মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটি ইউনিয়ন উজানের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। অতি বৃষ্টির কারণে ৮৫৫ হেক্টর জমির ধান ও ১৮ হেক্টর সবজির খেত নিমজ্জিত হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শালিখা উপজেলার এই চারটি ইউনিয়নের সঙ্গে ফটকি নদীর সংযোগ থাকার কারণে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা নদীর পানির কারণে এইসব অঞ্চল প্লাবিত হয়। নদীর সঙ্গে বিলের কোনো সংযোগ বাঁধ না থাকার কারণে হালকা বৃষ্টিপাত এবং উজানের পানিতে এসব অঞ্চল তলিয়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
এলাকাবাসী জানায়, বিশেষত শালিখা উপজেলার তালখড়ি ইউনিয়ন, ধনেশ্বরগাতি ইউনিয়ন, আড়পাড়া ইউনিয়ন ও শতখালী ইউনিয়নে ফসলের জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। পাকা রাস্তাঘাট , কমপক্ষে ৫০টি গ্রামের কৃষকদের বোরো ধান সম্পূর্ণরূপে পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেকেরই বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।
ধনেশ্বরগাতী ইউনিয়নের সেওজগাতি গ্রামের সুশীল অধিকারী জানান, উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে ৪০ থেকে ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
তালখড়ি ইউনিয়নের শামসুল মোল্লা জানান, তার তিন বিঘা জমির ধান তলিয়ে গেছে। আশপাশে বসতবাড়ি ও মাঠ-ঘাট পানিতে থই থই করছে।
বিজ্ঞাপন
খিলগাতির কৃষক আশুতোষ জানান, তার ফসলি জমি ও অন্যান্য চাষাবাদ জমি সবই পানির নিচে। তাদের পাঁচ পরিবারের কুড়ি বিঘা জমি সবই তলিয়ে গেছে।
![]()
ধনেশ্বরগাতির ইসমাইল হোসেন বলেন, আমাদের মাঠ পুরোপুরি পানিতে থই থই করছে, উজান থেকে নেমে আসা পানি ও অতিবৃষ্টি কারণে মাঠকে মাঠ ধান শাক-সবজি তলিয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসনাত জানান, শালিখা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে এই চারটি ইউনিয়ন সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। বাকি সীমাখালি ইউনিয়ন, খালিখা ইউনিয়ন ও বুনাগাতি ইউনিয়নে কৃষকদের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। আনুমানিক ১৫০ হেক্টর জমির ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বিনা মহাপরিচালক ১০০০ কেজি ধান বীজ দিয়েছে যা আমরা ২০০ জন কৃষকের মধ্যে বিতরণের ব্যবস্থা করেছি। পানিবন্দি কৃষকদের মধ্যে ১৮৫ জন কৃষককে ৫ কেজি করে আমন ধানের বীজ এবং পলিথিন ধান বীজ তলা তৈরির জন্য দেওয়া হয়েছে। ৬৫ জন ক্ষতিগ্রস্ত সবজি চাষিকে চাল, ডাল, তেল, লবণ ও অন্যান্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। কিছু জায়গায় আমাদের কৃষকরা সেচ মেশিন দিয়ে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন করে চলেছে বিগত পাঁচ দিন। কৃষকদের মধ্যে ধানের বীজের ব্যবস্থা করলে পুনরায় চারা তৈরি করে ধান চাষ করা যাবে।
তিনি বলেন, নদীর সঙ্গে বিলের সংযোগ বাঁধ নির্মাণ করলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে বলে আমি উচ্চ মহলে অবহিত করেছি।
প্রতিনিধি/এসএস

