পটুয়াখালীর উপকূলে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ বাবা ও ছেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
সর্বশেষ, বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পরে বঙ্গোপসাগরের পাইপ বয়া এলাকায় ডুবে যাওয়া ট্রলার থেকে নিখোঁজ শামীম ও বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে একই স্থানে ১১ বছরের শিশু মৃত্যুর ভাসমান অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় জেলে ও স্বজনরা।
বিজ্ঞাপন
উদ্ধার হওয়া জেলে শাওন হাওলাদার (২৪) জানান, বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে বঙ্গোপসাগরের পাইপ বয়া (জেলেদের দেওয়া নাম) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের চরগঙ্গা বাঁধঘাট বাজার এলাকা থেকে গত রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে সিদ্দিক জোমাদ্দারের মালিকানাধীন এমভি সিদ্দিক নামের একটি ট্রলার ছয়জন জেলেকে নিয়ে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ শিকারে রওনা হয়।
টানা দুই দিন মাছ ধরার পর বুধবার রাতে ট্রলারটি পাইপ বয়া এলাকায় নোঙর করে রাখা হয়। গভীর রাতে হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া ও উত্তাল ঢেউ শুরু হলে ট্রলারের নিচের অংশে ছিদ্র হয়ে পানি ঢুকতে থাকে। একপর্যায়ে ট্রলারটি বাম দিকে কাত হয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই ছয় জেলেসহ ডুবে যায়।
দুর্ঘটনার সময় মো. সিদ্দিক জোমাদ্দার (৫৫), মো. শাওন (২৪), মো. রাব্বী (১৮) ও রাসেদ (২০) ট্রলারের ভাসমান অংশ ধরে প্রায় পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় সাগরে ভেসে থাকেন। পরে বৃহস্পতিবার ভোরে কাছাকাছি থাকা একটি স্থানীয় ট্রলার ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের জীবিত উদ্ধার করে।
বিজ্ঞাপন
পরে উদ্ধার করা জেলেদের পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাদের কুয়াকাটা হয়ে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তারা বাড়ি ফিরে যান।
এই দুর্ঘটনার পর নিখোঁজ থাকা শামীম ও তার ছেলে সিয়ামের সন্ধানে স্বজনরা সাগরে তল্লাশি চালাতে থাকেন। একপর্যায়ে বুধবার সন্ধ্যায় ডুবে যাওয়ার ট্রলারের মধ্যে থাকা শামীমের মরদেহ উদ্ধার হয়। আর বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গোপসাগরের পাইপ বয়া এলাকায় ভাসমান অবস্থায় শিশু সিয়ামও উদ্ধার করা হয়।
নিখোঁজ শামীমের বাবা ও ট্রলারের মালিক মো. সিদ্দিক জোমাদ্দার বলেন, আমার বড় ছেলে ও নাতি দুজনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তবে এ ধরনের দুর্ঘটনা আর যেন না ঘটে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র মণ্ডল জানান, নিখোঁজের বিষয়টি জানার পর মহিপুর কোস্টগার্ড ও রাঙ্গাবালী থানাকে অবহিত করা হয়েছে। তবে নৌ-পুলিশের নিজস্ব উদ্ধার সক্ষমতা সীমিত।
রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিরাজুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে জানানো হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
প্রতিনিধি/এসএস

