ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেছেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাইরে এখন আর কোনো শিক্ষার্থী নেই। কেউ রাস্তায় উত্তেজনা ছড়াতে চেষ্টা করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবার আর কোনো কথা নয়— যেই আসুক, আসার সঙ্গে সঙ্গেই সাইজ হবে। এতদিন অনেক সহ্য করেছি, আর সহ্য করা হবে না। চলমান যানবাহন ও মানুষের ভিড়ের মধ্যে লাঠিসোটা নিয়ে শোডাউন বা মারামারি— এটা কোনোভাবেই হতে দেওয়া হবে না।’
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সংঘর্ষের সূত্রপাত প্রসঙ্গে ডিসি মাসুদ জানান, আইডিয়াল কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রথমে ঢাকা কলেজের একটি বাসে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এরপরই দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সরিয়ে ক্যাম্পাসে পাঠিয়ে দেয়। ঢাকা কলেজের ছাত্ররা এখন বাইরে নেই— এটা আমরা নিশ্চিত করেছি।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও জানান, আইডিয়াল কলেজের সামনের কিছু শিক্ষার্থীও ঘটনার সময় আক্রমণাত্মক আচরণ করেন, যাতে কয়েকজন আহত হন। পুলিশের ওপরও ইট-পাটকেল ছোড়া হয়, এতে পাঁচ থেকে সাতজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এরপর তিনি নিজেও ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।
ডিসি মাসুদ বলেন, ‘ওদের রাগ-অভিমান আছে, সমস্যা আছে— সব শুনেছি। আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি যেন তারা নিরাপদে কলেজে আসতে পারে এবং নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আহত এক শিক্ষার্থীর ছবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ছবির ছেলেটি এখন আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী নয়। আগে পড়ত, এখন তেজগাঁও কলেজের ছাত্র। ঘটনাটি কয়েকদিন আগের। বিষয়টি আগে জানা ছিল না, এখন নিশ্চিত হয়েছি।’
বিজ্ঞাপন
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও পুলিশ এখনও সতর্ক অবস্থানে আছে বলে জানান রমনা বিভাগের ডিসি। তিনি বলেন, ‘এখন আর কেউ বাইরে নেই। সবকিছু সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। কেউ বাইরে এসে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আটক করা হলেও পরে তাদের পরিচয় শিক্ষার্থী হিসেবে নিশ্চিত হওয়ায় কাউকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি। আমরা তাদের রিকশায় তুলে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি।’
এর আগে গত ৯ নভেম্বর নিউমার্কেট থানার মধ্যস্থতায় ঢাকা কলেজ ও ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শান্তিচুক্তি হয়েছিল। হাতে গোলাপ, মুখে বন্ধুত্বের স্লোগান— এভাবেই দুই পক্ষ ভবিষ্যতে আর সংঘর্ষে না জড়ানোর অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি এক মাসও টেকেনি; আবারও মুখোমুখি হয়েছে দুই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
এএইচ/এফএ

