শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

স্ত্রীর পাঠানো ডিভোর্সের কাগজ পেয়ে যুবকের আত্মহত্যা

জেলা প্রতিনিধি, শরীয়তপুর
প্রকাশিত: ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৪৪ এএম

শেয়ার করুন:

স্ত্রীর পাঠানো ডিভোর্সের কাগজ পেয়ে ফাঁস দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা
আব্দুর রহিম (২২)

শরীয়তপুরের সখিপুর থানার চরভাগা ইউনিয়নের পশ্চিম মনাই হাওলাদার কান্দি গ্রামে স্ত্রীর পাঠানো ডিভোর্সের কাগজ পেয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন আব্দুর রহিম (২২)।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে নিজ ঘরে দরজা বন্ধ করে আড়ার সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।


বিজ্ঞাপন


রহিম নড়িয়া সরকারি কলেজের অনার্সের শিক্ষার্থী এবং শাজাহান দেওয়ানের ছেলে। প্রেমের পর ভালোবাসার টানে বিয়ে করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সম্পর্কের পরিণতি হলো মৃত্যুর মধ্য দিয়ে।

পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানান, আব্দুর রহিম ও সামিয়া—একই গ্রামের তরুণ-তরুণী। দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পর আট মাস আগে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের প্রথম দিকে সবকিছুই ছিল স্বপ্নের মতো। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে কলহ বাড়তে থাকে। পারিবারিক টানাপোড়েন ও মান-অভিমান দিন দিন সম্পর্কের মাঝে দূরত্ব বাড়িয়ে দেয়। সম্প্রতি মনোমালিন্য চরমে ওঠে। সোমবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে স্ত্রী সামিয়া মোবাইল ফোনে রহিমকে ডিভোর্সের কাগজ পাঠান। হঠাৎ এই ঘটনার পর থেকেই রহিম মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরদিন মঙ্গলবার বিকেলে নিজ ঘরে দরজা বন্ধ করে আড়ার সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

তারা আরও জানান, আব্দুর রহিম ছিলেন নরম স্বভাবের, চুপচাপ ও বিনয়ী এক তরুণ। কিন্তু জীবনের কঠিন বাস্তবতা তিনি সহ্য করতে পারেননি।

রহিমের বাবা শাজাহান দেওয়ান বলেন, আমার ছেলেটা মেয়েটাকে অনেক ভালোবাসতো। কাল ডিভোর্সের কাগজ পাওয়ার পর থেকে কিছুই খায়নি। ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। অনেকক্ষণ পরে দরজা না খোলায় আমরা ভেঙে ঢুকে দেখি ও ঝুলছে। হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তার বলে, ও আর বেঁচে নেই।


বিজ্ঞাপন


স্ত্রী সামিয়া বলেন, রহিমের সঙ্গে আমার ভালোবেসে বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের পর থেকে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। সে আমাকে প্রায়ই তালাকের কথা বলতো। আমি মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে নিজেই ডিভোর্স দিই। ভাবিনি রহিম এমন ভয়ানক সিদ্ধান্ত নেবে। আমি হতবাক।

 

সখিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফয়েজ আহম্মেদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, স্বামী-স্ত্রীর কলহের জেরেই তরুণটি আত্মহত্যা করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রহিমের মৃত্যুতে গ্রামে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। বন্ধু-বান্ধব, শিক্ষক ও প্রতিবেশীরা বলছেন, রহিম ছিল মেধাবী ও বিনয়ী ছেলে। ভালোবাসা হারানোর ব্যথা সে সহ্য করতে পারেনি। আমরা সবাই শোকাহত।

প্রতিনিধি/টিবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর