বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ফেনীর উন্নয়নের মাঝেই অমলিন থাকবেন খালেদা জিয়া

নুর উল্লাহ কায়সার, ফেনী
প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩২ পিএম

শেয়ার করুন:

ফেনীর উন্নয়নের মাঝেই অমলিন থাকবেন খালেদা জিয়া

ফেনীর মানুষ খালেদা জিয়াকে শুধু রাজনৈতিক নেত্রী হিসেবেই নয়, বরং ফেনীর মেয়ে, অভিভাবক ও গর্ব প্রেরণার প্রতীক মনে করেন। তার পৈতৃক বাড়ি ফুলগাজীর শ্রীপুর মজুমদার বাড়ি রাজনৈতিক ও সামাজিক মিলনের কেন্দ্রস্থল ছিল। বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ফেনী-১ আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে, তিনবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে জেলার সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

প্রথমবার খালেদা জিয়া সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে ফেনীর প্রধান কবি মঞ্জুর তাজিম তাকে নিয়ে এ স্লোগানটি লিখেছিলেন, ‘ফেনীর মেয়ে খালেদা, গর্ব মোদের আলাদা’। সত্যিকার অর্থে জীবনের শেষ দিনে পর্যন্ত তিনি শুধু ফেনী নয়, সারাদেশের গর্বের ধনে পরিণত হয়েছিলেন।


বিজ্ঞাপন


thumbnail_39705

সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়া সরকারের সময় ফেনী ডায়াবেটিক হাসপাতাল, ফেনী ট্রমা হাসপাতাল স্থাপন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আধুনিকায়ন ও সেবার পরিধি সম্প্রসারণ করেছেন। এর ফলে চিকিৎসা সহজলভ্য ও উন্নত হয়। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে জেলা প্রশাসন ও সরকারি অবকাঠামো উন্নয়নে জেলা হেডকোয়ার্টার ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, ফুলগাজীকে নতুন উপজেলা ঘোষণা এবং উপজেলা হেডকোয়ার্টারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়। এছাড়া উপজেলার শহরগুলোকে পৌর শহরে রূপান্তর করে প্রশাসনিক কার্যক্রম সুসংগঠিত করা হয়।

thumbnail_39708

তিনি ফেনী কম্পিউটার ইনস্টিটিউট ও ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজ স্থাপন, ফেনী সরকারি কলেজ ও ফেনী জিয়া মহিলা কলেজে অনার্স কোর্স চালু এবং বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার অবকাঠামো উন্নয়ন ও জাতীয়করণ নিশ্চিত করেছেন। এতে ফেনীর শিক্ষার মানোন্নয়ন ও নারী শিক্ষার প্রসার ঘটে। অন্যদিকে খালেদা জিয়া যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ফেনী-বিলোনিয়া রেল যোগাযোগ পূর্ণভাবে চালু করা হয় তার সরকারের আমলে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সংযোগ নিশ্চিত করা হয়। ফেনী-পরশুরাম, ফেনী-ছাগলনাইয়া ও ফেনী-নোয়াখালী সড়কসহ গ্রামীণ সড়কের উন্নয়ন করা হয়। এসব উন্নয়নের ফলে জেলার ব্যবসা, যোগাযোগ ও অর্থনীতিতে বিশেষ গতি আসে।


বিজ্ঞাপন


তিনি ছাগলনাইয়ার নিজকুঞ্জরা বিসিক শিল্পনগরী স্থাপন করেন। সোনাগাজীতে বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে শিল্প ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে জেলাকে এগিয়ে নেন। এছাড়া কৃষি ও পানি ব্যবস্থাপনায় মুহুরী ও কুহুয়া নদীর বেড়িবাঁধ নির্মাণ, মুহুরী সেচ প্রকল্পের উন্নয়ন, সোনাগাজী ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উন্নয়নে বরাদ্দ বৃদ্ধি করেন। সামাজিক ও যুব উন্নয়নের ক্ষেত্রে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবন, ফুলগাজী যুব উন্নয়ন কমপ্লেক্স এবং সার্কিট হাউজ নির্মাণ করা হয়।

thumbnail_39702

ফেনী জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট শহীদুল আলম ইমরান বলেন, খালেদা জিয়া সরকারের নেতৃত্ব ও নীতিগত সহায়তায় ফেনীতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, প্রশাসন, শিল্পায়ন, কৃষি ও নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জন করে। তার এই অবদান ফেনীর মানুষ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ভিপি বলেন, ফেনীর অগ্রগতি ও উন্নয়নে এ আপসহীন নেত্রীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। জেলাজুড়ে তার সরকারের সময়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে। আমরা তাকে কেবল নেতা নয়, ফেনীর গর্ব হিসেবে মনে রাখবো।

খালেদা জিয়ার পারিবারিক নাম খালেদা খানম পুতুল। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিন বোন এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তাঁর দাদা হাজি সালামত আলী, নানা জলপাইগুড়ির তোয়াবুর রহমান। বাবা ইস্কান্দার মজুমদার এবং মা বেগম তৈয়বা মজুমদার। দিনাজপুর শহরের মুদিপাড়ায় তার জন্ম। আদি পৈতৃক নিবাস ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের মজুমদার বাড়ি।

আরও পড়ুন

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে যশোরে বিএনপির নেতাকর্মীরা শোকে মুহ্যমান

খালেদা জিয়া পাঁচ বছর বয়সে দিনাজপুরের মিশন স্কুলে ভর্তি হন। এরপর তিনি দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬০ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। একই বছর তিনি জিয়াউর রহমানকে বিয়ে করেন। এর পর থেকে তিনি খালেদা জিয়া বা বেগম খালেদা জিয়া নামে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি স্বামীর সঙ্গে পশ্চিম পাকিস্তানে বসবাস শুরুর আগে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত দিনাজপুরের সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়াশোনা করেন। ১৯৬০ সালের আগস্টে যখন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বিয়ে হয়, তখন জিয়াউর রহমান ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন। ডিএফআইয়ের কর্মকর্তা হিসেবে তখন দিনাজপুরে কর্মরত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ফেনী-১ আসন থেকে ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হন বেগম খালেদা জিয়া। তার পৈতৃক বাড়ি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মজুমদার বাড়ি। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এই আসন থেকে খালেদা জিয়ার পক্ষে ২৯ ডিসেম্বর সোমবার মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়েছিল।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর