রোববার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

খাবার ও পানির তীব্র সংকটে ভোলার মহিষ খামারিরা

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২২, ০৫:৫৩ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img
ছবি : ঢাকা মেইল

ভোলার তজুমদ্দিনে খাবার ও পানি সংকটে বিপাকে পড়েছে ছোট বড় মিলিয়ে অর্ধশতাধিক মহিষের খামারি। অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন সময় মারা যাচ্ছে মহিষ। প্রতিদিন মহিষের মৃত্যুর খবরে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মালিকরা। ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। এসব বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ প্রাণিসম্পদ দপ্তরের।

খামারিরা জানায়. উপজেলার চরাঞ্চলে অনেক বছর ধরে গড়ে উঠেছে মহিষের খামার। এসব খামার থেকে প্রধান আয়ের উৎস হচ্ছে দই। এছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় থেকে আসা বেপারির কাছে মহিষ বিক্রি করাও আয়ের একটি উৎস। দই বিক্রি করে ভালো আয় হওয়ায় বাড়ছে খামারির সংখ্যা। তবে চরাঞ্চলে খাদ্য ও মিষ্টি পানির তীব্র সংকটের সাথে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন রোগ-বালাই। খাদ্য ও মিষ্টি পানির সংকটে মহিষগুলো দুর্বল হয়ে যাওয়ায় রোগাক্রান্ত হওয়ায় পাশাপাশি দুধও কমে গেছে। চরাঞ্চলের খামারিদের একমাত্র পানির উৎস হচ্ছে মেঘনা নদী।


বিজ্ঞাপন


বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল, চার মাস নদীর পানিতে প্রচুর লবণাক্ততা থাকায় মিষ্টি পানি ও খাদ্যের চরম সংকট দেখা দেয়। বছরের এ সময়গুলো খামারিরা কৃত্রিমভাবে মিষ্টি পানির ব্যবস্থা করলেও মহিষের সংখ্যার তুলনায় তা একেবারেই অপ্রতুল। মহিষের সম্ভাবনাময় এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রয়োজন সরকারিভাবে চরে হাউজসহ গভীর নলকূপ স্থাপন করা। তা না হলে মহিষের এই সম্ভাবনাময় শিল্পটি ধ্বংস হয়ে পথে বসতে পারে বলে আশঙ্কা করছে এসব খামারিরা।

চরগুলোতে চর্ম ও বাতরোগে আক্রান্ত হচ্ছে মহিষ। উপজেলা থেকে চরগুলো দুরত্ব বেশি হওয়ায় যথা সময়ে চিকিৎসা দিতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। অন্যদিকে নদীর লবণ পানি পান করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে মহিষ। এতে পুঁজি হারিয়ে বিপাকে পড়ছেন খামারিরা।

এক সময় এ উপজেলায় ক্ষুরা রোগ মহিষ খামারিদের মাঝে আতঙ্ক ছড়ালেও বর্তমানে চরের সকল মহিষকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর বিনামূল্যে দুইবার রাশিয়ার টিকা প্রদান করছে। ফলে এখন চরের মহিষ খামারিরা সম্পূর্ণভাবে ক্ষুরা রোগ থেকে মুক্ত রয়েছেন।

এছাড়া মহিষ উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে মহিষ খামারিদেরকে ১ শ ২০ কেজি ভিটামিন মিনারেল পাউডার ও পর্যাপ্ত পরিমাণে বিনামূল্যে কৃমির ঔষধ সরবরাহ করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে।


বিজ্ঞাপন


এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহিষের খামারি নুর ইসলাম (বাবুল মাঝি) বলেন, চরে বছরে প্রায় ৬ মাস খাদ্যের তীব্র সংকট থাকে। খাদ্য সংকটের কারণে মহিষ শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে যাওয়ায় দুধ কমে যায়। অন্যদিকে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল চার মাস নদীর লবণ পানি পান করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেক মহিষ মারা যায়। এতে আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়।

সরকারের কাছে হাউজসহ একটি নলকূপ ও উন্নতজাতের ঘাস তৈরির ক্ষেত্র বানানোর দাবি জানান তিনি। 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ সরকার (পিএএ) বলেন, বর্তমান সময়ে নদীতে লবণপানি থাকায় মহিষের ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মহিষ মারা যায়।

এতে খামারিদের আতঙ্কিত না হয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সাথে চিকিৎসকদের সাথে পরামর্শ করতে আহ্বান করবো। অন্যদিকে নদীতে বছরের চার মাস লবণপানি থাকাকালীন মিষ্টি পানির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শ করে হাউজসহ একটি গভীর নলকূপ স্থাপনের চেষ্টা করবো।

এইচই

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর