ঝালকাঠি শহরের পুরাতন কলাবাগান এলাকায় নারী উদ্যোক্তা সেলিনা বেগমের ওপর হামলা, শ্লীলতাহানি চেষ্টা, লুটপাট ও হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ছাব্বির হোসেন ও তার ভাই সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের কাজী খলিলুর রহমান মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই নারী।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে সেলিনা বেগম জানান, তার স্বামীর মৃত্যুর পর তাদের সেমাই ও মুড়ির ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন তিনি। এই সুযোগে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ওই এলাকায় ক্ষমতাধর হিসেবে পরিচিত ছাব্বির হোসেন, তার ভাই সাদ্দাম হোসেন ও তাদের সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। সেলিনার দাবি, ‘ছাব্বির আমাকে বিভিন্ন সময় অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করতো এবং কু-প্রস্তাব দিত। বিষয়টি কাউকে জানাইনি সম্মানের ভয়ে।
তিনি বলেন, গত ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে ছাব্বির হঠাৎ ঘরে ঢুকে তাকে জাপটে ধরেন। তার ডাক–চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে ছাব্বির পালিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর ছাব্বির, তার ভাই সাদ্দাম ও পরিবারের আরও কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আবার ঘরে হামলা চালায়। সেলিনার অভিযোগ, তারা আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। আমাকে রক্তাক্ত করে ঘরের আলমারি ভেঙে তছনছ করে ৮ লাখ ৯ হাজার ৭০০ টাকা, ৮ ভরি স্বর্ণালংকার, ব্যাংকের চেকবই ও ব্যবসার গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে যায়।
এই সময় প্রতিবেশী জেসমিন বেগম তাকে রক্ষা করতে গেলে তাকেও মারধর করা হয় বলে দাবি করেন তিনি।
সেলিনা জানান, ঘটনাস্থলে তার ছেলে-মেয়ে ছিলেন না। তারা ঢাকায় চাকরিরত। সুযোগ বুঝে হামলাকারীরা ঘটনা ঘটিয়েছে। পরবর্তীতে মামলায় সেলিনা, তার ছেলে-মেয়ে, জেসমিন এবং তার ছেলেকেও আসামি করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, রক্তাক্ত অবস্থায় থানায় গেলে কর্তব্যরত কর্মকর্তারা আগে চিকিৎসা নিতে বলেন। স্থানীয়রা আমাকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু হাসপাতালে থাকার সুযোগে হামলাকারীদের দেওয়া বানানো অভিযোগ থানায় আগে গ্রহণ করা হয়। পরে আমার মেয়ে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে।
সংবাদ সম্মেলনে সেলিনা অভিযোগ করেন, আসামিরা জামিনে বেরিয়ে এসে সাবেক মহিলা কাউন্সিলর সাবিনা ইয়াসমিনের মাধ্যমে মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে এবং তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। তিনি ও তার পরিবার এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানান।
সেলিনা বেগম দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেফতার, ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ন্যায়বিচারের দাবি জানান।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ঘটনার বিষয়ে পরস্পরবিরোধী দুটি মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। উভয় পক্ষের অভিযোগ যাচাই–বাছাই করে তদন্ত চলছে। কারও বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ যাচাই ছাড়া আমলে নেওয়া হবে না। তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সেলিনা বেগমের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসী কবিতা, ছেলে গোলাম কিবরিয়া বাপ্পি এবং নাতি তানহা।
প্রতিনিধি/এসএস

