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত বছরের মার্চ থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে; যা এখনো অব্যাহত আছে। এই সংকট দিন দিন বাড়ছে। বাজারে ‘স্থিতিশীলতা’ আনতে রিজার্ভ থেকে নিয়মিত ডলার বিক্রি করে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে ধারাবাহিকভাবে কমছে অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এই সূচকটি কমছে।

এছাড়াও বাজারে ডলার সংকট কাটাতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ থেকে ধারাবাহিক ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সময়ে বাণিজ্যিক কিছু ব্যাংক থেকে ১ বিলিয়ন ডলারের মতো কিনে বাংলাদেশ ব্যাংক, যার পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলারের মতো। এর আগে গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল। আর আগের অর্থবছরে (২০২১-২২) ডলার বিক্রি করেছিল ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।

আরও পড়ুন
মার্চে বেড়েছে রফতানি আয়

এদিকে প্রতিবছর ঈদের সময় বেশি বেশি রেমিট্যান্স এলেও এ বছর ঈদুল ফিতরের আগে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে প্রবাসী আয়ে। সদ্য সমাপ্ত মার্চ মাসে বৈধ বা ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধ‌রে) যার পরিমাণ ২১ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী— মার্চে আসা প্রবাসী আয় তার আগের মাস ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ কোটি ৭৭ লাখ ডলার বা ৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ কম। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসী আয় ছিল ২১৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। এছাড়া মার্চে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স কমেছে ২ কোটি ৫৬ লাখ ডলার বা ১ দশমিক ২৭ শতাংশ। গত বছরের মার্চে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০২ কোটি ২৪ লাখ মার্কিন ডলার। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ মার্কিন ডলার (১৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন)। তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৬ কোটি ১৭ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৬৯ কোটি ১৭ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৮১ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।

অন্যদিকে রিজার্ভের পতন ঠেকাতে সম্প্রতি বাণিজ্যিক ব্যাংগুলোর সঙ্গে কারেন্সি সোয়াপ (টাকার ও ডলার অদলবদল) পদ্ধতি চালু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মাধ্যমে ডলার সংগ্রহ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি চালু হওয়ার পর থেকে প্রায় ১৭৫ কোটি (১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন) ডলার রেখে প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকার বেশি তারল্য সহায়তা নিয়েছে সংকটে থাকা কয়েকটি ব্যাংক। জমা রাখা ডলার বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভে যোগ হচ্ছে। এর মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়াতে চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সাধারণত এক ব্যাংক আরেক ব্যাংকের সঙ্গে কারেন্সি সোয়াপ করতে পারে। তবে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গেও সোয়াপ চালু হয়। এ উপায়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে টাকা বা ডলার রেখে ৭ থেকে ৯০ দিনের জন্য বিপরীত মুদ্রা নিতে পারে ব্যাংক। যে মুদ্রা নেওয়া হয়, নির্ধারিত মেয়াদ শেষে সুদসহ সে মুদ্রা ফেরত দিতে হয়। সোয়াপের ক্ষেত্রে সুদহারের হিসাব হয় রেপো এবং ডলারের তিন মাস মেয়াদি বেঞ্চমার্ক রেট এসওএফআরের মধ্যকার পার্থক্যের ভিত্তিতে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন— ডলার এক্সচেঞ্জ রেট বেঁধে দেওয়ার কারণে মানুষ যেখানে লাভ পাচ্ছে সেখানে ঝুঁকছে বেশি। ফলে কমছে বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ। 

আরও পড়ুন
‘অর্থনৈতিক সংকট কেটে গেছে, আর কোনো দ্বিধা নেই’

