কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় গত রোববার গভীর রাতে ঘটল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। ছুটিতে বাড়ি এসে নিজ চাচাতো ভাইকে নৃশংসভাবে কামড়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন পুলিশের এএসআই আরিফুল ইসলাম—এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ও আহতের পরিবারের কাছ থেকে। গুরুতর আহত মোফাজ্জল হোসেন এখন পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
জানা গেছে, ঘাগড়া গ্রামের শান্ত রাত ভেঙে যায় ঠিক রাত ১১টায়। অভিযোগ অনুযায়ী, সৌদি আরবে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া মোফাজ্জলের ওপর দায়িত্বভারহীন ক্ষমতার দম্ভ নিয়ে চড়াও হন এএসআই আরিফুল। শুধু মারধর নয়—হামলার পর মোফাজ্জলের প্রবাসে যাওয়ার জন্য জমানো ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে।
বিজ্ঞাপন
অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম মুক্তিযোদ্ধা ফয়েজ উদ্দিনের বড় ছেলে এবং বর্তমানে শরীয়তপুর জেলা পুলিশে কর্মরত।
স্থানীয়দের অভিযোগ—পতিত শেখ হাসিনা সরকারের সময় মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুযোগে চাকরিতে ঢোকার পর থেকেই আরিফুল ও তার ভাই শরীফুল এলাকায় কথায়-কথায় হুমকি-ধমকি, আধিপত্য বিস্তার আর মারধরের জন্য কুখ্যাত। এমনকি ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রাও রেহাই পাননি তাদের আচরণ থেকে।
সেদিন রাতে মোফাজ্জলকে যে নির্মমতার শিকার হতে হয়েছে, তার বর্ণনা শোনাও শিউরে ওঠার মতো।
রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার সময়ও তিনি আতঙ্কে কাঁপছিলেন।
বিজ্ঞাপন
আহত মোফাজ্জলের করুণ অভিযোগ—‘চাকরিতে ঢোকার পর থেকেই আরিফরা এলাকায় আধিপত্য দেখায়। আমাকে মারার সময় সে বলে— ‘আমি পুলিশ, মারলেও আমাদের কোনো বিচার নাই।’ আমি প্রশাসনের কাছে এই হামলার বিচার চাই।’
মামলার বাদী ও মোফাজ্জলের বড় বোন সালমা আক্তারের কণ্ঠেও ক্ষোভ ও অসহায়ত্ব— ‘যে পুলিশ আমাদের নিরাপত্তা দেবে, সেই পুলিশই যদি আমাদের ওপর হামলা করে, তাহলে বিচার পাবো কোথায়? অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু সে যেভাবে ভয় দেখায়, আমরা চিন্তায় আছি, তার ডিপার্টমেন্ট কি আমলে নেবে? আমরা কি বিচার পাব? আমার ভাইয়ের ওপর হামলার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
অভিযুক্ত এএসআই আরিফুলকে ফোনে পাওয়া গেলে তিনি কথায় জড়তা নিয়ে বলেন— ‘এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না। বিষয়টি পারিবারিকভাবে সমাধান হবে।’ বলেই ফোন কেটে দেন।
এদিকে পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস. এম. আরিফ অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন— ‘একজন অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রতিনিধি/জেবি

