শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ঐতিহ্য ধরে রেখেছে দই-মিষ্টির মাগুরা

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৪:১৪ পিএম

শেয়ার করুন:

ঐতিহ্য ধরে রেখেছে দই-মিষ্টির মাগুরা
প্যাড়া সন্দেশ | ছবি : ঢাকা মেইল

রসনা বিলাসে মিষ্টি জাতীয় খাবার যুগ যুগ ধরে বাঙালির খাবারের পাতে ভিন্নরকম একটি স্থান করে নিয়েছে। শেষ পাতে একটু মিষ্টান্ন নিয়ে খাবারের বিভিন্ন আয়োজনকে তৃপ্ত করে আসছে বহুটা সময় ধরে। এখন তো রীতিমত অঞ্চল ভেদে বিভিন্ন প্রকার মিষ্টান্ন জাতীয় খাবার পুরো দেশজুড়ে-নিজ নিজ ঐতিহ্যে দেশ থেকে বিদেশে মিষ্টান্ন প্রেমীদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। তেমনই একটি অঞ্চল মাগুরা। খাঁটি দুধে তৈরি মাগুরার দই, রসমালাই আর প্যারা সন্দেশ গুণে ও মানে এখনো অটুট। অর্ধশত বছরেও এসব মিষ্টান্নের আবেদন এতটুকুও কমেনি কারো কাছে।

খামার পাড়ার দই, চলন্তিকার প্যাড়া, সুগন্ধার রসমালাই— খেতে বা কিনতে কেবল মাগুরা নয়, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভিড় জমান ক্রেতারা। বিয়ে কিংবা বেড়ানো, রাজনীতি অথবা সামাজিকতা সবখানেই এসব খাবার নিজগুনে বিখ্যাত। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন আসেন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য দই, প্যাড়া কিংবা রসমালাই কিনতে। সামাজিকতা রক্ষায় মাগুরার মানুষ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা তাদের আত্নীয়-স্বজনকে উপহার হিসেবে এসব পাঠানো বহু পুরনো রীতি।


বিজ্ঞাপন


দই বলতে মাগুরায় সবাই এক নামে চেনেন ঐতিহ্যমণ্ডিত খামারপাড়ার দইকে। মাগুরার শ্রীপুরের খামার পাড়ার প্রয়াত চিত্ত ঘোষের দইকেই মূলত খামারপাড়ার দই বলা হয়। চিত্ত ঘোষ বেঁচে না থাকলেও মাগুরার নতুনবাজারে চিত্ত ঘোষের ভাইয়েরা চালিযে যাচ্ছেন খামার পাড়া দধিভাণ্ডার নামে একটি দোকান। মাগুরার বিভিন্ন বিয়ে-বাড়িসহ অধিকাংশ খাবারের আয়োজনে দারুণ জনপ্রিয় খামারপাড়ার দই।

চিত্ত ঘোষের ভাই মুকুন্দ ঘোষ বলেন, গত পঞ্চাশ বছর ধরে মাগুরার সব ধরনের অনুষ্ঠানে খামারপাড়ার দই খাদ্যতালিকায় ভীষণ জনপ্রিয়। মাঝে মাঝে ডেলিভারি দিতে আমাদের হিমসিম খেতে হয়।

magura-doiপ্রয়াত তারাপদ ঘোষ প্রতিষ্ঠিত চলন্তিকা হোটেল মাগুরা শহরের আরও একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। চলন্তিকা হোটেল বিখ্যাত তার প্যাড়া সন্দেশের জন্য। চলন্তিকার প্যাড়াসন্দেশ শুধু মাগুরায় নয়, দেশের বাইরেও নিয়ে যায় মাগুরাবাসী। মাগুরায় এলে সাধারণত কেউ চলন্তিকার প্যাড়া সন্দেশ কিনতে ভোলেন না।

মাগুরা চলন্তিকার স্বত্বাধিকারী বিশ্বজিত ঘোষ বলেন, আমাদের প্যাড়া সন্দেশের কথা সবাই জানেন। বিভিন্ন জেলায় শুধু নয় অনেকেই দেশের বাইরেও নিয়ে যান এই সন্দেশ।


বিজ্ঞাপন


এদিকে মাত্র অল্প ক’দিনেই শহরের জামে মসজিদ রোডে অবস্থিত সুগন্ধা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার  খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এখানকার রসমালাই বেশ জনপ্রিয় হলেও দই এবং প্যাড়া সন্দেশের ক্রেতাও অনেক।

সুগন্ধা মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্তাধিকারী সুকান্ত ঘোষ বলেন, আমরা চেষ্টা করছি মাগুরার ঐতিহ্যবাহী মিষ্টিগুলো অভিজ্ঞ কারিগর দিয়ে তৈরি করে একই দোকানে বিক্রি করার। নতুন হিসেবে আমাদের ক্রেতার সংখ্যা অন্যান্য দোকানের তুলনায় বেশি।

শহরের কেশব মোড়ের ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, ছোটলো থেকেই দই বলতে খামারপাড়ার দইকে বুঝি। সেই সাথে চলন্তিকার প্যাড়া সন্দেশ তো তুলনাহীন। চলন্তিকার রসমালাই ভালো হলেও এখন সুগন্ধার রসমালাইয়ের নামটাই বেশি।

বর্তমানে প্রযুক্তির ছোঁয়া এসে লেগেছে দই, প্যাড়া, রসমালাই বিক্রিতে। তাই সরাসরি দোকানে বিক্রির পাশাপাশি অনেকে দোকান থেকে এসব সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন অনলাইনে। ফলে আগের থেকেও খুব দ্রুত প্রসার ঘটছে মুখরোচক এই মিষ্টান্নগুলোর।

এইচই/এএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর