শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

কক্সবাজারে পুলিশের সহায়তায় ‘টর্চার সেল’ থেকে মুক্তি পেলেন ৪ জন

জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৮ আগস্ট ২০২২, ০৭:৫৫ পিএম

শেয়ার করুন:

কক্সবাজারে পুলিশের সহায়তায় ‘টর্চার সেল’ থেকে মুক্তি পেলেন ৪ জন

কেউ এসেছিলেন মায়ের চিকিৎসা করাতে, কেউ এসেছিলেন বেড়াতে। রাত্রিযাপনের জন্য কটেজে উঠেই পড়লেন জিম্মি দশায়। কক্সবাজার শহরের একটি ‘টর্চার সেল’-এ আটকে রাখা এমন চারজনকে উদ্ধার করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। এসময় ঘটনাস্থলের আশপাশে অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ চক্রের ১১ দালাল সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে দেশীয় অস্ত্রসহ অপকর্মে ব্যবহৃত নানা উপকরণ।

উদ্ধারকৃতরা হলো, কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিককূল এলাকার ইফাজ উদ্দিন ইমন (১৭), একই এলাকার আব্দুল্লাহ আল মামুন (১৫), টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ এলাকার দীল মোহাম্মদ (১৭) ও চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার মো. ইমরান (১৯)।

>> আরও পড়ুন: কাঁঠাল গাছে গলায় ফাঁস দিল প্রেমিক, প্রেমিকা খেল তুঁতে


বিজ্ঞাপন


আটক দালালরা হল, মো. আলমগীর (৪৫), মো. সেলিম (২০), আকাশ দাস (২৩), মো. জোবায়ের (২৮), মো. মামুন (২২), নাজির হোসেন (২৮), সেকান্দর আলী (২৮), মো. সোহেল (৩০), মো. জাহাঙ্গীর আলম (৩৩), মো. জসিম (২৭) ও মো. পারভেজ (২৫)।

পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া দীল মোহাম্মদ ও ইমরান উখিয়া উপজেলার পালংখালী স্টেশনের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী। তারা রোববার সকালে কক্সবাজার বেড়াতে এসে রাত্রিযাপনের জন্য ‘শিউলি’ নামের একটি আবাসিক কটেজে অবস্থান করছিলেন। অপর দুইজন কক্সবাজার শহরে মায়ের চিকিৎসা করাতে এসে রাত্রিযাপনের জন্য ওই কটেজে ওঠেন।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, রোববার মধ্যরাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের লাইট হাউজ এলাকা সংলগ্ন আবাসিক কটেজ জোন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।

>> আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে ৯০ লাখ টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস করল বিজিবি

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, রোববার মধ্যরাতে কক্সবাজার শহরের লাইট হাউজ এলাকা সংলগ্ন আবাসিক কটেজ জোন কথিত টর্চার সেলে কয়েকজন পর্যটককে দুর্বৃত্তরা জিম্মি করে রেখেছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ট্যুরিস্ট পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। এতে সাইনবোর্ড বিহীন সন্দেহজনক ‘শিউলি’ নামের কটেজ হিসেবে পরিচিত একটি প্রতিষ্ঠানে গেলে তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। নানাভাবে তালা খুলতে বলার পরও তালা খুলে না দেওয়ায় সেই তালা ভেঙে ভেতরে প্রবে  করে দেখা যায়, সংঘবদ্ধ অপরাধীরা বিকল্প একটি পথে পালিয়ে গেছে। এসময় একটি কক্ষে জিম্মি দশা থেকে উদ্ধার করা হয় চার জনকে। একই সঙ্গে ওই কক্ষ থেকে নির্যাতন করার নানা উপকরণও জব্দ করা হয়।


বিজ্ঞাপন


উদ্ধারকৃতদের তথ্যমতে, সেখানে ৫-৬ জন ছেলে ও ৩ জন নারী ছিল। দালালের মাধ্যমে প্রলোভন দেখিয়ে পৃথকভাবে তাদের ওই কটেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রবেশ করার পর তাদের সঙ্গে থাকা নারীদের সঙ্গে নানা আপত্তিকর ছবি তুলে মোটা অংকের টাকা দাবি করা হয়। হাতিয়ে নেওয়া হয় কাছে থাকা সব টাকা পয়সা। আরও টাকার জন্য পরিবারকে জানাতে তাদের উপর নির্যাতন চালানো হয়।

>> আরও পড়ুন: রাতের আঁধারে গৃহবধূকে ‘ধর্ষণ’ করতে গিয়ে সাবেক মেম্বারের অঙ্গহানি

তিনি জানান, এরকম আরও কয়েকটি কটেজে জিম্মি করে নির্যাতনের তথ্য রয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। পরে কটেজ জোনে অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ চক্রের দালাল সদস্য ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, আবদুর রহিম নামের উখিয়ার এক ব্যক্তি এবং লোকমান নামে মহেশখালীর এক ব্যক্তির নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে শিউলী কটেজের এই টর্চার সেল। যাদের ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। আটক ১১ দালাল ছাড়াও এ চক্রে কিশোর গ্যাংয়ের শতাধিক সদস্য রয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে মাদক সরবরাহসহ নানা অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ পুলিশের কাছে রয়েছে। একটি নিরাপদ পর্যটন জোন করতে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিনিধি/এএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর