‘সব কিছুরই দাম কমলেও এই পেঁয়াজের দামটা কমতাছে না। আলু আর এই পেঁয়াজ, সারা বছর ভোগাইল। অহনও ভোগাচ্ছে। আর কতদিন ভোগাবে কে জানে।’
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর মুগদা ঝিলপাড়ে বাজার করার সময় কথাগুলো বলছিলেন বেসরকারি শ্রমজীবী ফরহাদ। শুধু ফরহাদই নয়, রাজধানীর অধিকাংশ ক্রেতার অবস্থা এখন একই রকম। পেঁয়াজের ঝাঁজে চোখে জল সাধারণ মানুষের। আলু কিনতেও নাকাল হতে হয়।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশী জাতের পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা। ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা। কিছু নিম্ন মানের আধা পচা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকার মধ্যে।
এছাড়াও গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর মুগদা মেডিকেলের সামনে ফুটপাতে ভ্যানে করে এক পেঁয়াজ বিক্রেতা কিছু নিম্নমানের পেঁয়াজ ৮০ টাকা দাম হাঁক দিলে সাথে সাথেই তাকে ঘিরে ধরেন ক্রেতারা। এসময় পেঁয়াজ কিনতে আসা এক নারী ক্রেতা বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা চাচ্ছে। বাধ্য হয়ে এই এই পেঁয়াজ কিনছি। এইটা দিয়েই কয়েকদিন চলতে হবে। কবে পেঁয়াজের দাম কমবে কে জানে।’
বিজ্ঞাপন
>> আরও পড়ুন:
‘বাজারের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই’
‘আমার এলাকায় কষ্ট নেই, নারীরা তিনবার করে লিপস্টিক লাগাচ্ছে’
একই অবস্থা আলুর দামে। কখনও কিছুটা কমে আবারও বাড়ছে আলুর দাম। ৬০ টাকা থেকে নেমেছিল। আবারও তা ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও বাজারে উঠেছে নতুন আলু ও পাতাসহ পেঁয়াজ। নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। পাতাসহ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা কেজি।
বিক্রেতারা বলছেন, আর কিছুদিনের মধ্যেই স্বাভাবিক হবে আলু পেঁয়াজের দাম। মুগদা মদীনাবাগ বাজারের আলু ও পেঁয়াজ বিক্রেতা শহিদুল বলেন, ‘আগের থেকে কিছুটা দাম কমেছে। নতুন আলু পেঁয়াজ উঠতে শুরু করেছে। এখন নতুন নতুন তাই দাম বেশি। আর কয়ডা দিন গেলে দাম আগের মতো ২০-৩০ টাকায় চইলা আইবো।’
দফায় দফা দাম বেড়ে যাওয়ায় গত ১৪ সেপ্টেম্বর জরুরি তিনটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের আলোকে আলুর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩৫-৩৬ টাকা, দেশি পেঁয়াজের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৬৪-৬৫ টাকা আর ডিমের পিস সর্বোচ্চ ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
সরকার যেদিন দাম নির্ধারণ করে দেয় সেদিন থেকে উল্টো বাড়তে থাকে এসব পণ্যের দাম। ৬৫ টাকার পেঁয়াজ বর্তমানে বিক্রি হয় দ্বিগুণেরও বেশি দামে। আলুর দামও বাড়তে থাকে। তবে বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ডিমের দাম। দাম বেঁধে দেওয়ার পরেও সেই দাম কর্যকর না হওয়ার বাজার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়।
টিএই/এএস