ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ২০২৫-২৬ আখ মাড়াই মৌসুম উদ্বোধন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করেন শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমান। তিনি ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন।
বিজ্ঞাপন
এসময় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের ইক্ষু উন্নয়ন ও গবেষণা বিভাগের পরিচালক ড. আব্দুল আলীম খান, ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চিফ অব পার্সোনেল শাহরীনা তানাজ, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজওয়ানা নাহিদ, মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আ.ন.ম জোবায়ের ও বিএনপি নেত্রী মুর্শিদা জামান উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান রশিদুল হাসান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, এবার বিভিন্ন মিল এলাকায় গিয়ে দেখেছি কৃষকদের মধ্যে খুশির আমেজ। দেশের ১৫ চিনিকলের মধ্যে ৯টি চালু আছে। বাকিগুলো আগামীতে চালু করা হবে। কাঁচামালের কোনো ঘাটতি হবে না, এর জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই করা হবে।
_20251212_191955533.jpg)
মিলের মহা-ব্যবস্থাপক (কৃষি) গৌতম কুমার মণ্ডল জানান, এবারই প্রথম ডিজিটাল ওজন যন্ত্রে মাপা হবে কৃষকদের আখ। মাপার সাথে সাথে আখের পরিমাণ ও টাকার পরিমাণ মোবাইল খুদে বার্তায় কৃষককে জানিয়ে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে মিল এলাকায় ৪২টি ডিজিটাল ওজন যন্ত্র স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কৃষকের আখের টাকা পরিশোধ করা হবে। মিলের এসব কাজ সম্পন্ন করতে করপোরেশনের হেড অফিস থেকে আসা টেকনিশিয়ান টিম কাজ করছে।
বিজ্ঞাপন
চলতি মাড়াই মৌসুমে কৃষকদের আখের মূল্য ধরা হয়েছে মণ ২৫০ টাকা। এটি সুগার মিলের ৫৯তম আখ মাড়াই মৌসুম। এ বছর ৫৬ দিনে ৮০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৪ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চিনি আহরণের আনুমানিক হার ধরা হয়ে ৫.৫০ শতাংশ।
এ আগে ২০২৪-২৫ মাড়াই ৫০ দিনে ৭০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৩ হাজার ৩৭৮ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও উৎপাদন উৎপাদন হয়েছিল ৩ হাজার ৮৬৮ মেট্রিক টন। যার মধ্যে ৯৭৪ মেট্রিক টন অবিক্রিত রয়েছে। ওই বছর চিনি আহরণের গড় ধরা হয়েছিল ৫.৪০ শতাংশ। প্রতিমণ আখের দাম ধরা হয়েছিল ২৪০ টাকা।
উল্লেখ্য, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা শহরে ১৯৬৫ সালে ৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০৭.৯৩ একর নিজস্ব জমির ওপর নেদারল্যান্ড সরকার মোবারকগঞ্জ চিনিকলটি স্থাপন করে। এরমধ্যে ২০.৬২ একর জমিতে কারখানা, ৩৮.২২ একর জমিতে কর্মকর্তা ও শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য আবাসিক কলোনি, ২৩.৯৮ একর পুকুর এবং ১০৭ একর জমিতে পরীক্ষামূলক ইক্ষু খামার। এছাড়া ১৮.১২ একর জমিতে জুড়ে রয়েছে সাবজোন অফিস ও আখ ক্রয় কেন্দ্র। প্রতিষ্ঠাকালীন মৌসুমে পরীক্ষামূলকভাবে ৬০ কর্মদিবস আখ মাড়াই চলে। লক্ষ্য পূরণ হওয়ায় ১৯৬৭-১৯৬৮ মাড়াই মৌসুম থেকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন শুরু করে। ঝিনাইদহের ৬ উপজেলা ছাড়াও যশোরের দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত মিলে আটটি জোনের আওতায় কৃষকরা আখ করে থাকেন।
প্রতিনিধি/এসএস

