ঢাকাতে মোটরসাইকেল চালিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা অহরহ ঘটলেও লালমনিরহাটের মতো ছোট জেলার রাস্তাঘাট বা প্রত্যন্ত এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ছিল না বললেই চলে। কিন্তু গত ৭ মাস ধরে লালমনিরহাট সদর উপজেলা এবং এর আশপাশের বেশ কয়েক যায়গায় মোটরসাইকেলযোগে ছিনতাই হয়েছে। সব যায়গায় একই অভিযোগ- কালো পালসার মোটরসাইকেল ও কালো হেলমেট পরিহিত ব্যক্তি এ কাজ করছেন। সব সময় মহিলাদের টার্গেট করে এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ আসছিল, নারীদের টার্গেট করে বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই হচ্ছে। আর সেই ছিনতাই হচ্ছে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে।
গত বুধবার ৩ (সেপ্টেম্বর) আদিতমারী উপজেলার জামুরটারী এলাকায় একজন নারী অটোরিকশা থেকে নেমে মহাসড়ক পার হওয়ার সময় একজন পালসার ব্রান্ডের কালো রঙের মোটরসাইকেল আরোহী কালো হেলমেট পরিহিত অবস্থায় তার সামনে এসে দাঁড়ায়। কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই নারীর হাতে থাকা ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত মোটরসাইকেল চালিয়ে পালিয়ে যায় সেই ছিনতাইকারী। এ ঘটনায় ওইদিনই একটি মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। সেই মামলার সূত্র ধরে লালমনিরহাটের গোয়েন্দা পুলিশ এর আগে থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো তদন্তের ধারাবাহিকতায় বুধবারের ঘটনাটি নিয়ে পুনরায় ছায়া তদন্তে নামে। বিভিন্ন সূত্র আর প্রযুক্তির সহায়তায় অবশেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে মহেন্দ্রনগর এলাকা থেকে মাসুদ রানাকে আটক করে ডিবি পুলিশ।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
আটক মাসুদ রানা আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি ইউনিয়নের চড়িতাবাড়ি গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে।
পুলিশ বলছে, আটক মাসুদ রানা একাই বিভিন্ন স্থানে মোটরসাইকেল চালিয়ে ছিনতাই করতেন। লালমনিরহাট সদর ও আদিতমারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা যেমন, দুড়াকুটি বাজার, মহেন্দ্রনগর, এয়ারপোর্ট রোড, হাড়িভাঙ্গা এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ছিনতাই করেছেন তিনি। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ডিবি পুলিশের অপর একটি দল ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত তিনটি মোটরসাইকেল, দু’টি হেলমেট, চারটি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন সময়ে ছিনতাইয়ে ব্যবহার করা কিছু পোষাক, নগদ ২৮ হাজার টাকা, একটি ঘড়ি উদ্ধার করে।
লালমনিরহাট গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক সাদ আহমেদ বলেন, গত কয়েক মাস ধরে জেলার বিভিন্ন স্থানে ছিনতাইয়ের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গিয়েছিল। পুলিশের কাছে আসা ছিনতাইয়ের অভিযোগ আমরা দীর্ঘদিন থেকে পর্যালোচনা করছিলাম। অবশেষে আলোচিত সেই ছিনতাইকারী, যে বিশেষভাবে নারীদের ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনতাই করে আসছিল সেই মাসুদ রানাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। তাকে দু’টি ছিনতাইয়ের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। এছাড়া আরও চারটি ছিনতাইয়ের সঙ্গে সে সম্পৃক্ত বলে আমাদের কাছে স্বীকার করেছে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে হওয়া অন্যান্য ছিনতাইগুলোতে তার সম্পৃক্ততা আছে কি তা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
প্রতিনিধি/এসএস