ড. জাহিদ হোসেন একজন অর্থনীতিবিদ। বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ মিশনের সাবেক এই প্রধান অর্থনীতিবিদ ঢাকা মেইলকে বলেন, বর্তমানে ডলারের যে সংকট চলছে, সেটা থেকে উত্তরণের জন্য নানা রকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেগুলো কোনোটাই কাজে দেয়নি। চলমান এই সংকট থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে আমার মতে যেটা বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এক্সচেঞ্জ রেটটা বেঁধে দেওয়া। যেখানে খোলা বাজারে বিক্রি করে ৫-৭ টাকা বেশি পাচ্ছে, তারা তো সেভাবেই পাঠানোর চেষ্টা করবে। যাদের কোনো গতি নেই তারা হয়তো তুলবে। কিন্তু যাদের অপশন আছে যে ইনফরমাল চ্যানেলের মাধ্যমে বিক্রি করলে ৫-১৭ টাকা বেশি পাওয়া যাবে, তারা তো সেভাবেই করবে। হুকুম দিয়ে বাজার দর নির্ধারণ করা, এটা থেকে যদি বেরিয়ে আসতে হবে।

তবে এই সংকট যেন ভবিষ্যতে আরও ঘনীভূত না হয় সে জন্য মধ্যমেয়াদি কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, কিছু মধ্যমেয়াদি কাজ করতে হবে। রফতানি আয় কীভাবে আরও বাড়ানো যায় সেই চেষ্টা করতে হবে। প্রবাসী আয় বাড়াতে হবে। এখন যে ডলারের রেট ফিক্সড করে দেওয়া হয়েছে, সেখানে আবার রেমিট্যান্সের অসুবিধা হচ্ছে। এখন যদি অন্যভাবে টাকা পাঠালে বেশি লাভ হয়, সেজন্য তারা অফিসিয়াল চ্যানেলে বেশি টাকা পাঠাচ্ছে না। 

এই অর্থনীতিবিদের মতে—স্কিলড লোক পাঠানোর চেষ্টা করতে হবে। তার কারণ হচ্ছে, আমাদের যেসব লোক দেশের বাইরে যায়, তারা বেশিরভাগই আনস্কিলড। কম বেতন পায়, কম রেমিট্যান্স পাঠায়। ইম্পোর্টের ক্ষেত্রে দেখতে হবে কিছু ইমপোর্ট রেস্ট্রিকশন করা যায় কি না। সেখানে তো আবার আমাদের বিভিন্ন ‘র’ ম্যাটেরিয়াল, এগুলোরই ইমপোর্ট বেশি। ইমপোর্ট কমালে তখন উৎপাদন ব্যাহত হবে, আবার কর্মসংস্থান ব্যাহত হবে। তবে বড় কথা হচ্ছে ডলারের রেট ফিক্সড করে দেওয়া থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচলক মেজবাউল হক বলেন, রেমিট্যান্স প্রবাহ স্বাভাবিকই আছে, প্রতিবছরই ঈদ উৎসবে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পায় এবারও বাড়ছে। আমাদের কোভিডের সময়ও রেমিট্যান্স গ্রোথ ভালো ছিল। কয়েক বছর ধরে গ্রোথ ভালো আছে। এখনও সেটা অব্যাহত আছে।  

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বেশকিছু বিষয়ে নির্দিষ্ট শর্ত দিয়ে বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে চলতি বছরের জানুয়ারির শেষে দিকে। এই ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ও ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। ঋণ দেওয়ার সময় আর্থিক খাতে নানা সংস্কারের পাশাপাশি বেশকিছু শর্তও জুড়ে দেয় আইএমএফ। শর্ত অনুযায়ী গত জুন শেষে নিট রিজার্ভ থাকার কথা ছিল ২ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলার। কিন্তু ওই সময় তা ছিল ২ হাজার ৪৭ কোটি ডলার। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সংস্থাটিকে জানানো হয়, সংসদ নির্বাচনের পর রিজার্ভ ও রাজস্ব আয় অর্জনের শর্ত পূরণ সম্ভব হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আইএমএফ রিজার্ভ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে শর্ত কিছুটা শিথিল করে। আইএমএফের নতুন শর্ত অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে প্রকৃত রিজার্ভ রাখার কথা ১ হাজার ৭৭৮ কোটি ডলার। মার্চে তা ১ হাজার ৯২৬ কোটি ডলার ও জুনে ২ হাজার ১০ কোটি ডলারে উন্নীত করতে হবে। তবে এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান আর্থিক খাতসংশ্লিষ্টরা।

টিএই/এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর