শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু নীলফামারীর জনজীবন

জেলা প্রতিনিধি, নীলফামারী
প্রকাশিত: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৭ এএম

শেয়ার করুন:

কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু নীলফামারীর জনজীবন
কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু নীলফামারীর জনজীবন

উত্তরের জেলা নীলফামারীতে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। কনকনে ঠান্ডায় জবুথবু নীলফামারীর জনজীবন। হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


বিজ্ঞাপন


বিষয়টি নিশ্চিত করেন সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা লোকমান হাকিম।

স্থানীয়রা জানান, সূর্যের দেখা মিলছে অনেক দেরিতে। আবার সূর্য উঠলেও কনকনে ঠান্ডা বাতাসে শীতের দাপট কমছে না। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে মাঠ-ঘাট, সড়ক ও জনবসতি। এই তীব্র শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষজন। কৃষক, রিকশাচালক, দিনমজুরসহ নিম্নআয়ের মানুষের দৈনন্দিন জীবন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। শীতের কারণে কাজের সময় কমে যাওয়ায় আয়েও টান পড়েছে। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে অসহায় হয়ে পড়েছেন অনেকে, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা। এই তীব্র শীতের কারণে শিশুদের বাড়ছে শীতজনিত রোগ। শীতের কারণে মাঠে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। অনেক কৃষক সময়মতো জমিতে যেতে পারছেন না।

নীলফামারীর ডোমারের কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, ভোরে মাঠে নামা যায় না। কুয়াশা আর ঠান্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে আসে। ফসলের কাজ ঠিকমতো করতে পারছি না, এতে ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ছে।

একই চিত্র শহরের রাস্তা গুলোতে। তীব্র শীতে যাত্রী সংকটে পড়েছেন রিকশাচালকরা। জেলার রিকশাচালক আজিমুল ইসলাম জানান, শীতের সকালে মানুষ কম বের হয়। ঠান্ডায় শরীর কাঁপে, রিকশা চালানো কষ্টকর হয়ে গেছে। আয় অর্ধেকেরও কম।


বিজ্ঞাপন


দিনমজুরদের অবস্থাও শোচনীয়। কাজ থাকলেও শীতের কারণে অনেকেই কাজে যেতে পারছেন না। দিনমজুর রফিকুল ইসলাম বলেন, কাজ না করলে খাবার জোটে না। কিন্তু এই শীতে কাজ করা খুব কষ্ট। গরম কাপড়ের অভাবও আছে।

শীত সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে ছিন্নমূল ও বয়স্ক মানুষদের ওপর। ডোমার শহরের ফুটপাতে থাকা এক বৃদ্ধ জানান, রাতে ঘুমানো যায় না। ঠান্ডায় শরীর ব্যথা করে। সাহায্য না পেলে বাঁচাই মুশকিল।”

এদিকে, শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে। স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডাজনিত জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীর চাপ বাড়ছে। চিকিৎসকদের মতে, শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।

নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. শাহিনুর রহমান বলেন, তীব্র শীতের কারণে হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও জ্বরে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ভোর ও রাতের ঠান্ডা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। প্রয়োজন ছাড়া শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডায় বের না হওয়া, গরম কাপড় ব্যবহার এবং গরম খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছি। শ্বাসকষ্ট বা জ্বর বেশি হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।

প্রতিনিধি/টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর