অবিশ্বাস্য কিন্তু সত্যি! একজন বিভাগীয় কর্মকর্তাকে নিতে ৫ কিলোমিটার দূর থেকে চলন্ত ট্রেন ফিরিয়ে আনা হয়েছে ঠাকুরগাঁও রোড স্টেশনে। এ ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এমন ঘটনায় যাত্রীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। শেষ পর্যন্ত যাত্রীদের রোষানলে পড়ে বাধ্য হয়ে সেই ট্রেনেই উঠতে হয় ওই কর্মকর্তাকে।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও রোড রেলস্টেশনে। ট্রেনটি ছিল পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে যাওয়া পার্বতীপুরগামী কাঞ্চন সেমি আন্তঃনগর এক্সপ্রেস।
বিজ্ঞাপন
সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে বিকেল ৪টা ২৬ মিনিটে ঠাকুরগাঁও রোড রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যায় ট্রেনটি। কয়েকশো যাত্রী তখন গন্তব্যের পথে রওনা দিয়েছেন। কিন্তু প্রায় ৫ কিলোমিটার যাওয়ার পর হঠাৎ ট্রেনটি থেমে পেছন দিকে চলতে শুরু করে। এতে মুহূর্তেই যাত্রীদের মধ্যে দেখা দেয় আতঙ্ক—কেউ কেউ ভেবে বসেন ট্রেনে হয়ত কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি হয়েছে বা দুর্ঘটনা ঘটেছে।
![]()
কিন্তু কিছুক্ষণ পর ট্রেন আবার ঠাকুরগাঁও স্টেশনে ফিরে এলে সবাই হতবাক! জানা যায়, লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) আবু হেনা মোস্তফা আলম ট্রেনে উঠতে পারেননি, তাকে নিতে ট্রেন ফিরিয়ে আনা হয়েছে!
এ কথা জানাজানি হতেই যাত্রীদের মধ্যে দেখা দেয় চরম ক্ষোভ। অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন—আমরা টিকিট কেটে সময় মতো উঠেছি, এখন একজন কর্মকর্তার জন্য ট্রেন ফিরিয়ে আনা মানে যাত্রীদের সঙ্গে তামাশা!
বিজ্ঞাপন
ট্রেন ফিরে আসার পরও সেই কর্মকর্তা ‘লোকাল ট্রেন’ বলে তাতে উঠতে অস্বীকৃতি জানান। এতে যাত্রীদের ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে স্টেশন এলাকাজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। যাত্রীরা বিক্ষোভ ও স্লোগান শুরু করলে রেলওয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন।
![]()
অবশেষে জনরোষে পড়ে বাধ্য হয়ে ডিআরএম আবু হেনা মোস্তফা আলম সেই ট্রেনেই যাত্রা শুরু করেন।
ঠাকুরগাঁও রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক স্যার পরিদর্শনে এসেছিলেন। তার দিনাজপুরে যাওয়ার কথা ছিল। তবে আগে থেকে আমাদের জানানো হয়নি। পরে লালমনিরহাট অফিস থেকে ফোনে নির্দেশ আসে ট্রেন ফিরিয়ে আনতে। ট্রেন ফেরানোর পর তিনি যাত্রা করতে চাননি, কিন্তু যাত্রীদের ক্ষোভের কারণে শেষে উঠতে বাধ্য হন।
![]()
ঘটনা বিষয়ে জানতে একাধিকবার লালমনিরহাট বিভাগের রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আবু হেনা মোস্তফা আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ ঘটনায় যাত্রীদের প্রশ্ন— যাত্রীদের সময়, নিরাপত্তা আর নিয়মকানুন কি কেবল কাগজে-কলমেই? তারা অভিযোগ করেন, একজন কর্মকর্তার জন্য ট্রেন থামানো বা ফিরিয়ে আনা রেলওয়ের নিয়মবহির্ভূত ও যাত্রীদের প্রতি অবমাননাকর আচরণ।
প্রতিনিধি/এসএস

