দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতি ও সিন্ডিকেট দমনের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ‘জাতীয় জনতার জোট’। এতে ক্ষোভ জানিয়ে বাংলাদেশ জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি এবং জোটের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসাইন বলেন, দেশে বিভিন্ন ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। একবার যে পণ্যের দাম বাড়ে, তা আর কমে না।
শনিবার (১১ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান বক্তা দেলোয়ার হোসাইন বলেন, দেশে বিভিন্ন ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জনজীবনে অনেক দুর্ভোগ নেমে এসেছে। বাজারের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন অজুহাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিপদে ফেলছে। একবার যে পণ্যের দাম বাড়ে, তা আর কমে না। সরকারি বিভিন্ন সংস্থাগুলোর এ ব্যাপারে লোক দেখানো কাজ করলেও, তা তেমন কার্যকর ভূমিকা না রাখায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
মধ্যবিত্তের অস্তিত্ব হুমকির মুখে জানিয়ে তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বর্তমানে সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিসিবির ট্রাকের পেছনে এই বিশাল লাইন প্রমাণ করে, দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষরা সংসার চালাতে পারছে না। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তারা কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। স্বল্প আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জীবনধারণ ক্রমশ দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে। তাদের কাছে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি যেন নতুন এক অভিশাপের নাম। এভাবে চলতে থাকলে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে পড়বে।
জনতার জোটের চেয়ারম্যান বলেন, কোভিড মহামারির ধাক্কায় গত দুই আড়াই বছরের মধ্যে অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। বেতন-ভাতা বৃদ্ধি তো দূরের কথা বরং মালিকপক্ষ নানান অজুহাতে কর্মীদের বেতন-ভাতা কমিয়ে দিচ্ছে। কোথাও কোথাও কর্মী ছাঁটাই করছে। দ্রব্যমূল্য না কমলে এসব মানুষের অবস্থা কোনো পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়াবে, তা অনুমান করা খুব মুশকিল।
দেশ শ্রীলঙ্কা হওয়ার দিকে আগাচ্ছে বলে সতর্ক করে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতি চলতে থাকলে অতি দ্রুত আমাদের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে। বিশ্ব আরও একটা শ্রীলংকা দেখবে। সুতরাং সরকারকে এখনই যুগোপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। দেশ থেকে সকল সিন্ডিকেটের কালো হাত ভেঙ্গে চুরমার করে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি এসব দরিদ্র লোকের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। বর্তমানে অসংখ্য শিক্ষিত বেকার যুবক চাকরির জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের বেসরকারি খাতে সঠিক নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশ সর্বজনীন দলের চেয়ারম্যান মো. রাসেল কবিরের সভাপতিত্বে সমাবেশের অনান্য বক্তারা মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের অসৎ উদ্দেশ্যও নস্যাৎ করে বাজার নিয়ন্ত্রণের সামগ্রিক বিষয় সরকারের হাতে নিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উর্ধ্বগতি নিম্নগামী করার ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এমএইচ/এএস