চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নারী শিক্ষার্থীদের আত্মরক্ষার কৌশল শেখানো ও আত্মউন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সাত দিনব্যাপী কারাতে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছে ‘গ্রিন ভয়েস’-এর নারী ও শিশু অধিকার বিষয়ক অঙ্গসংগঠন ‘বহ্নিশিখা’।
“আত্মবিশ্বাসে আত্মরক্ষা।” প্রতিপাদ্যে গত ১ ডিসেম্বর (সোমবার) থেকে ৭ ডিসেম্বর (রোববার) পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হলের টেনিস কোর্টে অনুষ্ঠিত হয় এ কর্মশালা।
বিজ্ঞাপন

প্রশিক্ষণটি পরিচালনা করেন বহ্নিশিখার আহ্বায়ক ও চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোসা. মাহমুদা আক্তার, সদস্য সচিব ও ইতিহাস বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোছা. সানজিদা আক্তার প্রভা, সদস্য ও দর্শন বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জীবন নাহার জিবু ও দৃষ্টি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তমা রাণীসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা। সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন গ্রিন ভয়েসের বিভাগীয় সমন্বয়ক আহমেদ হানিফ এবং চবি শাখা সভাপতি অনিক সরকার।

ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার সামিয়া কারাতে ও মেন্টরিং সেশন নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, “সাত দিনের কারাতে ট্রেনিং আর পরে মেন্টরিং সেশন, সব মিলিয়ে অভিজ্ঞতাটা অসাধারণ ছিল। মেন্টরিং সেশনে নিজের স্বভাবের অনেক সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। বহ্নিশিখাকে ধন্যবাদ এমন উদ্যোগের জন্য।”
বিজ্ঞাপন
সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাহসিন জারিন ঐশী বলেন, ‘বর্তমান সমাজে আত্মরক্ষার কৌশল জানা খুব প্রয়োজন। সেই কিউরিসিটি থেকে অংশ নেওয়া কর্মশালায় এসে দেখলাম মানসিক স্বাস্থ্য, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্টসহ নানা বিষয়ে সেশন আছে। অভিজ্ঞতাটা খুবই ভালো ছিল।’

লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জবা দত্ত বলেন, “আমি প্রথমেই গ্রিন ভয়েস ও বহ্নিশিখাকে আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই। নারী উন্নয়ন নিয়ে কাজ হলেই আমার আগ্রহ থাকে। এখানে মানসিক স্বাস্থ্যকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। শারীরিক ও মানসিকভাবে নতুন অনেক কিছু শিখেছি। আশা করি ভবিষ্যতেও তারা আমাদের জন্য এমন আরও অনেক উদ্যোগ নিয়ে আসবে।”

গ্রিন ভয়েসের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বহ্নিশিখার আহ্বায়ক মোসা. মাহমুদা আক্তার বলেন, “চবিতে প্রথমবারের মতো বহ্নিশিখার যাত্রা শুরু হয়েছে। নারীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানো ও আত্মরক্ষার দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যেই সাত দিনের এই প্রশিক্ষণ শুধু শারীরিক প্রশিক্ষণ নয়, মানসিক স্বাস্থ্য ও ক্যারিয়ার বিষয়েও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।”

তিনি জানান, প্রায় ৫৭ জন নারী শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণে অংশ নেন। প্রতিদিন দুইজন নারী প্রশিক্ষকের মাধ্যমে দুই ঘণ্টার শারীরিক প্রশিক্ষণ এবং মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মশালায় একজন গাইনি ডাক্তার, একজন মনোবিদ ও একজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অংশ নেন।
উল্লেখ্য, নারী ও শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা গ্রিন ভয়েসের অঙ্গসংগঠন ‘বহ্নিশিখা’ ২০২০ সালের ১৫ জুন যাত্রা শুরু করে। “জাগো নারী, জাগো বহ্নিশিখা” প্রতিপাদ্যে সংগঠনটি নারীর আত্মনির্ভরতা, আত্মরক্ষা, মানসিক শক্তি, স্বাস্থ্য সচেতনতা ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে কাজ করছে। বর্তমানে দেশজুড়ে সংগঠনটির সদস্য সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজারেরও বেশি।
প্রতিনিধি/ এমইউ

